বাজারের মন্দাবস্থায় সেন্ট্রাল ফার্মার মতো নিম্নমানের কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েই যাচ্ছে। মাত্র নগদ এক শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়া কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে এবং কবে উৎপাদন শুরু হবে কোম্পানির পরিচালকরা জানেন না। আবার শেয়ারের দর কেন বাড়ছে সেটাও বলতে পারছেন না। অন্যদিকে স্কয়ার ফার্মা ৪২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। কিন্তু কোম্পানিটির শেয়ারদর কমে যাচ্ছে। এতেই বোঝা যাচ্ছে বাজারে একটি গোষ্ঠী কারসাজি করছে। সেন্ট্রাল ফার্মার শেয়ারদর কারসাজির সুস্পষ্ট প্রমাণ। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। মাহমুদ হোসেনের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন বিডিনিউজ ২৪ ডট কমের প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদক আবদুর রহিম হারমাছি এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সাবেক প্রেসিডেন্ট সুলতান মাহমুদ।
আবদুর রহিম হারমাছি বলেন, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে পুঁজিবাজার ধসের পর বাজার গতিশীল করার জন্য প্রধানমন্ত্রী কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। ফলে বাজার কিছুদিন ইতিবাচক ছিল। গত দুই সপ্তাহ ধরে আবার নেতিবাচক অবস্থায় বাজার। প্রশ্ন হচ্ছে, বাজারে এত সুবিধা দেওয়ার পরও কেন বাজারে এ অবস্থা। আসলে কিছু কিছুু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল ঠিকই কিন্তু সত্যিকার অর্থে বিনিয়োগকারীর আস্থা অর্জনের তেমন কিছু করেনি। সে কারণেই বিনিয়োগকারী আস্থা পাচ্ছে না। আবার বাজারের মন্দা অবস্থায় সেন্ট্রাল ফার্মার মতো নি¤œমানের কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েই যাচ্ছে। মাত্র নগদ এক শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। কোম্পানিটির এখন উৎপাদন বন্ধ রয়েছে এবং কবে এর উৎপাদন শুরু হবে কোম্পানির পরিচালকরা বলতে পারছেন না। আবার কোম্পানির শেয়ারের দর কেন বাড়ছে, সেটাও বলতে পারছেন না তারা। এ কথা বলেছেন কোম্পানির পরিচালকরা। আর স্কয়ার ফার্মা ৪২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। কিন্তু কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়ছে না। অথচ এক শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়া সেন্ট্রাল ফার্মার শেয়ারদর বেড়েই যাচ্ছে। এতে বোঝা যাচ্ছে বাজারে একটি গোষ্ঠী কারসাজি করছেন। সেন্ট্রাল ফার্মার শেয়ারদর কারসাজির সুস্পষ্ট প্রমাণ।
সুলতান মাহমুদ বলেন, একটি স্থিতিশীল পুঁজিবাজার গঠনে সরকার এ পর্যন্ত নীতি ও আর্থিক সহায়তাসহ আরও অনেক সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু বাজার কোনোভাবেই ঘুরে দাঁড়াচ্ছে না। বাজারে এখন এক ধরনের কারসাজি হচ্ছে। নি¤œমানের শেয়ারদর কারসাজি করে বাড়ানো হচ্ছে। যার কোনো অস্তিত্ব নেই, উৎপাদন নেই। এটি কারা বাড়াছে সহজেই ধরা যায়। কারণ আগের চেয়ে এখন শেয়ার কেনাবেচার ক্ষেত্রে অনেক আধুনিকায়ন করা হয়েছে। অর্থাৎ শেয়ারটি কে কিনছেন বা কে বিক্রি করছেন তার সব তথ্যই সহজে বের করা যাবে। শোনা যাচ্ছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) যারা পরিচালনায় রয়েছেন, তাদের মধ্যে থেকেই কয়েকজন ব্যক্তি এ কারসাজিতে জড়িত রয়েছেন। তবে বিষয়টি কতটুকু সত্য সেটাই প্রশ্ন। যদি বিষয়টি সত্য হয়ে থাকে তবে ডিএসইর ক্ষতিয়ে দেখা উচিত। কারণ বাজারে এমনিতেই নেতিবাচক অবস্থায় রয়েছে। বিনিয়োগকারী কোনো ভরসা পাচ্ছেন না। এরপরও যদি বাজারসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা শেয়ার কারসাজিতে জড়িত থাকেন তাহলে বাজার কি অবস্থা হবেÑএটাই এখন গভীর চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শুধু পুঁজিবাজার নয়। সব ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন সংকটের মুখে। আর এ সংকট একদিনে তৈরি হয়নি। দীর্ঘদিন ধরেই আর্থিক খাতগুলোতে এ অবস্থা বিরাজ করছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্তারা হাজার কোটি টাকা নিয়ে বিদেশে পালিয়ে যাচ্ছেন।
শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