নিজস্ব প্রতিবেদক: সহস্রাব্দ উন্নয়ন অভীষ্ট (এমডিজি) অর্জনে বাংলাদেশ ভালো করেছে। গত বছর ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জনেও এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। এটি করতে হলে সরকারি-বেসরকারি খাত ও উন্নয়ন সহযোগীদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
এসডিজির অভীষ্ট অর্জনের লক্ষ্যে প্রণীত মন্ত্রণালয়ভিত্তিক হ্যান্ডবুক প্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল এ হ্যান্ডবুক প্রকাশ করা হয়। এতে এসডিজির অভীষ্টগুলো সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, ইউএনডিপির বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জি, ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান ও রাশেদা কে চৌধুরীসহ একাধিক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব ও সিনিয়র সচিবরা বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলম।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এমডিজির (২০০০-২০১৫) বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল হয়েছে। এখন ২০৩০ সাল মেয়াদি এসডিজির ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের রোল মডেল হওয়ার সুযোগ আছে। এজন্য সবার আগে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য নির্মূল করতে হবে। তিনি বলেন, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় জিইডির গাইডলাইনে এসডিজি অর্জনে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে যে লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে, তা অর্জনে সমন্বি^ত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, এনজিও, সুশীল সমাজ ও উন্নয়ন সহযোগীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, এসডিজির অনেক আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করেছেন। এখন এসডিজি অর্জনে একযোগে কাজ করার বিষয়টি সুসমন্বিত হতে হবে। তবে এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্তের অপ্রতুলতাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি দেখা গেছে মালয়েশিয়ার শ্রম খাতে ব্যবস্থাপকদের ৩৭ শতাংশই বাংলাদেশি। অর্থাৎ বাংলাদেশ বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এগিয়ে যাচ্ছে। দক্ষ ও প্রশিক্ষিত মানবসম্পদ গড়ে তুলতে পারলে ২০৩০ সালের আগে এসডিজি অর্জিত হবে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, এসডিজির কতগুলো লক্ষ্য অর্জনে ব্যাপক অর্থসংস্থান প্রয়োজন। এজন্য বাংলাদেশকে নিজস্ব সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার ও বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। তিনি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসডিজির চারটি লক্ষ্য-দারিদ্র্য দূরীকরণ, ক্ষুধা নির্মূল, কর্মসংস্থান ও প্রবৃদ্ধি বাড়ানো এবং বৈষম্য কমানোর বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন।
হ্যান্ডবুক থেকে জানা যায়, এসডিজির প্রধান অভীষ্ট দারিদ্র্য বিমোচন নিশ্চিত করতে প্রধান দায়িত্ব পালন করবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এর সঙ্গে সহযোগী হিসেবে কাজ করবে জিইডি। আর সর্বস্তরে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কার্যক্রম ভালোভাবে পরিচালনার জন্য জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল (এনএসএসএস) প্রণয়ন করা হয়েছে।
Add Comment