করোনার প্রভাব

দারিদ্র্য, পুষ্টিহীনতা, শিক্ষায় ঝরেপড়া বাড়বে; খুঁজতে হবে নতুন শ্রমবাজার

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

এক. দরকার হবে নতুন খানা ও শ্রমশক্তি জরিপও

করোনা, ডেঙ্গু, নিউমোনিয়া এবং জশ্বাগকা (জ্বর-শ্বাসকষ্ট-সর্দি-গলাব্যাথা-কাশি) রোগব্যাধি ইত্যাদির কারণে পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিসহ অন্যদের চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে গেলে সঞ্চয় কমবে; ঋণ বাড়াবে। একইসঙ্গে উপার্জনক্ষম ব্যক্তি কর্মক্ষমতা হ্রাস পেলে অথবা তঁাঁদের শ্রমঘন্টা অপচয়ের সাথে সাথে বাংলাদেশের সাধারণ দারিদ্র্য (২০.৫%) এবং অতিদারিদ্র্যের (১০.৫%) এই সংখ্যাগুলোর ঋণাত্মক পরিবর্তন হয়ে যেতে বাধ্য।

অর্থাৎ, সুনির্দিষ্টভাবে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের (এসডিজি) লক্ষ্য অর্জন থেকে বাংলাদেশ দূরে সরে যাবে। ঠিক কতোটা দূওে সওে যাবে, তা আমরা জানি না। বিষয়টি নির্ভর করে করোনার বিস্তার ও প্রস্তুতির ওপর। নব্বইয়ের পর থেকে শিল্প, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও সামাজিক সুরক্ষা খাত বিস্তৃত করার মাধ্যমে বাংলাদেশে দারিদ্র্য ও অতিদারিদ্র্য ধারাবাহিকভাবে কমে আসছিল। পাশাপাশি কিছু পরিসংখ্যানগত ম্যানুপুলেশান করেও দারিদ্র্য হ্রাসের হারকে ভালো দেখানোর চেষ্টা ছিল।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১৬ সালের আয় ও ব্যয় খানা জরিপ (এইসআইইএস) এবং দারিদ্র্য মানচিত্র প্রতিবেদনে দেশের উচ্চ প্রবৃদ্ধি স্বত্বেও উত্তরের পাঁচ জেলায় গরিবের সংখ্যা বাড়তে দেখা গেছে। অর্থাৎ, জাতীয় প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয় বাড়লেও দারিদ্র্য বেড়েছে রংপুরসহ উত্তরবঙ্গেও জেলাগুলোয়।

দেশে সবচেয়ে গরিব মানুষ এখন কুড়িগ্রামে, যেখানে প্রতি ১০০ জনের ৭১ জনই গরিব। এরপরের অবস্থান দিনাজপুরের। সেখানে দারিদ্র্যসীমার নিচে আছে ৬৪ শতাংশ মানুষ। অর্থাৎ, উত্তরের সঙ্গে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের আয়বৈষম্য প্রকট হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দারিদ্র্য বৃদ্ধি পাওয়া জেলাগুলো কৃষির ওপর একচেটিয়া নির্ভরশীল। চাষাবাদে ও ফসল উৎপাদনে কৃষকদেও যে পরিমাণ খরচ হয়, কৃষিপণ্যেও প্রকৃত দাম সে তুলনায় অতি নগন্য। পাশাপাশি শিল্পহীনতা, বৈষম্যপূর্ণ বাজেট বরাদ্দ ও অটেকসই ক্ষুদ্র ঋণের জালে আটকা পড়ে এই জেলাগুলো দারিদ্র্যের চক্র ভাঙতে তো পারছেই না, বরং দারিদ্র্য ক্রমেই বাড়ছে।

পিপিআরসি ও বিআইজিডির যৌথ গবেষণায় উঠে এসেছে, করোনা পরিস্থিতিতে শহরাঞ্চলে কর্মজীবী মানুষের আয় কমেছে ৮০ শতাংশ। গ্রামে এটা ৭৯ শতাংশ। আর নতুন সৃষ্ট দরিদ্রশ্রেণির ৭১ শতাংশ আয় কমে গেছে। ব্র্যাকের জরিপে উঠে এসেছে, করোনায় চরম দারিদ্র্য বেড়েছে ৬০ শতাংশ।

অনেক সময় একটা ভিত্তিমান সংখ্যাকে প্রবৃদ্ধি কিংবা হ্রাসের হার দিয়ে গুণন (ফ্যাক্টরাইজ) করে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও জনমিতির বিভিন্ন সূচকের পরিসংখ্যান বের করা হয়, তাই একটা মহামারির পরে এই সংখ্যাগুলোর একই ধরনের ডিরাইভেশান সঠিক ফল দিবে না।

