নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের (২০২০-২১) জন্য প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। অনলাইন মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে প্রতিক্রিয়া জানান সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ১০ শতাংশ করে দিয়ে কালোটাকা বৈধ করার সুযোগ রাখা হয়েছে। এটা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। যেখানে বিদ্যমান আইনে আয়ের ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত কর দেওয়া হচ্ছে। সেখানে মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে কালোটাকা বৈধ করার সুযোগ গ্রহণযোগ্য নয়। সিপিডি বরাবরই কালোটাকা বৈধ করার সুযোগ দেওয়ার বিরোধিতা করে আসছে।
সিপিডির মতে, বাজেটে সব পর্যায়ে করহার কমানো হয়েছে। কিন্তু স্বল্প ও উচ্চ আয়ের ক্ষেত্রে একই হারে কর কমানো হচ্ছে। এতে বৈষম্য কমবে না। সামাজিক ও খাদ্য বৈষম্য বাড়বে। এবারের বাজেটেও ব্যাংক খাত থেকে বড় অঙ্কের ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। দুর্বল ব্যাংক খাতের উন্নয়নে ব্যাংকিং কমিশন গঠন ও সংস্কারের বিষয়গুলো সেভাবে বাজেটে আনা হয়নি। সংস্কার কর্মসূচি নিয়ে আরও জোরালো কথা থাকতে পারত।
বাজেট প্রস্তাবনা দেখে মনে হচ্ছে, সরকারিভাবে ধরে নেওয়া হচ্ছে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) প্রাদুর্ভাব কয়েক মাসের মধ্যেই কমে আসবে। কিন্তু বাস্তবে তা হবে না। দেশের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি দেখে বোঝা যাচ্ছে করোনা পরিস্থিতি শিগগিরই যাচ্ছে না। এ বিষয়ে বাজেটে প্রকৃত চিত্র উঠে আসেনি বলে সিপিডি মনে করে। করোনা পরিস্থিতি ও অর্থনৈতিক কারণে রাজস্ব আহরণের চিত্র ভালো নয়। সামনের দিনগুলোতেও যে পরিস্থিতির দ্রুত উন্নয়ন হবে, তা বলা যাচ্ছে না। চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আহরণ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৩৯ শতাংশ। আগামী বাজেটে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রার আদায়ের হার ধরা হয়েছে ৫০ শতাংশের মতো। এটিও বাস্তবসম্মত নয়।
এছাড়া করকাঠামো ও বিনিয়োগে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। বাজেটে সরকারের ব্যয় সাশ্রয় ও অগ্রাধিকার খাতগুলো সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা দেওয়া প্রয়োজন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতা ও ব্যয় আরও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। সামগ্রিকভাবে রাজস্ব আহরণ, ব্যয়, বিনিয়োগ ও অগ্রাধিকার খাত নির্ধারণে বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেনি বলে আমরা মনে করছি।