নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকটের মধ্যে নির্ধারিত তারিখে ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ না করলে তার কাছ থেকে জরিমানা বা বাড়তি চার্জ নিতে পারবে না ব্যাংক। বিশেষ করে ১৫ মার্চ থেকে। এরই মধ্যে কোনো ব্যাংক জরিমানা, বিলম্ব ফি আদায় করে থাকলে তা ফেরত বা সমন্বয় করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সাথে আগামী মে মাস পর্যন্ত বিলম্ব বিল পরিশোধের জরিমানা বা বিলম্ব ফি আদায় না করার জন্যও সকল তফসিলি ব্যাংকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
### ১৫ মার্চের পর আদায় করা চার্জ বা বিলম্ব ফি ফেরত-সমন্বয় করার নির্দেশ
বাংলাদেশ ব্যাংক শনিবার (৪ এপ্রিল) এ-সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে পাঠিয়েছে। করোনা ভাইরাস প্রার্দুভাবের ফলে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার, যা এখনো বলবৎ রয়েছে। এ মহামারির কারণে অর্থনীতির চাকা প্রায় স্থবির। ফলে অনেক ক্রেডিট কার্ড গ্রাহক সময় মতো বিল পরিশোধ করতে পারেনি। এর ফলে ব্যাংক গ্রাহক থেকে বিলম্ব ফি বা জরিমানা আদায় করে আসছে বলে অভিযোগ উঠে। এরই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সার্কুলার জারি করেছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, গত ১৫ মার্চের পর কোনো ব্যাংক চার্জ আরোপ করে থাকলে গ্রাহককে তা ফেরত দিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নির্দেশনা চলতি বছরের ১৫ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ এর ৪৫ ধারা অনুযায়ী এ নির্দেশনা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নির্দেশনায় বলা হয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশসহ বাংলাদেশে নভেল করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট কভিড-১৯ রোগের বিস্তার ও সংক্রমণের কারণ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ব্যবসা বাণিজ্যসহ অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সীমিত হয়ে পড়েছে। ফলে জনসাধারণের আয় বর্ধনকারী কর্মকান্ডের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দেশে মার্চ মাসের শুরুতে কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়। পরবর্তীতে এ রোগের সংক্রমণ ও বিস্তার রোধে সরকার কর্তৃক ঘোষিত সাধারণ ছুটির আওতায় জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কভিড-১৯ রোগের সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশিতকল্পে সাধারণ ছুটিকালীন গণপরিবহন চলাচল সীমিত রাখতে এবং জনসাধারণকে জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত বাইরে যাওয়া হতে বিরত থাকার সরকার কর্তৃক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে জরুরি ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সীমিত আকারে ব্যাংক চালু রাখা হয়েছে।
আরো বলা হয়, অনেক ক্ষেত্রেই ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকের পক্ষে প্রদেয় বিল নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকের আর্থিক সামর্থ্য ও চলমান অন্যান্য সীমাবদ্ধতার বিষয়টি বিবেচনায় যে সকল ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকের বকেয়া বিল পরিশোধের শেষ তারিখ ১৫ মার্চ বা তারপরে সে সকল ক্ষেত্রে গ্রাহক কর্তৃক প্রদেয় বিল নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ না করার ক্ষেত্রে কোন বিলম্ব ফি, চার্জ, দন্ড সুদ বা অন্য কোন চার্জ আদায় না করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হলো। তাছাড়া ১৫ মার্চ হতে ইতোমধ্যে কোন ক্রেডিট কার্ড বিল বিলম্বে পরিশোধজনিত কারণে বিলম্ব ফি, চার্জ, দন্ড সুদ, চার্জ আদায় করা হয়ে থাকলে তা সংশ্লিষ্ট ক্রেডিট কার্ড গ্রাহককে ফেরত প্রদান বা পরবর্তী সময়ে প্রদেয় বিলের সাথে সমন্বয় করতে হবে। এ নির্দেশনা ১৫ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
ব্যাংকাররা জানান, প্রতিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে বিল পরিশোধের নির্দিষ্ট একটি সময়সীমা নির্ধারিত আছে। কোনো গ্রাহক ওই সময়ের মধ্যে ন্যূনতম বিল পরিশোধ না করলে তাকে নির্দিষ্ট অঙ্কের জরিমানা দিতে হয়। এ ছাড়া অপরিশোধিত বিলের ওপর নির্ধারিত হারে সুদ আরোপ করা হয়। এটি না করতেই এ নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
###