শেয়ার বিজ ডেস্ক: গ্রামীণফোনের ২৩তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) ভার্চুয়ালভাবে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। কভিড-১৯ সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ও উপস্থিত শোয়ারহোল্ডার, কর্মী ও অন্যান্য সদস্যদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ বছর গ্রামীণফোন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বার্ষিক সাধারণ সভা পরিচালনা করে।
ভার্চুয়াল এজিএম’র ধারণাটি বাংলাদেশে সম্পূর্ণ নতুন। আর গ্রামীণফোনও প্রথমবারের মতো ভার্চুয়ালভাবে অনুষ্ঠিত হওয়া প্রতিষ্ঠানটির ২৩তম বার্ষিক সাধারণ সভায় শেয়ারহোল্ডারের উপস্থিতি নিশ্চিত করার পাশাপাশি এ সভাকে অর্থবহ ও অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে এজিএমটিকে বিশেষভাবে ডিজাইন করে।
গ্রামীণফোনের কোম্পানি সেক্রেটারি এস এম ইমদাদুল হকের পরিচালনায় ভার্চুয়াল এজিএমে অংশ নেন গ্রামীণফোনের বোর্ড চেয়ারম্যান পিটার বি ফারবার্গ, প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমানসহ বোর্ডের সদস্যরা এবং প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। গ্রামীণফোনের হেড অব এক্সটার্নাল কমিউনিক্যাশন্স মুহাম্মদ হাসান সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রামীণফোন বোর্ড চেয়ারম্যান পিটার বি ফারবার্গ বলেন, ‘বিশ্ব আজ কভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলা করছে, এ সময় যারা প্রিয়জন হারিয়েছেন, তাদের জন্য আমার সমবেদনা। এই পরিস্থিতিতে সবাইকে আমরা সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই এবং মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করি। আমরা বিশ্বাস করি, এই পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য সবার সম্মিলিত প্রয়াস একান্ত জরুরি এবং যূথবদ্ধভাবেই আমরা অর্থনীতির ওপর এর বিরূপ প্রভাব নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবো এবং সমাজের ক্ষমতায়ন ঘটাতে পারবো।’
বাংলাদেশে কভিড-১৯ এর বিস্তার মোকাবিলায়, গ্রামীণফোনকর্মী, অংশীদার, গ্রাহক ও শেয়ারহোল্ডারদের সুরক্ষার বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং মহামারি শুরুর সময় থেকেই গ্রামীণফোন ভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়াতে এটুআই, ডিজিএইচএস, ডব্লিউএইচও সাথে মিলে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এ নিরলস প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতা হিসেবেই, গ্রামীণফোন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যসেবাকর্মীদের সহায়তা করার লক্ষ্যে ৫০ হাজার মেডিকেল গ্রেড ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামাদি (পিপিই) এবং ১০ হাজার টেস্টিং কিট দেয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নির্ধারিত হাসপাতালগুলোতে পিপিই ও টেস্টিং কিটগুলো দেয়া হবে।
বিটিআরসি কর্তৃক বিতর্কিত অডিট দাবির বিষয়টি বিবেচনায়, ২০১৯ সাল গ্রামীণফোনের জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং বছর ছিলো। গ্রামীণফোন আদালতে অথবা আরবিট্রেশনের মাধ্যমে বিবাদমান এই বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধানের অপেক্ষায় রয়েছে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিধি-নিষেধ সম্পর্কে পেটার বি ফারবার্গ বলেন, ‘আমরা বিবাদমান এই বিষয়টির বন্ধুত্বপূর্ণ ও স্বচ্ছ সমাধানের লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা অব্যাহত রেখেছি, যাতে করে, আমাদের ক্রেতা, অংশীদার ও শেয়ারহোল্ডারদের অধিকার সুরক্ষিত থাকে।
চরম প্রতিযোগিতামূলক বাজারে এসব প্রতিকূল সত্ত্বেও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, দ্রুততা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে এর কৌশলের সফল বাস্তবায়ন করতে পেরেছে। গ্রাহককেন্দ্রিক আধুনিকায়নের উদ্যোগ এবং কার্যক্রমগত দক্ষতার কারণেই গ্রামীণফোনের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে যা শেয়ারহোল্ডারদের রিটার্নে ইতিবাচক প্রভাব রেখেছে।
এসব পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে, আজ গ্রামীণফোন লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ পরিশোধিত মূলধনের ৪০ শতাংশ হারে (প্রতি ১০ টাকার শেয়ারে ৪ টাকা) ২০১৯-এর চূড়ান্ত আর্থিক লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর মধ্য দিয়ে পরিশোধিত মূলধনের মোট চূড়ান্ত লভ্যাংশের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩০ শতাংশ (৯০ শতাংশ অন্তর্বর্তী নগদ লভ্যাংশ অন্তর্ভূক্ত), কর বাদ দিলে ২০১৯ সালে লভ্যাংশের পরিমাণ ৫০.৮৬ শতাংশ।
উল্লেখ্য, টেলিনর গ্রুপের অঙ্গসংগঠন গ্রামীণফোন ৭৬ মিলিয়ন এরও অধিক গ্রাহক নিয়ে বাংলাদেশের অগ্রণী টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান। ১৯৯৭ সালে যাত্রা শুরু করার পর দেশব্যাপী সর্ববৃহৎ নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে গ্রামীণফোন যার মাধ্যমে দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ সেবা গ্রহণ করতে পারে। ব্র্যান্ড প্রতিজ্ঞা ‘চলো বহুদূর’ এর আওতায় গ্রামীণফোন, গ্রাহকদের জন্য সর্বোত্তম মোবাইল ডাটা, ভয়েস সেবা এবং সবার জন্য ইন্টারনেট প্রদানে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। গ্রামীণফোন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত।