প্রতিনিধি, হিলি: আট হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পেয়েছেন হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা। আগামীকাল ১৫ মার্চ থেকে দেশে এসব পেঁয়াজ আসা শুরু হবে। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর ২৫ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি চেয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রে আবেদন করেন হিলির পেঁয়াজ আমদানিকারকরা। এর মধ্যে আট হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হলো।
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক মোবারক হোসেন জানান, ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। ২ মার্চ এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে তারা। এরপর বন্দরের ১০/১২ জন আমদানিকারক ২৫ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির জন্য ইমপোর্ট পারমিট চেয়ে আবেদন করেন। এর আগেও অনেক বন্দরের আমদানিকারক আবেদন করেছিলেন।
সম্প্রতি আগের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দেড় হাজার টনসহ বন্দরের পাঁচজন আমদানিকারকের আট হাজার টনের মতো পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছেন উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র। তবে মার্চে যারা আবেদন করেছিলেন তাদের কোনো অনুমোদন দেয়নি। আগামী ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হবে।
হিলির উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের রোগতত্ত্ববিধ মাহামুদুল হাসান মুসা বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির জন্য আমদানিকারকরা অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছিলেন। তাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে কি না বা দেওয়া হবে কি নাÑএখন পর্যন্ত তার কাছে এমন কোনো তথ্য নেই। তবে কোনো আমদানিকারক অনুমতি পেলে বা তারা যদি পেঁয়াজ আমদানি করেন তাহলে আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর সেসব পণ্য ছাড় দেওয়া হবে। অনুমতি ঠিক থাকলে পণ্য পরীক্ষা করে ছেড়ে দেওয়া হবে।
এর আগে ভারত সরকার নিজেদের বাজার সামাল দিতে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজের রপ্তানিমূল্য টনপ্রতি ৮৫০ ডলার বেঁধে দেয়। ওইদিনই এ দেশে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ১৫ টাকার মতো বেড়ে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা হয়।
এরপর ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। আর তখন থেকেই দেশে পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। একসময় দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ২৫০ টাকায় উন্নীত হয়।
এদিকে ভারত গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেয়, যা কার্যকর হবে আগামী রোববার। এ ঘোষণার পর থেকেই দেশে দাম কমতে থাকে। অবশ্য এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। তারা বলছেন, এখন নতুন মৌসুমের হালি পেঁয়াজ (সংরক্ষণ করা যায়) উঠতে শুরু করেছে। এই সময়ে দেশে ভারতীয় পেঁয়াজ আসলে দাম একেবারেই পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
এদিকে পুরান ঢাকার পাইকারি মোকাম শ্যামবাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৩০ টাকার আশপাশে বিক্রি হয় বলে জানান সেখানকার ব্যবসায়ী আবদুল মাজেদ। তিনি বলেন, দেশের কৃষককে সুরক্ষা দিতে হলে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানিতে কর বসানো উচিত।