সচেতনতাই পারে লকডাউনে পারিবারিক সহিংসতা ও নারী নির্যাতন রোধ করতে

সুলতানা লাবু : সকাল থেকে বেশ উদ্বিগ্ন শিউলি বেগম। কোনো কিছুতেই যেন মনোযোগ নেই তার। একটা কাজ করতে গিয়ে করছেন আরেকটা। বারবার ফোনের কাছে যান, কিন্তু কাউকে ফোন করেন না। ফোনটা হাতে নিয়ে আবার রেখে দেন। শিউলির স্বামী মামুন বিষয়টা খেয়াল করেছেন, তবুও শিউলিকে কিছু বলেননি। কী আর বলবেন, এখন সময়টাই এমন। সবাই বড় অস্থিরতার মধ্যে সময় কাটাচ্ছে। প্রায় তিন মাস হতে চলল করোনাভাইরাসের জন্য লকডাউনে চলছে দেশ।

কী হয়েছে মামুন জানতে চাইলে শিউলি বললেন, ‘আমার বান্ধবী হাসনার খুব বিপদ। এসএমএস করে আমার কাছে সাহায্য চাইছে। আমার মনে হচ্ছে তাকে সাহায্য করা উচিত; কিন্তু কীভাবে সাহায্য করব, তা-ই ভাবছি।’ শিউলি আরও জানায়, তার বান্ধবীর স্বামী একটু অন্য রকম। আগেও তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করত, কিন্তু লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে সেটা আরও বেড়ে গেছে। সে লিখেছে, এখন ছেলেমেয়েদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করে। তার খুব খারাপ অবস্থা। তার স্বামী এখন গায়েও হাত তোলে। লকডাউনের জন্য বাবার বাড়িতেও যেতে পারছে না। শুধু তা-ই নয়, সে কারও সঙ্গে ফোনেও কথা বলে শেয়ার করতে পারছে না। লকডাউনে তার স্বামী সারা দিন বাসায় থাকছে বলে ফোনে এসব কথা বলতে পারছে না বলে মাঝরাতে মেসেজ করেছে। তার সাহায্য দরকার।

মামুন বললেন, ‘তুমি চিন্তা করো না। আমরা তাকে অবশ্যই সাহায্য করব। সাহায্য করার অনেক উপায় আছে। তোমার বান্ধবীর মতো অনেকেই নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। সারা দেশেও এ লকডাউনের সময় এ ধরনের নির্যাতন আরও বেড়ে গেছে। শুধু বাংলাদেশেই নয়, লকডাউনে নির্যাতন বেড়েছে সারা বিশ্বেই।’

করোনাভাইরাসের জন্য সারা বিশ্বেই লকডাউন চলছে। সবার সব কাজ বন্ধ। সবাই ঘরে। কেউ বাইরে যেতে পারছে না। এমন অবস্থায় মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থাও খুব খারাপ। তাই বিশ্বজুড়ে এই পারিবারিক কলহ ও নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেছে। আর এই নির্যাতনের সবচেয়ে বড় শিকার হচ্ছে নারী ও শিশুরা। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বিবৃতিও দিয়ে বলেছেন, ‘ঘরেই নারী ও শিশুদের সবচেয়ে নিরাপদ ও চাপমুক্ত থাকার কথা ছিল এই সংকটপূর্ণ সময়ে। অথচ করোনাভাইরাসের এই প্রাদুর্ভাবের সময় বিশ্বজুড়ে নারীদের পারিবারিক সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনা বেড়ে গেছে বহুগুণ। অনেক নারী ও তরুণী তাদের নিজ বাড়ি থেকে সবচেয়ে বেশি সহিংসতার হুমকিতে পড়েছে। বিষয়টি খুব দুঃখজনক। আমি বিশ্বজুড়ে সবাইকে নিজ বাড়িতে শান্তি বজায় রেখে বসবাসের অনুরোধ জানাচ্ছি।’ এজন্য জাতিসংঘ মহাসচিব সব দেশের সরকারের কাছে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় নীতিনির্ধারণ ও বাস্তবায়নে এ বিষয়গুলোকে আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া ইউএন উইমেন কার্যনির্বাহী পরিচালক ফুমজিলা ম্লামবোও বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘কভিড মহামারিতে নারীদের ওপর নির্যাতন আশঙ্কাজনকহারে বেড়ে গেছে। মহামারির সঙ্গে সঙ্গে এটিও অন্যতম প্রধান সমস্যা, যা মহামারির ভয়াবহতা আরও বাড়িয়ে তোলে। কেননা এর সামাজিক প্রভাব ছাড়াও রয়েছে আর্থিক নেতিবাচক প্রভাব। নারীর প্রতি নির্যাতনের কারণে এক দশমিক পাঁচ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয় আর মহামারির সময় এর পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পায়। এছাড়া পারিবারিক সহিংসতা থেকে নারীকে রক্ষার জন্য বিশ্বের প্রতি চার দেশের একটিতে কোনো আইনই নেই। ফলে মহামারির এই দুঃসময়ে নারীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং নিরাপত্তায় আমাদের উচ্চকণ্ঠ হতে হবে, যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে এখনই।’