অর্থাৎ, করোনা, ডেঙ্গু, নিউমোনিয়া এবং জশ্বাগকা রোগব্যাধির প্রাদুর্ভাব পরবর্তী সময়ে দেশের মানুষের ক্যালরি গ্রহণ, চিকিৎসা ব্যয়, পরিবার বা খানাভিত্তিক আয় এবং কর্মসংস্থানের হিসাব বের করার জন্য নতুন জরিপ লাগবে। অর্থাৎ, স্পষ্টভাবে নতুন করে আয়-ব্যয়-খানা জরিপ এবং শ্রমশক্তি জরিপ করতে হবে।

একই সঙ্গে ভবিষ্যতে চিকিৎসা খাতের মৌলিক প্রস্তুতির জন্য স্যাম্পল ভাইরাল সমীক্ষাকে হালনাগাদ করতে হবে। একটা মহামারি যে, কত ধরনের স্বল্প মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমস্যা নিয়ে আসে, তা অকল্পনীয়।

দুই. পুষ্টিহীনতা বাড়বে

খাদ্য সংকটে সরকার ও মহানুভব নাগরিক এগিয়ে এসে যে সাহায্য দিবে তা নিতান্তই ন্যূনতম ক্যালরি (চাল ডাল)। কিন্তু এতে বাদ পড়বে অতি গুরুত্বপূর্ণ অনেক পুষ্টি উপাদান। ফলে তিন বা ছয় মাসের পুষ্টিহীনতার পওে দেশের প্রান্তিক ও ভাসমান অর্থনৈতিক শ্রেণিগুলোর পরিবারের সন্তানদের ব্যাপক পুষ্টিহীনতা (ম্যালনিউট্রিশান) দেখা দিতে পারে।

জনস্বাস্থ্য ব্যয়ে দীর্ঘমেয়াদে কি কি ম্যাসিভ সমস্যা তৈরি হয়, সেটা আমরা জানি না। বিষয়টি গবেষণার দাবি রাখে। আমি আশা করবো, সরকার এ কাজে দেশের স্বনামধন্য জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং দেশ-বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত বাংলাদেশি গবেষকদের অভিজ্ঞতা ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণাকে কাজে লাগাবে।

তিন. শিক্ষায় ঝরে পড়া বাড়বে

চিকিৎসা ব্যয় বাড়া, পরিবারের সঞ্চয় কমা, উপর্জনক্ষম সদস্যের অসুস্থতা কিংবা বেকারত্বজনিত কর্মহীনতা এবং সেই সঙ্গে খাদ্য সংকট ও পুষ্টিহীনতার করাল ছোবল পড়বে আমাদের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায়। অর্থাৎ, আয়হীনতায় পড়ে শিক্ষায় ঝড়ে পড়া বাড়বে, কৃষি ও ভাসমান কাজে শিশুশ্রম বাড়বে। একইসঙ্গে প্রাইমারি, জুনিয়ার স্কুল, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ঝরে পড়া বাড়বে এবং পাশের হারও কমে আসতে পারে। সুতরাং এই কঠিন সময়ে শিক্ষা উপবৃত্তি ও কৃষি ভর্তুকির দিকে নজর দেয়া জরুরি।

ক. বর্তমানের শিক্ষা উপবৃত্তি খুবই নগণ্য। এর তুলনায় শিশুশ্রমের মজুরি অন্তত কুড়ি গুণ বেশি। এখানে একটা ভারসাম্য আনতে হবে, যাতে উপবৃত্তি প্রণোদনা হিসেবে শিশুশ্রমের চাইতে বেশি আকর্ষণীয় হয়।

খ. শিক্ষা উপবৃত্তিকে অন্তত ১৬ বা ১৮ বছরের সমসাময়িক শ্রেণি পর্যন্ত বিস্তৃত করা হয়। শিক্ষার শ্রেণি হিসেবে এটা উচ্চ মাধ্যমিক।

গ. জেএসসি, এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার নিবন্ধন ও পরীক্ষা ফি সরকার উঠিয়ে নিক। এটা ঝরে পড়া বন্ধে একটা জোরালো পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে।

ঘ. কৃষি ভর্তুকির পরিমাণ কোনভাবেই কমানো যাবে না, বরং সঠিক সময়ে নির্ধারিত মূল্যে সার বীজ কীটনাশক বালাইনাশক যাতে পাওয়া যায়, সে বিষয়ে তদারকি চালাতে হবে। মহামারির সময়ের কৃষি ও খাদ্য সংক্রান্ত যে কোন সমস্যা অন্য বহু সমস্যার সূত্রপাত করতে পারে।

