ইসমাইল আলী
নভেল করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) ছড়িয়ে পড়া রোধে সরকার ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল লকডাউন ঘোষণা করেছে। কাজ বন্ধ, তাই আয়ও বন্ধ। আর এতে সবচেয়ে কষ্টে নিম্ন আয়ের মানুষেরা, যারা মূলত দিন আনে দিন খায়। বাজারে খাবার আছে, কিন্তু পকেটে পয়সা না থাকায় তাদের অবস্থা শোচনীয়। রাষ্ট্রের সহায়তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারেনি। আর এ পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষদের এগিয়ে আসা দরকার।
লকডাউন পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষদের সাহায্যার্থে ২টি প্রস্তাবনা এখানে তুলে ধরছি।
১. ধনীরা যাকাতের একটা অংশ নিয়ে এগিয়ে আসুন। রোজার এক মাসও বাকি নাই। তাই যাকাতের আনুমানিক একটা অংশ দিয়ে এখনই গরীর-অসহায়দের খাবার কিনে দেন। আর বাকিটা হিসেব করে রোজার সময় দিয়েন। তবে দয়া করে এবার শাড়ি-লুঙ্গি নিয়ে লোক দেখানো লম্বা লাইন কইরেন না। খাবার-ই কিনে দিয়েন। কারণ যাকাতের প্রথম দুই খাত হল অনাহারীদের (এতিম, মিসকিন) খাবারের ব্যবস্থা করা।
বলে রাখা ভালো- এখানে ‘এতিম’ বলতে যার বাসায় একদিনের খাবার আছে, দ্বিতীয় দিনের নাই- এমন শ্রেণির মানুষদের বুঝিয়েছে। আর ‘মিসকিন’ হল যার এক বেলার খাবার আছে, আরেক বেলার নাই। এদের চাইলে খাবার কিনে দিতে পারেন বা নগদ অর্থ দিয়েও সহায়তা করতে পারেন।
২. যাদের যাকাত দেওয়ার জন্য নিসাব পরিমাণ (সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপা বা সমপরিমাণ অর্থ বা অন্য সম্পদ বা ব্যবসারিক পণ্য) সম্পদ নাই। তবে নিজেরা খেয়ে পড়ে চলতে পারেন, তারা অন্তত ১০ বা ২০ জনের এককেটা গ্রুপ বা দল করতে পারেন। হতে পারে তা সহকর্মীদের বা বন্ধু অথবা প্রতিবেশী বা এলাকাবাসীদের নিয়ে। প্রত্যেকে সামর্থ্য অনুযায়ী ৫০০, ১০০০ বা ২০০০ টাকা করে দিয়ে একটা তহবিল করতে পারেন। মোটামুটি ১৫ হাজার টাকার তহবিল হলে অন্তত ২০টি পরিবারকে সহায়তা করা সম্ভব।
অন্তত ১০ কেজি চাল ৫০০ টাকা, ১ কেজি ডাল ৬০ টাকা, ১ লিটার তেল ১১০ টাকা, আলু ২ কেজি ৬০ টাকায়, পেঁয়াজ ১ কেজি ৪০ টাকা দরে কিনে দিতে পারেন। এতে আর কিছু না হোক ভাত, ডাল, আলু ভর্তা খেয়ে কিছু মানুষ বাঁচবে। আসুন সবাই যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসি। জয় হোক মানবতার।
গণমাধ্যম কর্মী
ismail_eco@yahoo.com