শিউলি বেগম বললেন, ‘এই মহামারির সময় মানুষের সংযত থাকার কথা। আর সেখানে এই চিত্র আসলেই হতাশাজনক। অথচ ঘরে নারীর কাজের চাপও কয়েকগুণ বেড়ে গেছে করোনাজনিত লকডাউনের জন্য। এর মধ্যে আবার নির্যাতন!’

গবেষণায় দেখা গেছে, বিভিন্ন দেশে নির্যাতনের শিকার হওয়া নারীরা হেল্পলাইনে সাহায্য চাওয়া বাড়িয়ে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের জরুরি সাহায্য বিভাগগুলোয় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সাহায্য চাওয়ার পাশাপাশি পারিবারিক কলহ ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে কল করার হারও বেড়ে গেছে নারী ও শিশুদের। যারা নির্যাতিত হচ্ছে তাদের সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন দেশে সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে। পারিবারিক সহিংসতার বিষয়ে সহায়তা দেওয়া ব্রিটেনের একটি প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, তাদের হেল্পলাইনে লকডাউনের দুই সপ্তাহ পরেই সাহায্য চাওয়ার পরিমাণ আগের চেয়ে ২৫ শতাংশ বেড়ে গেছে। অস্ট্রেলিয়ায় এই হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ শতাংশে ও ফ্রান্সে ৩২ শতাংশে। সাব-সাহারান দেশগুলোতে ৬৫ শতাংশ নারীই নির্যাতিত হচ্ছে। আর দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম সপ্তাহেই লিঙ্গভিত্তিক অভিযোগের সংখ্যা ছিল ৯০ হাজার।

শিউলি ভাবেন, এসব নারীদের অবস্থাও তার বান্ধবী হাসনার মতোই। আগেও হাসনার ওপর নানারকম মানসিক নির্যাতন করা হতো। তার স্বামী অফিস থেকে ফেরার পর যেটুকু সময় বাসায় থাকত শুধু তার ভুল ধরত। নানারকম কটু কথা শোনাত। আর লকডাউনে সারাক্ষণ বাসায় থাকায় নির্যাতনটাও বেড়ে গেছে।

কিছুদিন আগে যখন বিশ্ব পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল, তখন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সামাজিক লিঙ্গরীতি সূচক-বিষয়ক একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে ৯০ শতাংশ মানুষই নারীবিদ্বেষী। বিশ্বের ৭৫টি দেশের মানুষ চরম নারীবিদ্বেষী। সেখানে নারী অধিকারের চিত্র হতাশাজনক। এর কারণ মূলত পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব। এছাড়া রয়েছে ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা, ধর্মীয় অপব্যাখ্যা, চরম পুরুষতান্ত্রিক পারিবারিক সংস্কৃতিতে বড় হওয়া প্রভৃতি। ফলে বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নারী সব সময় নির্যাতনের শিকার হয়ে এসেছে। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউনের পর এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। নির্যাতিত নারীরা অনেক ক্ষেত্রে মাদকাসক্ত ও আত্মহত্যায় প্ররোচিত হচ্ছেন। নারীর প্রতি নির্যাতন ও প্রচণ্ড চাপ করোনাভাইরাসের মহামারিকে আরও

তীব্র করে তুলেছে। করোনাভাইরাসের সঙ্গে জিততে চাইলে নারী-পুরুষকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। কিন্তু নারীর প্রতি নির্যাতন এ লড়াইকে দিন দিন কঠিন করে তুলছে।

বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সারা দেশে লম্বা সময় ধরে চলা ছুটিতে অস্বাভাবিকহারে নারী নির্যাতন বেড়ে গেছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, ব্র্যাক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন প্রভৃতি সংগঠনের পর্যবেক্ষণ এবং জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের প্রতিবেদনে এ সময় পারিবারিক সহিংসতা ও নারী নির্যাতন বেড়ে যাওয়ার কথা বলছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কর্মহীন হওয়া, সারাক্ষণ ঘরে থাকা, করোনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যস্ত থাকা ও পারিবারিক নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে দিয়েছে নারী নির্যাতন ও বাল্যবিয়ের মতো ঘটনা। এ সময় ঘরে আবদ্ধ পুরুষ অর্থনৈতিক ও সামাজিক চাপ, চাকরি হারানোর ভয়, ভাইরাস সংক্রমণ প্রভৃতি নানা কারণে হতাশাগ্রস্ত, চিন্তিত ও মানসিক চাপে রয়েছে। তাদের এ নিরাপত্তাহীনতার সব চাপ ও ক্ষোভ নারী ও শিশুর ওপর গিয়ে পড়ছে। অত্যাচারীরা নির্যাতনের জন্য লকডাউনকে কাজে লাগাচ্ছে।

জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল ইউএনএফপি’র ‘ইমপ্যাক্ট অব দ্য কভিড-১৯ প্যানডেমিক অন ফ্যামিলি প্ল্যানিং অ্যান্ড এনডিং জেন্ডার-বেজ্ড ভায়োলেন্স ফিমেল জেনিটাল মিউটিলেশন অ্যান্ড চাইল্ড ম্যারেজ’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, এ সময় নারীর স্বাভাবিক স্বাস্থ্য ব্যাহত হবে। কারণ এ সময় ১৪৪ দেশে চার কোটি ৭০ লাখ নারী ঘরে থাকায় পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হবে। এর ফলে ৭০ লাখ অনাকাক্সিক্ষত গর্ভধারণ ও অনিরাপদ গর্ভপাত বাড়বে। আর তিন কোটি ১০ লাখ নির্যাতনের ঘটনা ঘটবে। অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবীর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এ সম্পর্কে যতগুলো কার্যক্রম আছে, তা সক্রিয় রাখার ওপর জোর দেন। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘হেল্পলাইন ১০৯’ এবং পুলিশের ‘হেল্পলাইন ৯৯৯’-এ আসা নারী নির্যাতনের ঘটনাগুলোর যথাযথ তদন্ত হওয়ার বিষয়ে তিনি জোর দেন। করোনাজনিত দুর্যোগে ‘ঘরে টাকা নেই, খাদ্য নেই’এ ধরনের পরিস্থিতিতে অত্যাচারটা নারীর ওপরই আসছে। খাদ্যের নিরাপত্তাহীনতায় শিশুবিয়ে বাড়ছে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনলাইন ও টেলিকাউন্সেলিংয়ের নম্বর আরও ব্যাপকভাবে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করে এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ভার্চুয়াল কোর্ট প্রক্রিয়ার আওতাভুক্ত করে জরুরি সুরক্ষার ব্যবস্থা করা এবং অনলাইনে জিডি দায়ের প্রক্রিয়া সক্রিয় করার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের তথ্যমতে, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসে ৯৯৯ নম্বরে পারিবারিক সহিংসতার জন্য দুই হাজার ৪৩৮টি, নারী নির্যাতনের জন্য এক হাজার ৬৩৫টি, বাল্যবিয়ের জন্য এক হাজার ৫৮৪টি, ইভটিজিংয়ের জন্য ৩৬২টি এবং শিশু নির্যাতনের জন্য ৫৭টি কল এসেছে, যেগুলোর মধ্যে প্রায় সবকটির ক্ষেত্রেই উদ্ধারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করা হয়েছে।

