নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বিনিয়োগকারীদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে সিমেন্ট খাতের কোম্পানি লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ সমাপ্ত হিসাববছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে কোম্পানিটি। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে এক টাকা ৫০ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা ৯৫ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে তিন টাকা ৫২ পয়সা। ঘোষিত লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের সম্মতিক্রমে অনুমোদনের জন্য আগামী ৭ মে সকাল সাড়ে ১০টায় বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১ এপ্রিল।
২০১৯ সালে কোম্পানিটির মোট রাজস্ব ছিল ১৭ হাজার ৮৪০ মিলিয়ন টাকা, যা পূর্ববর্তী বছরের চেয়ে এক হাজার ২০৮ মিলিয়ন টাকা বেশি। কস্ট অপটিমাইজেশনের ফলে, কর পূর্ববর্র্তী মুনাফা প্রবৃদ্ধি হয়েছে শতকরা ৪২ ভাগ। করপরবর্তী কোম্পানিটির মুনাফা দাড়িয়েছে এক হাজার ৭৩৭ মিলিয়ন টাকা যা আগের বছরের চেয়ে শতকরা ৫৬ ভাগ বেশি। শেয়ার প্রতি আয় বেড়ে হয়েছে এক টাকা ৫০ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ৯৬ পয়সা। সামগ্রিক আর্থিক প্রতিবেদন সম্পর্কে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী রাজেশ সুরানা বলেন, ‘পুরো সিমেন্ট খাতের জন্যই ২০১৯ সাল অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। কাঁচা মালের মূল্য বৃদ্ধি এবং অতিরিক্ত কর আরোপ সিমেন্ট ব্যবসায় প্রভাব ফেলেছে। সব প্রতিবন্ধকতার পরও লাফার্জহোলসিমের সামগ্রিক পারফরম্যান্স অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ছিল। পরিচালন দক্ষতা বৃদ্ধি, বাণিজ্যিক উদ্ভাবন এবং কস্ট অপটিমাইজেশনের ক্ষেত্রে আমাদের গৃহীত পদক্ষেপগুলো এই অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যহত রেখে আমাদের বিনিয়োগকারীদের ভালো ফলাফল উপহার দিতে আমরা বদ্ধপরিকর।’
এদিকে গতকাল ডিএসইতে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের শেয়ারদর এক দশমিক ৮৫ শতাংশ বা ৮০ পয়সা কমে প্রতিটি সর্বশেষ ৪২ টাকা ৫০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ৪২ টাকা ৩০ পয়সা। দিনজুড়ে ৩২ লাখ ছয় হাজার ৮৭১টি শেয়ার মোট দুই হাজার ৮১৮ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ১৩ কোটি ৮৬ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৪২ টাকা থেকে ৪৪ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হয়। গত এক বছরে শেয়ারদর ৩০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ৫১ টাকা ৬০ পয়সায় ওঠানামা করে।
এর আগে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরে ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৯৬ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা ৪১ পয়সা। এর আগে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য কোম্পানিটি ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে, যা তার আগের বছরের সমান। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটি ইপিএস করেছে ৬৯ পয়সা ও এনএভি ১৩ টাকা ১৫ পয়সা। এটি আগের বছর একই সময় ছিল যথাক্রমে এক টাকা ৯২ পয়সা ও ১৩ টাকা ২৪ পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে ৮০ কোটি ৫৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা, যা আগের বছর ছিল ২২২ কোটি ৬৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
২০০৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটি। এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন এক হাজার ১৬১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। কোম্পানির রিজার্ভের পরিমাণ ৩৯৬ কোটি ৪৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির মোট ১১৬ কোটি ১৩ লাখ ৭৩ হাজার ৫০০টি শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের কাছে ৬৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর ১৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারী এক শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে বাকি ১৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।