নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) উভয় বাজারে গতকাল সূচকের পতন হয়েছে। তবে ডিএসইতে লেনদেন কমলেও সিএসইতে বেড়েছে। বিশ্বব্যাপী করোনার (কভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের বিস্তাররোধে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি শেষে গত রোববার উভয় বাজারে আবার লেনদেন শুরু হয়। প্রথম দিন বাজারের গতি ঊর্ধ্বমুখী হলেও পরের দুই দিন, অর্থাৎ গতকাল ও রোববার উভয় বাজারে বড় পতন হয়েছে। গতকাল বেশিরভাগ শেয়ারের দর অপরিবর্তিত ছিল। তবে বাকি শেয়ারগুলোর মধ্যে অধিকাংশের দর কমায় সবকটি সূচকের পতন হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল লেনদেনের শুরুতে শেয়ার কেনার চাপ ধারাবাহিকভাবে বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে সূচকও ধীরে ধীরে নি¤œমুখী হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত সূচকের পতন অব্যাহত থাকে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের পতন হলেও লেনদেন সামান্য বেড়েছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৯ দশমিক ৯১ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৭৪ শতাংশ কমে তিন হাজার ৯৬৯ দশমিক ৫৮ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক ৯ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট বা এক দশমিক শূন্য চার শতাংশ কমে ৯২০ দশমিক ২০ পয়েন্টে অবস্থান করে। অন্যদিকে ডিএস৩০ সূচক ১৬ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বা এক দশমিক ২৩ শতাংশ কমে এক হাজার ৩৩০ দশমিক ৫০ পয়েন্টে স্থির হয়।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয় ১৫৫ কোটি ২৪ লাখ ২২ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৯৭ কোটি ৭৬ লাখ ৭৭ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন কমেছে ৪২ কোটি ৫২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। এদিন তিন কোটি ৮৫ লাখ ৩৯ হাজার ৩৮টি শেয়ার ২০ হাজার ৯৯০ বার হাতবদল হয়। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা কমে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ১০ হাজার ৬৮১ কোটি ৮৪ লাখ ৯৯ হাজার টাকায়।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে ওষুধ ও রসায়ন খাতের স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। কোম্পানিটির ১৬ কোটি ৩৫ লাখ ৭৮ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। শেয়ারটির দর কমেছে তিন টাকা ২০ পয়সা। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা গ্রামীণফোনের ১০ কোটি ২৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর কমেছে এক টাকা ৫০ পয়সা। বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ছয় কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর কমেছে দুই টাকা। এর পরের অবস্থানগুলোয় থাকা বেক্সিমকোর চার কোটি ৪০ লাখ টাকার, ইন্দো বাংলা ফার্মার তিন কোটি ১৫ লাখ টাকার, মুন্নু সিরামিকের তিন কোটি ১০ লাখ টাকার, এক্সিম ব্যাংকের দুই কোটি ৮৯ লাখ টাকার, সেন্ট্রাল ফার্মার দুই কোটি ৮৭ লাখ টাকার, ওরিয়ন ফার্মার দুই কোটি ৮৩ লাখ টাকার এবং আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের দুই কোটি ২৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
দুই দশমিক ৬৩ শতাংশ বেড়ে দরবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল আইসিবি এএমসিএল সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ারদর দুই দশমিক ২৯ শতাংশ, এক্সিম ব্যাংকের দুই দশমিক ২৭ শতাংশ, ঢাকা ব্যাংকের এক দশমিক শূন্য এক শতাংশ, অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের শূন্য দশমিক ৫৬ শতাংশ, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের শূন্য দশমিক ৫১ শতাংশ, যমুনা অয়েলের শূন্য দশমিক ৩৬ শতাংশ এবং বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেডের শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে ৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ দর কমে পতনের শীর্ষে উঠে আসে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। বেক্সিমকোর দর সাত দশমিক ৫৩ শতাংশ, এসিআই ফরমুলেশনসের দর সাত দশমিক ১৭ শতাংশ, দি একমি ল্যাবরেটরিজের দর ছয় দশমিক ৪৫ শতাংশ, বিডি ওয়েল্ডিংয়ের দর ছয় দশমিক ৩২ শতাংশ, বেক্সিমকো ফার্মার দর চার দশমিক ৮৩ শতাংশ ও শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানির দর চার দশমিক ৪২ শতাংশ কমেছে। সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের চার দশমিক ২০ শতাংশ, ইন্দো বাংলা ফার্মার তিন দশমিক ৬৬ শতাংশ ও সিলভা ফার্মার দর তিন দশমিক ৫৮ শতাংশ কমেছে।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএসসিএক্স ৪৯ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৭২ শতাংশ কমে ছয় হাজার ৮২৩ দশমিক ২৮ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮০ দশমিক ১২ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ কমে ১১ হাজার ২৬১ পয়েন্টে অবস্থান করে। সিএসইতে ১২৮টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়েছে। দর বেড়েছে ১০টির, কমেছে ৩০টির এবং ৮৮টির দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫৬ কোটি ৬৫ লাখ ৮৩ হাজার ৫৯৯ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট।