নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের কারাগারগুলোয় বন্দিদের ৩০ শতাংশই মাদক মামলার আসামি। আর মাদকাসক্ত বন্দি আছেন চার হাজার ১৬ জন। গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ তথ্য জানায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বৈঠক সূত্র জানায়, চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশের কারাগারগুলোতে মাদক মামলায় বন্দি আছেন ২৬ হাজার ৬৭৮ জন, যা মোট বন্দির ৩০ শতাংশ। এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন জাতীয় সংসদে জানান, বর্তমানে কারাগারগুলোতে বন্দি ধারণক্ষমতা ৪০ হাজার ৯৪৪। বিপরীতে কারাবন্দির সংখ্যা ৮৮ হাজার ৮৪ জন।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ সব সংস্থা ২০১৯ সালে এক লাখ ৭১ হাজার ৭৫২ মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে এক লাখ ৩০ হাজার ৬৮১টি মামলা দায়ের করেছে। ইয়াবা প্রতিরোধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে শক্তিশালী করা, বিশ্বমানের ইনটেরোগেশন ইউনিট স্থাপন, ক্রিমিনাল ডেটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করা, উন্নতমানের গোয়েন্দা যন্ত্রপাতি ক্রয়, মোবাইল ট্র্যাকার স্থাপন, মাদক শনাক্তকরণ যন্ত্রপাতি ক্রয় ও ডিজিটাল ফরেনসিক ইনভেস্টিগেশন ল্যাব স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে আরও বলা হয়, মিয়ানমারের ইয়াবা পাচারকারীরা বাংলাদেশকে একটি রুট হিসেবে ব্যবহার করছে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে তিনটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে। আগামী ১৩ মার্চ চতুর্থ বৈঠকের জন্য মিয়ানমারকে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে।
বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য নূর মোহাম্মদ বলেন, বৈঠকে মাদক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং আরও কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তা আলোচনা হয়েছে।
সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন জোরদার করা, সচেতনতা বাড়ানো এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে মাদকের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া কারাগারে মাদকাসক্তদের আলাদা রাখার সুপারিশ করা হয়। কমিটি কলেজে ভর্তির আগে এবং সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে নিয়োগে আগে ডোপ টেস্ট করার সুপারিশ করে। এ ছাড়া আত্মসমর্পণকারী চরমপন্থিদের সার্বিক কার্যক্রম পুলিশের নজরদারিতে রাখা এবং প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেওয়ার সুপারিশ করে সংসদীয় কমিটি।
কমিটির সভাপতি শামসুল হকের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, হাবিবর রহমান, সামছুল আলম, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, পীর ফজলুর রহমান, নূর মোহাম্মদ ও সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ বৈঠকে অংশ নেন।