প্রতিনিধি, নওগাঁ : নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় নৌ-পরিবহন (বিআইডব্লিউটি) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক খননকৃত সরকারি লিজভুক্ত গুড় নদীর বালি তমা এন্টারপ্রাইজের তোফাজ্জল হোসেন তোফা অবৈধভাবে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা। গতকাল বুধবার শহরের প্যারিমোহন লাইব্রেরিতে সরকারিভাবে লিজকৃত বৈধ ইজাদার নিরেন চন্দ্র মহন্ত এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আত্রাইয়ে গুড় নদীর বালিমহালের জন্য বাংলা ১৪২৭ সালের জন্য ২০ লাখ ২০ হাজার ৫৫১ টাকায় ইজারা মূল্যসহ সরকারি বিধি মোতাবেক আয়কর ও ভ্যাট বাবদ চার লাখ চার হাজার ১১১ টাকা পরিশোধ করা হয়। গত ১৩ এপ্রিল ৭৬৪ নম্বর স্মারকপত্রের পরিপ্রেক্ষিতে আত্রাই সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে একটি আবেদন করা হয়। পরদিন উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার তাকে বালিমহালটি বুঝিয়ে দেন।
কিন্তু বালিমহালটি বুঝিয়ে দেওয়ার সময় বিআইডব্লিউটিএ থেকে নদী খনন করায় বালি স্তূপ আকারে থাকায় মধুগুড়নই মৌজার ২৮১, ২৮২ ও ২৮৩ দাগে বাঁধ অ্যাকুয়ারের দাগের ওপরে বালিগুলো লাল পতাকা দ্বারা চিহ্নিত করে তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া পাঁচুপুর মৌজাসহ নদীর উভয় পাশে বিআইডব্লিউটিএ নদী খনন করায় বালির স্তূপ পড়ে রয়েছে।
তিনি বলেন, স্থানীয় তোফাজ্জল হোসেন তোফা ২০১৮ সালে নিচু জায়গা পূরণ করার জন্য বিআইডব্লিউটি থেকে ৩০ লাখ ঘনফুট বালির রয়েলিটি নেন। কিন্তু তিনি ৩০ লাখ ঘনফুট বালির রয়েলিটির পরিবর্তে প্রায় দুই কোটি ঘনফুট বালি বিক্রি করেছেন এবং এখনও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রানীনগর থানা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক শাহাদত সায়েম, আত্রাই উপজেলার বিশা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান, আত্রাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দিন প্রামাণিক প্রমুখ।
এ বিষয়ে তমা এন্টারপ্রাইজের স্বত্ব¡াধিকারী তোফাজ্জল হোসেন তোফা বলেন, বিআইডব্লিউটিএ থেকে ৬০ লাখ ঘনফুট বালি রয়েলেটি নিয়েছি। যেহেতু নদী খনন প্রক্রিয়াটি চলমান। বিআইডব্লিউটিএ’র মাটি-বালির সাথে সরকারি ইজারা বালি মহলের কোন সম্পর্ক নেই। নিজস্ব জমিতে বালিগুলো রেখে আমি বিক্রি করছি। একটি পক্ষ পানি ঘোলা করতে মিথ্যা বানোয়াট ভাবে সংবাদ পরিবেশন করার চেষ্টা করছে বলেও দাবি করেন তিনি।
নওগাঁ’র অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) উত্তম কুমার বলেন, ওই বালি মহালের প্রকৃত অবস্থা জানতে স্থানীয় ইউএনওকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। সরকারিভাবে ইজারা নেয়া মহালের ইজাদার যেন কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়টি আমরা দেখবো। এছাড়া বিআইডব্লিউটিএ থেকে বালিগুলো তোফাজ্জল হোসেন তোফা কীভাবে পেয়েছেন সেটাও দেখা হবে। এরপর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।