নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সরকার গণ পরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এ নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পোল্ট্রি, দুগ্ধ, প্রাণি ও প্রাণিজাত পণ্য পরিবহনকারী গাড়ি চলাচল নিয়ে এ শিল্প সংশ্লিষ্টদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়। তবে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, পোল্ট্রি, দুগ্ধ প্রাণিজাত পণ্য পরিবহনকারী গাড়ি চলাচল নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে। বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার সাধারন ছুটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে পোল্ট্রি পণ্য বহনকারী গাড়ি চলাচলে বিধি-নিষেধ আরোপ হওয়ার সমূহ সম্ভাবনায় শিল্প সংশ্লিষ্টদের মাঝে যে শংকা তৈরি হয়েছিল তা কার্যকরভাবে সমাধা হয়েছে। গত ২৪ মার্চ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে অনুষ্ঠিত এক সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে পোল্ট্রি খামারি ও উদ্যোক্তাদের মাঝে স্বস্তি নেমে আসে এবং গত ২৫ মার্চ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে তা চুড়ান্ত রূপ পায়। পোল্ট্রি শিল্পের কেন্দ্রীয় সংগঠন বিপিআইসিসি থেকে বলা হয়, গত ২৩ মার্চ সাধারন ছুটি ঘোষণার পর থেকেই পোল্ট্রি শিল্পে এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আলোচনা শুরু হয় এবং পোল্ট্রির ডিম, মুরগি, একদিন বয়সী বাচ্চা, ফিড, ঔষধ ইত্যাদি বহনকারি গাড়ি সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা বা লকডাউনের বাইরে রাখতে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ শুরু হয়।
চট্টগ্রামে অবস্থিত দেশের একমাত্র পিআরটিসি ল্যাব খোলা রাখার বিষয়ে বিপিআইসিসি’র সভাপতিসহ পোল্ট্রি নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে বিগত কয়েকদিনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, যুগ্ম-সচিব, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং ভেটিরিনারি মেডিসিন অনুষদের সাথে আলোচনা হয়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে পোল্ট্রিবাহী গাড়ি এবং ল্যাব চালু রাখার বিষয়ে ২৪ মার্চ সকালেই প্রাণিসম্পদ অফিসে এ বিষয়ক পত্র প্রেরণ করে বিপিআইসিসি। ই-মেইলের মাধ্যমে চিঠি পাঠানো হয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব এবং অতিরিক্ত সচিবের কাছে। ঐ একই দিনে ফিড ইন্ডাষ্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ফিআব), ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বিএবি) এবং ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকেও চিঠি দেয়া হয়। বিপিআইসিসি থেকে পাঠানো পত্রকে আমলে নিয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর পত্রে উল্লিখিত যুক্তিসমূহকে যৌক্তিক বিবেচনা করে এবং এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রণালয়ে প্রেরিত পত্রে উল্লেখ করা হয়-‘প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ কেন্দ্রীয় কাউন্সিল এর সাথে একমত পোষণ করছে এবং পোল্ট্রি, ডিম, একদিন বয়সী মুরগির বাচ্চা, হাঁস-মুরগি-গবাদিপশুর খাদ্য, মাংস, দুগ্ধজাত পণ্য, অন্যান্য প্রাণি ও প্রাণিজাত পণ্য এবং কৃত্রিম প্রজনন সংক্রান্ত যাবতীয় সরঞ্জামাদি পরিবহন কার্যক্রম সচল রাখার নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।’
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এ চিঠিকে আমলে নিয়ে পরের দিন ২৫ মার্চ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে আরও একটি চিঠি ইস্যু করা হয় এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। সেই পত্রে মাছ, মাছের পোনা ও মাছের খাদ্য বহনকারী গাড়িকেও অন্তর্ভূক্ত করা হয়।
এ বিষয়ে বিপিআইসিসি’র সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, যত দ্রুততার সাথে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছে সেজন্য আমরা কৃতজ্ঞ। বিগত সময়ে এ ধরনের সংকটকালীন সময়ে যেভাবে গাড়ির সামনে ব্যানার ঝুলিয়ে পোল্ট্রির গাড়ি চলাচল করেছে সেভাবে ব্যানার লাগানোর ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেন- পিআরটিসি ল্যাব বন্ধ থাকায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য খালাস বন্ধ হয়ে গেছে। ল্যাব খোলা রাখার বিষয়ে গত কয়েকদিনে যুগ্ম-সচিব, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা হয়েছে এবং আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
###