চার. মনোস্তাত্ত্বিক বাঁধা

খাদ্য সংকটে পড়া শিশু ও কিশোর দীর্ঘ সময়ে ক্ষুধা তাড়নায় থাকলে দূরারোগ্য ব্যাধী এবং মনোস্তাত্তি¡ক শকে পড়ে পিছিয়ে পড়বে। স্বাভাবিক বিকাশ ও শিক্ষা পদ্ধতি এই শিশু কিশোরদের জন্য খুব কঠিন হয়ে পড়তে পারে। এই বিশেষ শিশু-কিশোরদের বিকাশে বিশেষায়িত স্কুলিং ব্যবস্থাপনা লাগবে।

সিডর-আইলার মতো প্রলয়ঙ্করী ঘুর্ণিঝড়ে পড়া, পিতা-মাতা ও পারিবারিক সহিংসতায় পড়া, সামাজিক অপরাধ ও সড়ক দুর্ঘটনায় ভোগা এবং নদী ভাঙার মতো পরিস্থতিতে বাংলাদেশে এমন শিশু-কিশোর শ্রেণি ইতিমধ্যেই রয়েছে। সরকারকে এই মনোস্তাত্তি¡ক সমস্যাগুলোর স্বীকৃতি দিতে হবে। এর জন্য বিশেষায়িত স্কুল করতে হবে। দুর্নীতিগ্রস্ত নামমাত্র প্রতিবন্ধী ভাতার নাম করে এই গভীর সমস্যাকে উড়িয়ে দেয়া চলবে না।

পাঁচ. ক্ষুধাজনিত অপরাধ

সরকার খাদ্য ও চিকিৎসা সংকটের মানবিক দায়িত্ব অস্বীকার করলে সমাজে অপরাধের বিস্তার ঘটবে। নাগরিক অসন্তোষে দীর্ঘমেয়াদে সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়ে অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগের সংকট তৈরি হবে, যা দীর্ঘমেয়াদে যার ক্ষতি ব্যাপক।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, যদি কার্বন নিঃসরণ কমানোর যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া না হয়, ২০৫০ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।

কেবল এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণেই বাংলাদেশ ও এই অঞ্চলে ফসলের উৎপাদন যেমন কমবে, তেমনি স্বাস্থ্যহানী থেকেও উৎপাদনশীলতা কমবে। জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে অসময়ে বৃষ্টি-বন্যা-খরা, রাসায়নিক দূষণে দ্রুত জমির উর্বরতা হ্রাসের সাথে করোনার ও সম্ভাব্য পঙ্গপালের আক্রমণের মত বিপর্যয়ে কৃষি ও কৃষিশ্রম ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করলে ক্ষুধা যেমন বাড়বে, অপরাধও বাড়বে।

ছয়. অলস শ্রমের ঘনীভবন ও নতুন শ্রমবাজার

উইকিপিডিয়ার তথ্যে বলা হয়েছে ‘১৯৭৪-এর মার্চ থেকে ডিসেম্বরে এক মর্মন্তুদ দুর্ভিক্ষে বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ অনাহারে মারা গিয়েছিল। সরকারি হিসাব অনুসারে ২৭ হাজার মানুষ অনাহারে মৃত্যুবরণ করে। তবে বেসরকারি হিসাবে অনুমানিক এক লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মৃত্যুবরণ করে। এই দুর্ভিক্ষকে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়ানক হিসেবে গণ্য করা হয়।

’৭৪-এর দুর্ভিক্ষের কারণে গ্রামের মানুষ দলে দলে খাদ্যের জন্য শহরে এসে লঙ্গরখানায় ভীড় করে। গ্রামীণ শ্রমের শহরে ঘনীভূত হওয়ার এ দীর্ঘ প্রক্রিয়ার শেষে বাংলাদেশে অন্তত দুটি নতুন শ্রমবাজারের যাত্রা শুরু হয়; মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক অদক্ষ প্রবাসী শ্রম এবং তৈরি পোশাকের স্বল্প দক্ষ শ্রমবাজার। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মধ্যপ্রাচ্যেও দেশে অতি সস্তায় অদক্ষ শ্রম বিক্রি শুরু করেন এবং দেশেও তৈরি পোশাকের একটা সস্তা শ্রমবাজার তৈরির পদক্ষেপ নেন।

