নিজস্ব প্রতিবেদক: হালকা লাইসেন্সধারী চালকরা আগে চালাতে পারতেন শুধু মোটরসাইকেল বা অটোরিকশার মতো যানবাহন। এতে অভিজ্ঞ হলে মধ্যম শ্রেণির লাইসেন্স পাওয়া যায়, যা দিয়ে চালানো যায় মিনিবাস, পিকআপ, হিউম্যান হলার, প্রাইভেটকার, জিপ ও ট্রাক্টরের মতো গাড়ি। বাস ও ট্রাকের মতো ভারী গাড়ি চালাতে হলে লাইসেন্সও হতে হবে ভারী, যা মধ্যম শ্রেণির গাড়ি সন্তোষজনক সময় পর্যন্ত চালানোর পরই পাওয়া যায়।
যদিও গত বছর এ শর্ত শিথিল করে তিন বছরের হালকা যান চালানোর অভিজ্ঞদের ভারী যান চালানোর লাইসেন্সের অনুমোদন দেওয়া হয়। এবার করোনার মাঝে সে শর্ত আরও শিথিল করা হয়। এখন থেকে দু’বছর মোটরযান চালানোর অভিজ্ঞতা থাকলেই মিলবে ভারী যানবাহন চালানোর লাইসেন্স। ২০২১ সালের ৩০ জনু পর্যন্ত এ সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, গণপরিবহনে ড্রাইভার হিসেবে নিয়োজিত যে ব্যক্তি হালকা মোটরযান চালনার বৈধ পেশাদার লাইসেন্স রয়েছে এবং সে লাইসেন্সের মেয়াদ ন্যূনতম এক বছর হয়েছে সে ব্যক্তি মধ্যম শ্রেণির মোটরযান চালানোর লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবে। অনুরূপভাবে মধ্যম শ্রেণির মোটরযান চালানোর বৈধ পেশাদার লাইসেন্সধারী ব্যক্তি তার লাইসেন্সের মেয়াদ এক বছর অতিক্রান্ত হলে ভারী শ্রেণির লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন। অর্থাৎ মোটরযান চালানোর দু’বছরের অভিজ্ঞতা থাকলেই ভারী তথা বাস-ট্রাক চালানোর লাইসেন্স পাবেন যে কোনে চালক।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, হালকা শ্রেণির মোটরযান চালানোর বৈধ পেশাদার লাইসেন্স থাকলে তিন বছর অতিক্রান্ত হলে ভারী লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন চালক। অর্থাৎ এ শর্তানুসারে হালকা শ্রেণির চালকা মাঝারি যান চালানোর কোনো ধরনের অভিজ্ঞতাই ভারী যান চালানোর লাইসেন্স পাবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারী শ্রেণির লাইসেন্স নেই, কিংবা থাকলেও তা নেওয়া হয়েছে সব শর্ত পূরণ না করেÑএমন চালকের কারণে প্রায়ই বাস-ট্রাক দুর্ঘটনা ঘটছে। এ থেকে উত্তরণে যখন আইনকানুন আরও কঠোর করার দাবি উঠেছে, তখন উল্টো কর্তৃপক্ষ ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার প্রচলিত আইনের শর্ত শিথিল করা হল যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) পরিচালক ও বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হলে পরিবহন সেক্টরে অরাজকতা শুরু হবে। হাতুড়ে ডাক্তারদের এমবিবিএস ঘোষণার সঙ্গে এ সিদ্ধান্তের কোনো পার্থক্য নেই। এর ফলে পরিবহন জগতে অনাচার আরও বৃদ্ধি পাবে।’