ডিএসইতে সূচকের পতন লেনদেন কমেছে ১১০ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক পতনের পাশাপাশি ১১০ কোটি টাকার লেনদেন কমেছে। গতকাল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছে ৪২ কোটি ৯৭ লাখ টাকার, যা গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বনিন্ম। এর আগে ২০০৭ সালের ২৪ এপ্রিল ডিসইএতে ৪০ কোটি ৩৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়। এদিকে সপ্তাহজুড়ে গতকালসহ টানা চার দিন বাজারের পতন হলো। প্রায় দুই মাস পুঁজিবাজার বন্ধ থাকার পর গত রোববার উভয় বাজারের পুনরায় লেনদেন শুরু হয় এবং লেনদেন শুরুর দ্বিতীয় দিন থেকে ধারাবাহিকভাবে বাজারের পতন হচ্ছে। গতকাল বেশিরভাগ শেয়ারের দর অপরিবর্তিত ছিল। তবে বাকি শেয়ারগুলোর মধ্যে অধিকাংশের দর কমায় সব কয়টি সূচকের পতন হয়।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল লেনদেনের শুরুতে শেয়ার কেনার চাপ ধারাবাহিকভাবে বাড়ার প্রেক্ষিতে সূচকও ধীরে ধীরে নি¤œমুখী হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত সূচকের পতন অব্যাহত থাকে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) আগের দিনের তুলনায় সূচক ও লেনদেন সামান্য বেড়েছে।

বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১০ দশমিক শূন্য এক পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ কমে তিন হাজার ৯৫৩ দশমিক ৩৮ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক তিন দশমিক শূন্য তিন পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৩৩ শতাংশ কমে ৯১৫ দশমিক ৯৫ পয়েন্টে অবস্থান করে। অন্যদিকে ডিএস৩০ সূচক সাত দশমিক শূন্য এক পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৫২ শতাংশ কমে এক হাজার ৩২১ দশমিক ৪৯ পয়েন্টে স্থির হয়।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয় ৪২ কোটি ৯৭ লাখ ২১ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৫২ কোটি ৬৩ লাখ ৫৩ হাজার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন কমেছে প্রায় ১০৯ কোটি ৬৬ লাখ ৩২ হাজার টাকা। এদিন এক কোটি ৬৭ লাখ ৪৯ হাজার ১৬৭টি শেয়ার ১০ হাজার ২৬৯ বার হাতবদল হয়। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন প্রায় ৪০০ কোটি টাকা কমে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৯ হাজার ৯৬৬ কোটি ৩৬ লাখ ৮৪ হাজার টাকায়।

গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে বেক্সিমকো ফার্মা লিমিটেড। কোম্পানিটির ছয় কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। শেয়ারটির দর কমেছে চার টাকা। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা গ্রামীণফোনের চার কোটি ৭২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ১০ পয়সা। সেন্ট্রাল ফার্মার দুই কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর কমেছে ৫০ পয়সা। এরপরের অবস্থানগুলোতে থাকা লিন্ডে বাংলাদেশের এক কোটি ৮২ লাখ টাকার, স্কয়ার ফার্মার এক কোটি ৫৫ লাখ, ইন্দো বাংলা ফার্মার এক কোটি ৪০ লাখ, বেক্সিমকোর এক্সিম ব্যাংকের এক কোটি ২৯ লাখ, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানির এক কোটি চার লাখ, দি এক্মি ল্যাবরেটরিজের ৮৩ লাখ এবং রেকিট বেনকিজার বাংলাদেশ লিমিটেডের ৮৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।

দুই দশমিক ৬৩ শতাংশ বেড়ে দর বৃদ্ধির শীর্ষে ছিল লিন্ডে বাংলাদেশ লিমিটেড। রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর দুই দশমিক ২২ শতাংশ, এক্সিম ব্যাংকের এক দশমিক ১৪ শতাংশ, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্লের শূন্য দশমিক ৬৪ শতাংশ, ন্যাশনাল টির শূন্য দশমিক ৪৮ শতাংশ, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সের শূন্য দশমিক ৪৬ শতাংশ, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের শূন্য দশমিক ৪২ শতাংশ, পাইওনিয়র ইন্স্যুরেন্সের শূন্য দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং গ্রামীণফোনের শূন্য দশমিক শূন্য চার শতাংশ বেড়েছে।

অন্যদিকে সাত দশমিক ২৮ শতাংশ দর কমে পতনের শীর্ষে উঠে আসে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। ম্যামপুর সুগার মিলসের দর পাঁচ দশমিক ৪৬ শতাংশ, মেঘনা পিইটির দর পাঁচ দশমিক ৩১ শতাংশ, উত্তরা ব্যাংকের পাঁচ দশমিক ২০ শতাংশ, সেন্ট্রাল ফার্মার দর চার দশমিক ৭২ শতাংশ, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের তিন দশমিক ৪৪ শতাংশ, শাইনপুকুর সিরামিকের দর তিন দশমিক ৪৪ শতাংশ কমেছে। ইন্দো বাংলা ফার্মার দুই দশমিক ৮৭ শতাংশ, দেশ গার্মেন্টের দুই দশমিক ৮১ শতাংশ এবং জিল বাংলা সুগার মিলের দুই দশমিক ৭৬ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএসসিএক্স চার পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ বেড়ে ছয় হাজার ৮০৮ দশমিক ২৩ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ছয় দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ বেড়ে ১১ হাজার ২৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। সিএসইতে ১০৩টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়েছে। দর বেড়েছে ৯টির, কমেছে ১৯টির এবং ৭৫টির দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে চার কোটি ৫৯ লাখ ৬৬ হাজার ২৮ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল তিন কোটি ৬০ লাখ ২৩ হাজার ১৩৬ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন বেড়েছে প্রায় এক কোটি টাকা।

সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল আইসিবি এএমসিএল সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। কোম্পানিটির এক কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এনসিসি ব্যাংকের ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এরপরে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ২৪ লাখ, বেক্সিমকোর ১৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। বেক্সিমকো ফার্মার সাত লাখ টাকার, ওরিয়ন ফার্মার সাত লাখ, ইয়াকিন পলিমারের সাত লাখ, এসিআইয়ের সাত লাখ এবং সেন্ট্রাল ফার্মা পাঁচ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০