ঠিক এরকম আরেকটি নতুন শ্রমবাজারের সূচনা করেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গ্রামীণ নারীরা ব্যাপকভাবে কৃষি ও কুটির শিল্পে জড়িত ছিলেন। পরে ক্ষুদ্রঋণের আগামনে গ্রামীণ নারী ছোট ছোট উদ্যোক্তার ভূমিকা নিয়েছেন। কৃষি বহুলাংশে কায়িক শ্রমকেন্দ্রিক থেকে যাওয়ায় এবং বছর বছর উৎপাদন মূল্য না মেলায় এযুগে লোকে কৃষিশ্রমে আগ্রহ হারিয়েছেন। কৃষিশ্রমের আবেদনও কমছে।

আর্থিক প্রাপ্তির আবেদন বেশ ফুরিয়ে এসেছে। আবাসন ও শিল্পের চাপে কৃষি জমির সাথে সাথে কৃষিতে শ্রমের যোগানও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ফলে নারী শ্রমিকের বেকারত্ব একটা বড় আর্থসামাজিক বিষয় হয়েছে। অর্থাৎ, শিল্পের বিকাশের সাথে সাথে দেশজ উৎপাদনে কৃষির হিস্যা কমে যায়। সাথে সাথে গ্রামীণ কুটির শিল্প সংকুচিত হয়।

এমতাবস্থায় ব্যাপকসংখ্যক গ্রামীণ নারী শ্রমিক অলস হয়ে পড়েন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে গৃহকর্মীর একটি অদক্ষ শ্রমবাজার তৈরিতে সক্ষম হন।

বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব, বৈশ্বিক মন্দা, করোনা এবং সম্ভাব্য একটি পঙ্গপালের আক্রমণের বিপদ আমাদের সামনে। আগেই ছিল চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের অটোমেশনের প্রভাব। মহামারি হিসেবে করোনাভাইরাস বা এ জাতীয় সম্ভাব্য সংক্রমণের ফলে বিশ্বজুড়ে মানব সংস্পর্শ বিহীন অটোমেশন কর্মসূচিতে আগের যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি গতি আসার একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়ে গেছে।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) কোরনোজনিত প্রাক্কলনে আনুষ্ঠানিক খাতের অন্তত ৯ লাখ মানুষের কাজহীনতার শঙ্কা জানিয়েছে। পাশাপাশি শ্রমশক্তির ৮৫ দশমিক ১ শতাংশ বা ৫ কোটি ১৭ লাখ ৩৪ হাজার মানুষের শ্রমবাজারের অধিকাংশই কাজ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে। বিজিএমইএ সূত্রমতে, ২৫ মার্চ সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত তৈরি পোশাকশিল্পের ৯৩৬টি কারখানার ৮০০ দশমিক ১৮ মিলিয়ন পোশাক পণ্যের অর্ডার বাতিল ও স্থগিত হয়েছে, যার মূল্য ২ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ২১ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা)।

এসব কারখানায় প্রায় ২০ লাখ শ্রমিক রয়েছেন। বিশ্বমন্দার স্থায়িত্ব, তৈরি পোশাকের প্রতিযোগী দেশগুলোর করোনার নিয়ন্ত্রণ সাফল্য, অটোমেশান, মূল্য প্রতিযোগিতা ইত্যাদির ওপর নির্ভর করবে ওইসব অর্ডার কতোটা ফিরে আসবে, কিংবা আদৌ ফিরবে কিনা। বলা হচ্ছে, এই মহামারি বিশ্বের অর্থনৈতিক মানচিত্র পরিবর্তন করে দিতে পারে।

মাহামারি ঠেকানোর সক্ষমতা, বিমা কোম্পানির আচরণ, সরকারের প্রণোদনা, অর্থনৈতিক সংস্কারের সাফল্য এবং শ্রমদক্ষতা; ইত্যাদির ওপর আমাদের কর্মসংস্থানের বাজার নির্ভর করবে। এমতাবস্থায় সম্ভাব্য অলস ও কর্মহীন শ্রমের একটি নতুন আর্থসামাজিক ভিত্তি তৈরি হয়ে গেছে এবং বাংলাদেশকে নতুনভাবে একাধিক স্বল্প দক্ষ এবং দক্ষ শ্রমবাজার খুঁজতে হবে, এবার আর অদক্ষ শ্রমবাজারের নতুন সুযোগ বাংলাদেশ নাও পেতে পারে। অর্থাৎ, করোনার পরেই ‘ঘওে ফেরা’ কর্মসূচি শেষে অলস শ্রমের যে ঘনীভবন হবে, তার টেকসই শ্রমবাজার গন্তব্য ও প্রস্তুতি নিয়ে সরকারকে ভাবতে হবে।


টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক লেখক

২০২০ সালে প্রকাশিত গ্রন্থ, ‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও বাংলাদেশ’।
ইমেইল: faiz.taiyeb@gmail.com

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০