নিজস্ব প্রতিবেদক:‘নভেল করোনাভাইরাসের কারণে দেশের মেগা প্রকল্পের কাজে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না’ বলে মনে করছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিসিআই) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিসিসিসিআই’র সভাপতি গাজী গোলাম মোর্তজা উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত জানান, ‘চলমান পরিস্থিতে চীন-বাংলাদেশের বাণিজ্যে তেমন কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়নি। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় চীনের সক্ষমতা রয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। এটির প্রভাব কমে আসছে। আশা করছি, খুব শিগগিরই এটি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। চীনসহ বিশ্ববাসীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শিগগরিই মানবিকতার জয় হবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘পদ্মা সেতুসহ মেগা প্রকল্পের সঙ্গে যেসব চীনা নাগরিক কর্মরত রয়েছেন, তার ১০ ভাগের এক ভাগ এখন চীনে অবস্থান করছেন। এটি খুবই কম, এক্ষেত্রে প্রকল্পের কাজের তেমন কোনো সমস্যা হবে না।’
‘তৈরি পোশাকশিল্পের সিংহভাগ কাঁচামাল আসে চীন থেকে। এছাড়া গত দুই মাসে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য কমে গেছে। এ অবস্থায় করোনাভাইরাস দীর্ঘদিন থাকলে ব্যবসা-বাণিজ্যের কী হবে’Ñএমন প্রশ্নের উত্তরে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘চীনের হুবেই প্রদেশের বাসিন্দারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই প্রদেশে তৈরি পোশাকের কাঁচামাল তৈরি হয় না। তাছাড়া করোনাভাইরাস মানুষের মাধ্যমে ছড়ায়, পণ্যের মাধ্যমে নয়। তাই আশা করছি, সমস্যা হবে না।’ যদি কেউ করোনাভাইরাসকে ইস্যু করে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য অন্য দেশে সরিয়ে নিতে চায়, তাহলে সেটি ‘স্টুপিড’ সিদ্ধান্ত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বন্ধুরাষ্ট্র চীনের বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো রকম গুজব বা অতিরঞ্জিত তথ্যে বিভ্রান্ত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বিসিসিসিআই সভাপতি গাজী গোলাম মোর্তজা বলেন, ‘ভাইরাসে চীনের নাগরিক বেশি আক্রান্ত হলেও এটি শুধু একক সমস্যা নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জরুরি অবস্থা জারি করেছে। ফলে সমস্যাটি এখন বৈশ্বিক। তাই এর ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে পৃথিবীর সব দেশকেই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখার উদ্যোগ নিতে হবে।’
বিসিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে কর্মরত চীনা নাগরিকদের প্রতি ইতিবাচক ও বন্ধুত্বপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখতে হবে। একইভাবে চীন থেকে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের পর্যবেক্ষণকাল শেষে স্বাভাবিক জীবনযাপন নিশ্চিত করতে পরিবার ও সমাজের সবাইকে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিসিসিসিআই’র সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মৃধা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মামুন মৃধাসহ চীন ও বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন।
