নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে সবগুলো সূচকের সঙ্গে দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে এক হাজার ৩৬৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ। দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে, কারণ গত সপ্তাহে ব্লক মার্কেটে লেনদেন বেড়েছে। একইসঙ্গে বাজার মূলধন বেড়েছে শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৭ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়ে তিন হাজার ৯৮৬ দশমিক ৭৪ পয়েন্টে স্থির হয়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক দুই দশমিক ৬১ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়ে ৯২২ দশমিক ১১ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএস৩০ সূচক ৯ দশমিক ১৮ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৬৯ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৩৩৯ দশমিক ৪৯ পয়েন্টে স্থির হয়। মোট ৩৬০টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৪৮টির, কমেছে ১৮টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৮১ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি ১৩টির। দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৮৩৩ কোটি ৭০ লাখ ৪৩ হাজার ৬০ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৫৬ কোটি ৮৭ লাখ ছয় হাজার ৫১৬ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ৭৭৬ কোটি ৮৩ লাখ ৩৬ হাজার ৫৪৪ হাজার টাকা বা এক হাজার ৩৬৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
গেল সপ্তাহে ডিএসইতে মোট টার্নওভার বা লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় তিন হাজার ৩৩৪ কোটি ৮১ লাখ ৭২ হাজার ২৪২ টাকা। আগের সপ্তাহে যা ছিল ২৮৪ কোটি ৩৫ লাখ ৩২ হাজার ৫৮০ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে টার্নওভার বেড়েছে তিন হাজার ৫০ কোটি ৪৬ লাখ ৩৯ হাজার ৬৬২ টাকা বা এক হাজার ৭২ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
ডিএসইতে গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার বাজার মূলধন ছিল তিন লাখ ১০ হাজার ৮৩৪ কোটি ৭৮ লাখ ১৭ হাজার ৭৫০ টাকা। শেষ কার্যদিবসে যার পরিমাণ ছিল তিন লাখ ১১ হাজার ৭৭৫ কোটি ১৯ লাখ ৭৬ হাজার ৫৮৮ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ বা ৯৪০ কোটি ৪১ লাখ ৫৮ হাজার ৮৩৮ টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইর টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে বিমা খাতের কোম্পানি প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে আট দশমিক ২৯ শতাংশ। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড় লেনদেন হয়েছে ৭৯ লাখ ৯১ হাজার ৭৫০ টাকার শেয়ার। সপ্তাহ শেষে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় তিন কোটি ১৯ লাখ ৬৭ হাজার টাকা।
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন (জিএসকে) বাংলাদেশ লিমিটেড। কোম্পানিটির শেযারদর বেড়েছে সাত দশমিক ৯৩ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন চার কোটি ৫০ লাখ ৪২ হাজার ৫০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি এক লাখ ৭০ হাজার টাকার শেয়ার।
তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে পূবালী ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংক খাতের ‘এ’ ক্যাটেগরির এ কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে সাত দশমিক ৬৯ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ১২ লাখ ৮৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৫১ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার।
এর পরের অবস্থানে ছিল যথাক্রমে এমবি ফার্মা লিমিটেড ও বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানি লিমিটেড।
ডিএসইতে টার্নওভারের দিক থেকে শীর্ষে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ৭৪ লাখ সাত হাজার ৮৮৭টি শেয়ার ৪৯ কোটি ৭০ লাখ ৯৬ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের এক দশমিক ৪৯ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর দুই দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়েছে।
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানি লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে ‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটির ৩৩ লাখ ১৯ হাজার ৪১৯টি শেয়ার ২৭ কোটি ৮০ লাখ ৭০ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের শূন্য দশমিক ৮৩ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর ছয় দশমিক ৫৪ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে সর্বশেষ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর দুই দশমিক ১৯ শতাংশ বা এক টাকা ৯০ পয়সা কমে প্রতিটি সর্বশেষ ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ৮৪ টাকা ৭০ পয়সা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৮৪ টাকা ১০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৮৭ টাকা ১০ পয়সায় হাতবদল হয়। দিনজুড়ে কোম্পানিটির আট লাখ ৪২ হাজার ১৩৯টি শেয়ার মোট এক হাজার ৮৬৯ বার হাতবদল হয়। যার বাজারদর সাত কোটি ১৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা। গত এক বছরে কোম্পানির শেয়ারদর ৬৫ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ১৩৫ টাকা ৪০ পয়সায় ওঠানামা করে।