প্রক্টার অ্যান্ড গ্যাম্বল

২০০৯ সাল থেকে পেশাভিত্তিক সেবায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান প্রাইস ওয়াটারহাউজকুপারস (পিডব্লিউসি) বিশ্ব প্রতিযোগিতায় লিপ্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে বাজার মূলধন হিসেবে সেরা ১০০টির তালিকা তৈরি করে আসছে। জরিপে স্পষ্টভাবে কিছু নির্দিষ্ট কোম্পানি, রাষ্ট্র ও খাতের প্রবণতা এবং উন্নয়ন চিহ্নিত করেছে লন্ডনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি। তার ভিত্তিতে শেয়ার বিজ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো ধারাবাহিক আয়োজন। আজ থাকছে যুক্তরাজ্যের কোম্পানি প্রক্টার অ্যান্ড গ্যাম্বলের কথা

মিজানুর রহমান শেলী: উইলিয়াম প্রক্টার ছিলেন মোমবাতি প্রস্তুতকারী, আর জেমস গ্যাম্বল সাবান বানাতেন। দুজনের জন্ম স্থান যুক্তরাজ্যে। তারা সিনসিয়ানিতিতে প্রবাস জীবনে ছিলেন। ওখানেই তাদের পরিচয়। কেননা সেখানে তারা দুজন দুই বোনকে বিয়ে করেছিলেন। এরপর শ্বশুরের মধ্যস্থতায় তারা দুজন যৌথ ব্যবসায় আত্মনিয়োগ করেন। তারপর তাদের কোম্পানির নাম হয় প্রক্টার অ্যান্ড গ্যাম্বল। প্রক্টার অ্যান্ড গ্যাম্বল কোম্পানি বিশ্বব্যাপী পিঅ্যান্ডজি নামে পরিচিত। সালটা ছিল ১৮৩৭-এর ৩১ অক্টোবর। এরপর ১৮৫৮-৫৯ সালে তারা এক মিলিয়ন পাউন্ড বিক্রি করতে সক্ষম হন। এরপর আমেরিকার সিভিল ওয়ারের সময় ইউনিয়ন আর্মি ও এ কোম্পানির মধ্যে সাবান এবং মোমবাতি সরবরাহের জন্য চুক্তি হয়। দেখা গেল, এর ফলে মিলিটারিরা টিঅ্যান্ডজি কোম্পানিকে চিনলো এবং একই সঙ্গে সারা দেশে পরিচিতি পেলো।

১৮৮০ সালে তারা নতুন পণ্য বাজারে আনে। আইভরি নামের এ সাবানটি ছিল দামি। এরপর কোম্পানি দেশের বিভিন্ন এলাকায় কারখানা স্থাপন শুরু করে। ১৯১১ সালে কোম্পানি উদ্ভিজ্জ তেলে তৈরি সাবান বাজারজাত করে। ১৯২০-৩০-এ তারা রেডিওতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানগুলো তখন ‘সোপ অপেরা’ নামে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এভাবেই এ কোম্পানি সামনে এগিয়ে যায়।

এটি বর্তমানে আমেরিকান বহুজাতিক ভোগ্যপণ্য কোম্পানি। যুক্তরাষ্ট্রের ওহিয়ো রাজ্যের ডাউনটাউন চিনচিনাতিতে এর হেডকোয়ার্টার। উইলিয়াম প্রক্টার ও জেমস গ্যাম্বল এ কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠা করেন। কোম্পানিটি যুক্তরাষ্ট্রের হলেও প্রতিষ্ঠাতা দুজনই যুক্তরাজ্যের সন্তান। ক্লিনিং এজেন্ট ও পারসোনাল কেয়ারজাতীয় পণ্য তারা উৎপাদন করে। তবে প্রথম দিকে তাদের পণ্য ছিল প্রিঙ্গলস। এ পণ্যটি তারা কিলগ কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেয়। অবশ্য এখন এদের পণ্যতালিকায় খাদ্য ও পানীয় যুক্ত হয়েছে।

পিডব্লিউসির গবেষণায় দেখা গেছে, ২০০৯ সালে কোম্পানিটির বাজার মূলধন ছিল ১৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তাতে মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশনের হিসাবে সেরা ১০০ কোম্পানির মধ্যে প্রক্টার অ্যান্ড গ্যাম্বল দশম স্থানে অবস্থান করে। বিগত বছরগুলোর প্রেক্ষিতে দেখা গেছে, এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। এমনকি ২০১৬ সালের হিসাবে তাদের মার্কেট ক্যাপ দাঁড়ায় ২২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ফলে তাদের র‌্যাংকিং পাঁচ ধাপ নিচে নেমে ১৫তে ঠাঁই পেয়েছে।

২০১৪ সালের নথিতে সাক্ষ্য দেয়, সে সময় তারা ৮৩.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিক্রি করে। তারা তাদের কোম্পানি থেকে ১০০ ব্র্যান্ডকে বাদ দিয়ে বাকি ৬৫টি ব্র্যান্ডকে আরও বেশি গুরুত্বের সঙ্গে সামনে এগিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেয় ২০১৪ সালের ১ আগস্ট। কেননা এই ৬৫টি ব্র্যান্ড তাদের মোট মুনাফায় ৯৫ শতাংশ অবদান রাখে। ২০১৫ সালে দায়িত্বে থাকা কোম্পানির চেয়ারম্যান, সিইও ও সভাপতি এজি লেফলি বলেছিলেন, সামনের দিনে এই পিঅ্যান্ডজি আরও বেশি সরল হবে। অনেক বেশি কম জটিলতার পথ বেছে  নেবে। যাতে করে কোম্পানিটিকে আরও সহজে ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা করা যায়।

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০