ক্রীড়া ডেস্ক: টানা তিনবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। লম্বা এ সময়ের মধ্যে দেশের ফুটবল উন্নয়নে অনেক স্বপ্ন দেখিয়েছেন কাজী সালাউদ্দিন। কিন্তু বাস্তবায়ন সামান্যই করতে পেরেছেন তিনি। যে কারণে তাকে বাফুফের সর্বোচ্চ পর্যায়ের চেয়ারে আর দেখতে চান না সংস্থাটির সহসভাপতি বাদল রায়। এবার বাফুফে নির্বাচনে প্রয়োজন হলে সভাপতি পদে সালাউদ্দিনের বিপক্ষে লড়তে চান এক সময়ের সেরা এ তারকা। গতকাল এমন ঘোষণাই দিয়েছেন তিনি।
কদিন আগেই তরফদার মো. রুহুল আমিন জানিয়ে দেন, বাফুফে সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন না। যে কারণে অনেকেই ধারণা করেছিলেন, আগামী এপ্রিলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাজী মো. সালাউদ্দিন জয়ী হবেন। তবে গতকাল বাদল রায় সবাইকে অবাক করে দিয়ে জানিয়েছেন, প্রয়োজনে তিনি লড়বেন নির্বাচনে। তবুও সালাউদ্দিনকে আর ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেবেন না, ‘কেউ যদি সভাপতি পদে না দাঁড়ান, তাহলে আমিই দাঁড়াব।’
দেড় বছর আগেই মস্তিষ্কে সফল অস্ত্রোপচার শেষে সুস্থ হয়ে ফের ফুটবলে মনোযোগ দেন বাদল। সে সময় থেকে অনেকবারই সালাউদ্দিনকে তিনি ফুটবল উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা দেন। কিন্তু সেগুলো আমলেই নেননি বাফুফের বর্তমান সভাপতি। তাই অনেকটা রেগে গিয়েই এবার সভাপতি পদে নির্বাচন করতে চাইছেন সাবেক এ ফুটবলার, এ বিষয় তিনি যেমনটি বলেছেন, ‘আমি নতুন জীবন নিয়ে এসেছি। এ অবস্থায় ফুটবলের উন্নয়নে কাজ করার চেষ্টা করব। ভালো-খারাপ সব সময়ই থাকে। সাফ ফুটবলে তার প্রমাণও আছে। প্রতিবাদ করতেই আমার জš§। ফুটবলের খারাপ কিছু আমার সহ্য হয় না। কী পেলাম কাজে ফিরতে চাইলাম। ৩৮০ উপজেলায় হান্টিং করলাম। পরিকল্পনা নিলাম। বহুবার বসতে বলেছি সালাউদ্দিন ভাইকে। একাডেমি আমার প্রস্তাব ছিল। তৈরিও করেছিলাম। দুঃখ লাগে, সেটা হারালাম। সিলেটে অনূর্ধ্ব-১৬ দল চ্যাম্পিয়ন হলো। সবাই পরে হারিয়ে গেল। কাজী সালাউদ্দিনের সাংগঠনিক দক্ষতা একেবারেই নেই। তিনি শুধু চেয়ারটি উপভোগ করছেন।’
এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে বাফুফে সভাপতি পদে নির্বাচন না করার ঘোষণা দেন রুহুল আমিন। তার এমন সিদ্ধান্তে হতাশ হয়েছেন বাদল রায়, ‘তরফদার সাহেব এলেন। তিনি শেখ কামালকে স্মরণ করলেন, টুর্নামেন্ট করলাম। সালাউদ্দিন সাহেবকে কখনও শেখ কামালের নাম নিতে শুনিনি। তিনি নাকি কামালের বন্ধু! তরফদারকে সমর্থন করি এ কারণে যে, তিনি এগিয়ে এসেছেন, অর্থ দিলেন, তাকেই তো সমর্থন করব। নাকি যিনি ধ্বংস করেছেনÑতাকে করব তরফদারের সিদ্ধান্তে আমি প্রস্তুত ছিলাম না। ফুটবল তো মরে গেছে, কবর দেওয়া বাকি। তিনি বসিয়ে দিলেন তরফদারকে। চাপ তো আমিও দিতে পারি। আমি এখনও ফিট কাজের জন্য। চেয়েছি কাজ করতে, কিন্তু পারিনি।’
বেশ আগে থেকেই দেশের ফুটবলে সংকট শুরু হয়েছে। দিন দিন যা আরও বাড়ছে। এ অবস্থা থেকে ফুটবলকে বাঁচাতে অনেকেই বাদল রায়কে সামনে আসতে বলছেন। গতকাল ব্যাপারটি তিনি নিজেই বলেছেন, ‘ফুটবলের সংকট চলছে, সবাই বলছে আমাকে সামনে আসতে। সালাউদ্দিন সাহেব চাপ দিয়ে তরফদারকে সরিয়েছেন। তিন ঘণ্টার মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করলেন। এটি দুঃখজনক। মহিকে (মহিউদ্দিন মহি) যেভাবে বলেছেন, তাতে পরিষ্কারÑতার টার্গেটটা কী’
ফুটবল উন্নয়নে নতুন নেতৃত্ব চান বাদল রায়। এজন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি, ‘তাকে (সালাউদ্দিন) সময় দেওয়া যাবে না। সবার মতো আমিও চাই নতুন নেতৃত্ব আসুক। আসুন, সবাই মিলে একজনকে নিয়ে আসি। আশা করি কেউ না কেউ দাঁড়াবে। সভাপতি পদে নতুন কেউ প্রার্থী না হলে আমি নিজেই প্রার্থী হব।’
