নিজস্ব প্রতিবেদক:‘২০২১ সালের মধ্যে কানাডা থেকে পাঁচটি প্লেন আসবে’ বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। গতকাল মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে পর্যটনের প্রসারে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় প্রকাশিত ট্রাভেল ম্যাগাজিন ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’-এর মোড়ক উšে§াচন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় কানাডার রাষ্ট্রদূত আমাদের সঙ্গে দেখা করে আগামী বছরের জুনের মধ্যে তিনটি ও পরে আরও দুটি উড়োজাহাজ দিতে চেয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে আমরা অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। দেশের পর্যটন খাত বিশ্বের সামনে যথাযথভাবে তুলে ধরার এখনই উপযুক্ত সময়। পর্যটনে আমাদের সম্ভাবনা রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, এটা সবাই জানে। কিন্তু ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমাদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। ফলে পর্যটন খাতে একটি প্রভাব পড়েছে। আমরা প্লেন নিয়ে কাজ করেছি, এর সফলতার ইঙ্গিতও পেয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্রসৈকত, ম্যানগ্রোভ বন, বান্দরবানের পাহাড়ি এলাকা, ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা আহসান মঞ্জিল, লালবাগ কেল্লা, সোনারগাঁ, পানাম নগর প্রভৃতি পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে। আমরা এই জিনিসগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারিনি। এজন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছি। তারা পর্যটন নিয়ে মহাপরিকল্পনা করবে। পর্যটন মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ চলমান। পর্যটন মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সমন্বিত ও পরিকল্পিত পর্যটন উন্নয়ন নিশ্চিত করা হবে। এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ পর্যটনের নতুন যুগে প্রবেশ করবে।’
মাহবুব আলী বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে উন্নত দেশের মতো ডবল ডেকার পর্যটন বাসের মাধ্যমে একদিনের মধ্যে ঢাকা ও এর আশপাশের পর্যটন এলাকাগুলো ঘুরে দেখার ব্যবস্থা করব। অচিরেই এরকম চারটি বাসের মাধ্যমে ঢাকা ও এর আশপাশের পর্যটন গন্তব্যে বিশেষ ট্যুর পরিচালনা করা হবে।’
রাডার সিস্টেম উন্নত করার কোনো পরিকল্পনা আছে কিনাÑজানতে চাইলে পর্যটন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘রাডার সিস্টেম আরও উন্নত করার জন্য পরিকল্পনা নিয়েছি। আমরা জি টু জির মাধ্যমে থেলাস থেকে রাডার নিয়েছি। কেবিনেট ও অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত কমিটিতে অনুমোদন দেওয়া হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক মানের রাডার হয়ে গেলে সেন্টমার্টিনসহ সুন্দরবনের কিছু অংশ এখন রাডারের আওতার বাইরে রয়েছে সেগুলোও আওতাভুক্ত হবে, এটা নিয়ে কাজ হচ্ছে।’
তিনি বলেন, কক্সবাজার পর্যটক শহর; তাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিকমানের করা হচ্ছে। কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে ১২ হাজার ফুটে উন্নত করা হচ্ছে। সেখানে হোটেল-মোটেল আন্তর্জাতিক মানের রয়েছে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য যেসব সুযোগ-সুবিধা থাকা প্রয়োজন আমরা অব্যাহত রাখব।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মহিবুল হক বলেন, ‘আমরা এ মুহূর্তে মুজিববর্ষ উদযাপনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছি। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপনের কাজ শুরু করা হচ্ছে। যাতে দেশি-বিদেশি প্রতিটি যাত্রী বাংলাদেশ পা রাখা মাত্র এটি অনুধাবন করতে পারে, এ দেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আতিকুল হক এবং পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান রাম চন্দ্র দাস উপস্থিত ছিলেন।