প্রতিনিধি, নোয়াখালী: করোনা যুদ্ধে মৃতু্যবরণকারী দেশের প্রথম চিকিৎসক ডা. মো. মইন উদ্দিনের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী এমপি। নিজের করা ‘একরাম চৌধুরী ফাউন্ডেশন’ এর পক্ষ থেকে ২ লাখ টাকার আর্থিক অনুদান ঘোষণা করেন তিনি।
সম্প্রতি এক ভিডিও বার্তায় একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, আমাদের সকলকেই একদিন মারা যেতে হবে। তবে এই রকম ভালোবাসা ও সম্মান নিয়ে মৃত্যুবরণ করার ভাগ্য সবার হয় না, মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন সবার বেলায় লিখে না। আমরা আমাদের ডাক্তার মইনকে বাঁচাতে পারিনি।
তিনি বলেন, অন্ততপক্ষে উনার পরিবারের সম্মতিতে আমার ফাউন্ডেশন থেকে উনার পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চাই। ফাউন্ডেশন থেকে আমি দুই লক্ষ টাকা দিতে চাই। আমি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। মানুষের প্রতি, দেশের প্রতি তার এই আত্মত্যাগের কথা গোটা জাতি আজীবন শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে।
এ সময় তিনি আরো বলেন, আমি আমার বাসায়ই আছি। হোম কোয়ারেন্টাইনে আছি। আপনারাও বাসায় থাকেন। নিজে সুস্থ থাকেন। আশপাশের মানুষদের সুস্থ রাখেন।
এদিকে, নোয়াখালীর হত-দরিদ্র মানুষের জন্য এর আগে ‘একরাম চৌধুরী ফাউন্ডেশন’ গঠন করেন একরাম চৌধুরী। সেখানে ৫০ লাখ টাকা অনুদানও দেন তিনি। এছাড়া সরকারের পাশাপাশি নিজের অর্থায়নে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নোয়াখালী জেলার ৬০-৭০ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিতরণ করেন তিনি।
এর আগে ৫ এপ্রিল একরামুল করিম চৌধুরী নিজের ফেসবুক একাউন্টে বলেন, ‘সোনালী ব্যাংক,মাইজদী- নোয়াখালী ব্রাঞ্চ, ব্যাংক একাউন্টের নাম-একরাম চৌধুরী ফাউন্ডেশন, একাউন্ট নম্বর-৩৮১৮২০২০০২৬৪৪ দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে কিংবা দেশের বাহিরে থেকে (প্রবাসীরা) অনলাইনে ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ৫০০ থেকে শুরু করে যেকোনো পরিমাণের টাকা জমা দিয়ে মানবতার সেবার এগিয়ে আসুন সকলে। মহামারি করোনা ভাইরাস সংকট মহূর্তে আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী “একরাম চৌধুরী ফাউন্ডেশন” সোনালী ব্যাংক মাইজদী নোয়াখালী শাখায় অনলাইন কিংবা সরাসরি এসে অর্থ জমা দিয়ে গরিব, দুঃখী অসহায়, দিনমজুর, নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণে সহযোগিতা করুন।’
করোনার সঙ্গে লড়ে হেরে যান সিলেটের প্রথম করোনা আক্রান্ত ডা. মইন উদ্দিন। ১৫ এপ্রিল সকাল ৭ সাড়ে টায় রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মইন উদ্দিন করোনা আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায় গত ৫ই এপ্রিল। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর তিনি নগরীর হাউজিং এস্টেটের নিজ বাসায় আইসোলেশনে ছিলেন। ৭ই এপ্রিল তার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে সিলেটে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আইসিইউ ও ভেন্টিলেশন সুবিধা না থাকাায় ৮ই এপ্রিল ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়।
সোমবার তার শারীরিক অবস্থার অবনিত হলে আইসিইউতে নেয়া হয়।