নিজস্ব প্রতিবেদক: উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) জন্য প্রায় কোটি টাকা মূল্যের পাজেরো স্পোর্টস কিউ এক্স জিপ গাড়ি কিনছে সরকার। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০টি গাড়ি কেনার জন্য নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে কমিটির বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবসহ মোট পাঁচটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের জন্য ৫০টি জিপ গাড়ি কেনার একটি প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এসব গাড়ি কেনা হবে।’
গাড়ির দামের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী কিছু না বললেও বৈঠকে উপস্থাপিত প্রস্তাবে বলা হয়, প্রতিটি গাড়ি কিনতে ব্যয় হবে প্রায় ৯৪ লাখ টাকা। এতে আরও বলা হয়, সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর ২০০৬-০৭ অর্থবছর থেকে উপজেলা নির্বাহী আফসারদের সরকারি ও দাপ্তরিক কাজে ব্যবহারের জন্য জিপ গাড়ি ক্রয় করে বরাদ্দ দিয়ে আসছে।
এতে বলা হয়, পুরোনো জিপগুলোর আয়ুষ্কাল শেষ হওয়ায় তা মেরামত করে প্রশাসনিক ও দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনায় গতিশীলতা ব্যাহত হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিস্থাপক হিসেবে ৫০টি জিপ গাড়ি উš§ুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সময়সাপেক্ষ। তাই রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের জন্য ৫০টি পাজেরো স্পোর্টস কিউ এক্স জিপ গাড়ি সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনা হবে। ট্যাক্স ও ভ্যাটসহ প্রতিটি গাড়ির দাম পড়বে ৯৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে ৫০টির মূল্য দাঁড়াবে ৪৭ কোটি টাকা।
বৈঠকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় এলইডি সড়কবাতি সরবরাহ ও স্থাপনে একটি প্রস্তাবও নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এতে ব্যয় হবে ৩৬৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা।’
বৈঠকে জরুরি প্রয়োজনে পাঁচ বছরে ১৫ লাখ পার্সোনালাইজড ডুয়েল ইন্টারফেস পলিকার্বনেট মোটর ড্রাইভিং লাইসেন্স ক্রয়ের প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় হবে প্রায় ১৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। মহেশখালী, মাতারবাড়ী এবং বাঁশখালী এলাকায় নির্মিতব্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য একটি ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপনের প্রস্তাবও বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়।
তিনি আরও জানান, বৈঠকে চট্টগ্রামে রেলের পরিত্যক্ত জমিতে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় ৫০০ শয্যার হাসপাতাল ও ১০০ শয্যার মেডিকেল কলেজ স্থাপনে একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণে ব্যয় হবে ৪৮৬ কোটি টাকা। ছয় একর জায়গার মধ্যে নতুন এ হাসপাতালটি নির্মাণ করা হবে।
বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।