সড়ক উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের ৫০ কোটি ডলার ঋণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলের চারটি জেলা ঘিরে যশোর-ঝিনাইদহ করিডোর বরাবর সড়ক যোগাযোগ উন্নত করার একটি প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক ৫০ কোটি ডলারের ঋণ দিচ্ছে। পশ্চিমাঞ্চলের ১১০ কিলোমিটার দুই লেনের সড়ককে চার লেনের মহাসড়কে উন্নীত করার জন্য বিশ্বব্যাংকের একাধিক ধাপের যে ১৪০ কোটি ডলারের কর্মসূচি রয়েছে, এই প্রকল্প তার প্রথম ধাপ বলে গতকাল এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

এই প্রকল্প পশ্চিমাঞ্চলের ২৬০ কিলোমিটার অর্থনৈতিক করিডোর তৈরির সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তা করবে এবং এতে দুই কোটির বেশি মানুষ উপকৃত হবে। কর্মসূচির প্রথম ধাপে যশোর ও ঝিনাইদহের মধ্যে ৪৮ কিমি মহাসড়কের এবং স্থানীয় অর্থনীতিকে উৎসাহিত করতে ৬০০ কিমি গ্রামীণ সংযোগ সড়ক ও ৩২টি গ্রামীণ বাজারের উন্নয়ন হবে।

সড়কে নিরাপত্তার উন্নয়নে ধীর গতিসম্পন্ন যানবাহনের জন্য আলাদা লেন ও যানবাহনগুলোর চলাচল আলাদা করার জন্য মাঝারি সড়ক বিভাজক বসানো হবে।

বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, ‘বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল অনেক কৃষি ও প্রাকৃতিক দ্রব্য উৎপাদনে সমৃদ্ধ এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার হওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক সম্ভাবনাময়। খামারগুলোকে

বাজারের সঙ্গে ও পশ্চিমাঞ্চলের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলোকে ঢাকার সঙ্গে যুক্ত করা হলে করিডোর বরাবর বাণিজ্য, ট্রানজিট ও সরবরাহ ব্যবস্থা জোরদার করা যাবে। এর ফলে জেলাগুলোর অর্থনীতিতে উদ্দীপনা সৃষ্টির মাধ্যমে প্রকল্পটি এই অঞ্চলের সম্ভাবনার দ্বার উম্মোচন করবে।’

বিশ্বব্যাংক বলছে, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণে দেশকে সহায়তা করার জন্য ইন্টারনেট সুবিধা সহজলভ্য করতে প্রকল্পটিতে মহাসড়ক বরাবর ফাইবার অপটিক কেব্ল স্থাপন করা হবে। এর ফলে কভিড-১৯ মহামারির মতো সংকটে জরুরি সেবা ও ব্যবসা চালু রাখা সহজ হবে।

বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ পরিবহন বিশেষজ্ঞ রাজেশ রোহাতগি বলেন, ‘কভিড-১৯ মহামারির চাকরি ও আয় হারিয়ে দরিদ্ররা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে সহায়তার জন্য শ্রমঘন পুর কর্মকাণ্ডে যুক্ত করার মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে সামাজিক সুরক্ষা ও জীবিকার ব্যবস্থা করা যাবে। এমনকি মহামারি-পরবর্তী সময়েও পুর কর্মকাণ্ডে এবং গ্রামীণ সড়ক ও বাজার সংযোগের প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যাবে। এটি ভবিষ্যতে যে কোনো মহামারি বা সংকটের জন্য জরুরি প্রস্তুতির ক্ষেত্রে দেশের দুটি মূল পরিবহন সংস্থা সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগকেও সহায়তা করবে।’

স্বল্প সময়ে ও কম খরচে উৎপাদিত পণ্য বাজারে পরিবহন নিশ্চিত করার মাধ্যমে পশ্চিম অঞ্চলে কৃষি সরবরাহ ব্যবস্থাকে দক্ষ করে তুলবে এই প্রকল্প। কৃষি উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীল প্রায় ৫৭ শতাংশ জনসংখ্যার খুলনা বিভাগে প্রকল্পটি করিডোর বরাবর স্টোরেজ সুবিধা উন্নত করবে, যা কৃষকদের বর্জ্য হ্রাস, বিক্রি বৃদ্ধি ও বেশি উপার্জনে সহায়তা করবে।

সহজ শর্তে অর্থায়ন সরবরাহকারী বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (আইডিএ) এই ঋণ চার বছরের গ্রেস পিরিওডসহ ৩৪ বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। এই ঋণসহ ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংকের মোট প্রতিশ্রুত ঋণের পরিমাণ দাঁড়াল ২২৭ কোটি ডলারে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০