দুঃসময়ে ঘরই নারী বা শিশুর কাছে সবচেয়ে নিরাপদ হওয়ার কথা, কিন্তু সামাজিক দূরত্বকে পুঁজি করে নারীর ওপর অত্যাচারের হার বাড়িয়ে দিয়েছে তারই পাশে থাকা পুরুষ। মানসিক, শারীরিক, যৌন ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে নারীর ওপর চলে এ নির্যাতন। আর বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে থাকা নারীর ওপর এ ধরনের নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঝুঁকি ভয়াবহভাবে বেড়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মার্চ মাসে প্রকাশিত একাধিক রিপোর্ট ও সমীক্ষা বলছে, করোনার কারণে অনেক দেশেই পারিবারিক সহিংসতার ছবি একই রকম। যুক্তরাষ্ট্রে ভিকটিমকে সহযোগিতা করতে ভিকটিমের জন্য চ্যাট সার্ভিস ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে। ফ্রান্সে পারিবারিক নির্যাতন ৩০ শতাংশ এবং রাজধানী প্যারিসে ৩৬ শতাংশ বেড়ে গেছে। ফরাসি সরকার ভিকটিমদের সরাসরি ফার্মেসিতে সাহায্য চাইতে বলেছে। ফার্মেসি পুলিশকে জানাবে। ভিকটিমকে নিরাপদে রাখার জন্য অনেক হোটেলে কম টাকায় ভিকটিমকে কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ইতালির সরকার তো নির্যাতিতদের জন্য নতুন অ্যাপ খুলেছে, যেখানে ফোন না করেও সাহায্য চাওয়া যাবে। শিশুরাও মাঝে মাঝে পরিবারের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ফোন করে। স্পেনের নারীরা ওষুধের দোকানে গিয়ে ‘মাস্ক ১৯’ বললে বোঝা যায়, তাদের সাহায্য দরকার। ব্রিটেনে জাতীয় পারিবারিক নির্যাতন-বিষয়ক হেল্পলাইন জানিয়েছে, ফোনে অভিযোগের পরিমাণ বেড়েছে ২৫ শতাংশ আর ওয়েবসাইটেও দ্বিগুণ অভিযোগ আসছে। তিউনিসিয়ায় কারফিউ জারির পর পারিবারিক নির্যাতন পাঁচ গুণ বেড়ে গেছে। ইয়েমেন, মরক্কো, মিসর, লেবানন, মালয়েশিয়া, চীনÑসব দেশের চিত্র প্রায় একই। দুনিয়াজুড়েই নারী বাইরে মহামারি আর ঘরে নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার।

পুলিশ প্রশাসন দেশে করোনার কারণে ব্যস্ত থাকলেও নারী ও শিশু নির্যাতন-সংক্রান্ত বিষয়কে অগ্রাধিকার এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে ইত্তেফাককে জানিয়েছেন পুলিশের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা। ব্র্যাক বলছে, মাস্ক এমনকি সাবানের ব্যবহারেও নারী সমান অধিকার পাচ্ছে না। ৭০ শতাংশ পুরুষ যেখানে মাস্ক ব্যবহার করছে, নারীর ক্ষেত্রে তা ৩৫ শতাংশ। ইউএনএফপি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, বাল্যবিয়ে বন্ধের চেষ্টা বিঘ্নিত হবে এ সময়ে। ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের উপপরিচালক সাবিরা নূপুর জানান, করোনাভাইরাসের বিস্তার থামলে এবং দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে হয়তো দেখা যাবে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মেয়েশিশুদের উপস্থিতি ছেলেশিশুদের চেয়ে কমে গেছে। কারণ লকডাউনের সময়ে মার্চ থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত ২১টি বাল্যবিয়ের ঘটনার তথ্য পাওয়া গেছে। দেশে সরকারি জরিপে দেখা গেছে, বিবাহিত মেয়েদের ৮৭ শতাংশ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে নিজ স্বামীর দ্বারাই। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর করা জরিপে দেখা গেছে ৮১ দশমিক ছয় শতাংশ নারী স্বামীগৃহে মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে এবং শারীরিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে ৬৪ দশমিক ছয় শতাংশ। লকডাউনের এ সময়ে এ হার হয়তো আরও বেড়েছে।

সারা পৃথিবীতে প্রচুর নারী নির্যাতিত হয়। পৃথিবীতে এমনও দেশ আছে যেখানে নারী নির্যাতনের শিকার হলেও তাদের জন্য ভালো আইনি ব্যবস্থা নেই। কিন্তু বাংলাদেশে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে কঠোর আইন রয়েছে। আমাদের দেশে নারী নির্যাতনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে এবং সরকার নারী নির্যাতন প্রতিরোধে অত্যন্ত আন্তরিক এবং অপরাধীদের শাস্তি বাস্তবায়নে অত্যন্ত কঠোর।

হাসনার জন্য কিছু করা যাবে ভেবে শিউলি খুশি হয়ে ওঠেন। শিউলি বলেন, ‘হাসনার স্বামীর মতো স্বামী যেমন আছে, ঠিক তেমনি তোমার মতো ভালো স্বামীও আছে দেশে আর বিশ্বে। আমি সত্যিই খুব সৌভাগ্যবতী তোমার মতো স্বামী পেয়েছি বলে। আজ আমি তোমার কাছ থেকে অনেক কিছু জেনেছি এবং সহযোগিতাও পেয়েছি।’

‘সহযোগিতা পাওয়াটাও তোমার অধিকার,’ বলতে বলতেই মোবাইলটা হাতে নিলেন মামুন এবং হাসনার স্বামীর ব্যাপারে আভযোগ জানিয়ে দিলেন জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে।

পিআইডি নিবন্ধ

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০