নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে গতকাল সপ্তাহের প্রথম দিনে নেতিবাচক গতিতে লেনদেন হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেশিরভাগ কোম্পানির দরপতন হয়। সে সঙ্গে সব সূচকের পতন হয়। অবশেষে সার্কিট ব্রেকারের নতুন নিয়মে বড় পতনের হাত থেকে রক্ষা পেল পুঁজিবাজার। গতকাল ডিএসইতে তিন ঘণ্টায় মাত্র ১৪৬ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। লেনদেনের শুরুতে ডিএসইএক্স সূচকের পতন হয়। বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত টানা পতনের পর শেয়ার কেনার চাপ সামান্য বাড়লেও শেষ পর্যন্ত ১৪ পয়েন্ট নেতিবাচক ছিল। বাকি দুই সূচকেরও পতন হয়। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিপরীত চিত্র দেখা গেছে। সূচক ও লেনদেন বেড়েছে সিএসইতে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৭ শতাংশ কমে তিন হাজার ৯৬০ দশমিক ১৭ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক দুই দশমিক ৭৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৩০ শতাংশ কমে ৯১৬ দশমিক ৬৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। অন্যদিকে ডিএস৩০ সূচক চার দশমিক ২১ পয়েন্ট বা দশমিক ৩১ শতাংশ কমে এক হাজার ৩২১ দশমিক ৫৯ পয়েন্টে স্থির হয়।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয় ১৪৫ কোটি ৮৩ লাখ ২৭ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪৯ কোটি ১২ লাখ ১৬ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এদিন চার কোটি ৭৭ লাখ ২৮ হাজার ৫১২ শেয়ার ২৭ হাজার ৩২৯ বার হাতবদল হয়। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ১০ হাজার ২৩০ কোটি ৬৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকায়।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে মুন্নু সিরামিক। কোম্পানিটির ১৭ কোটি ৯ লাখ ২৮ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। শেয়ারটির দর ১০ টাকা ৫০ পয়সা বেড়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা স্কয়ার ফার্মার চার কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে দুই টাকা ১০ পয়সা। জেএমআই সিরিঞ্জের তিন কোটি পাঁচ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ১০ টাকা ৩০ পয়সা। এর পরের অবস্থানগুলোয় থাকা ব্যাংক এশিয়ার দুই কোটি ৮১ লাখ টাকার, আজিজ পাইপসের দুই কোটি ৭৯ লাখ টাকার, মুন্নু জুট স্টাফলার্সের এক কোটি ৯৯ লাখ টাকার, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের এক কোটি ৯৩ লাখ টাকার, কে অ্যান্ড কিউ’র এক কোটি ৮৫ লাখ টাকার, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এক কোটি ৮৩ লাখ টাকার ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের এক কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
১৭ দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়ে দর বৃদ্ধির শীর্ষে ছিল এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের দর সাড়ে ১২ শতাংশ, আজিজ পাইপসের ৯ দশমিক ৯১ শতাংশ, এসিআই ফরমুলারের ৯ দশমিক ২২ শতাংশ, পিএইচপি ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের সাত দশমিক ৬৯ শতাংশ, মুন্নু সিরামিকের এক দশমিক ৬১ শতাংশ, ফাস ফাইন্যান্সের চার দশমিক ৮৭ শতাংশ, এসিআই লিমিটেডের চার দশমিক ৭৩ শতাংশ, কে অ্যান্ড কিউ’র চার দশমিক ৪৭ শতাংশ ও প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের দর চার দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে ৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ দর কমে পতনের শীর্ষে উঠে আসে বিএসআরএম লিমিটেড। এপেক্স স্পিনিংয়ের দর ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ, উত্তরা ফাইন্যান্সের আট দশমিক ৯৫ শতাংশ, ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের আট দশমিক ৯২ শতাংশ, খান ব্রাদার্স পিপির আট দশমিক ৮২ শতাংশ, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের আট দশমিক ৮০ শতাংশ, তোসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজের আট দশমিক ৬৯ শতাংশ, প্যাসিফিক ডেনিমসের আট দশমিক ৬০ শতাংশ, বিডি ওয়েল্ডিংয়ের আট দশমিক ৩৮ শতাংশ, জিকিউ বলপেনের দর আট দশমিক ২১ শতাংশ কমেছে।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএসসিএক্স ৩১ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৬ শতাংশ বেড়ে ছয় হাজার ৭৭৭ দশমিক ৬৯ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫২ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৭ শতাংশ বেড়ে ১১ হাজার ১৮৭ দশমিক ৪৩ পয়েন্টে অবস্থান করে। সিএসইতে ২০৫ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়েছে। দর বেড়েছে ৪৪টির; বাকিগুলোর দর অপরিবর্তিত ছিল। কোনো কোম্পানি দরপতনে ছিল না। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে পাঁচ কোটি ৫৫ লাখ ৯৫০ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল এক কোটি সাত লাখ ৪৭ হাজার ৪৩৮ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল স্কয়ার ফার্মা। কোম্পানিটির এক কোটি এক লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। মুন্নু সিরামিকের ৩০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এরপর বিবিএস কেব্লসের ২৬ লাখ টাকার, অ্যাকচিভ ফাইনের ২১ লাখ, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ১৭ লাখ, বেক্সিমকোর ১৬ লাখ, এনবিএলের ১২ লাখ, সি পার্ল রিসোর্টের ১২ লাখ, গ্রামীণফোনের ১২ লাখ, ফার কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের ১২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।