‘অবহেলায়’ নারী ক্রিকেট কোচের মৃত্যুর অভিযোগ

প্রতিনিধি, যশোর: চিকিৎসকের অবহেলায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন যশোরের নারী ক্রিকেটের প্রথম কোচ সুরাইয়া জান্নাতি তিন্নি (৩০)। পরিবার থেকে এমন অভিযোগই আনা হয়েছে। শুক্রবার (৩১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে তিনি শহরের ল্যাবজোন হসপিটালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে তার সিজারিয়ান অপারশেন হয়।

সুরাইয়া জান্নাতি তিন্নি যশোর শহরের চুড়িপট্টি এলাকার মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন এ্যানির স্ত্রী।

তিন্নির চাচাতো ভাই যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা আফিকুর রহমান অয়ন বলেন, ২৯ জুলাই ল্যাবজোন হসপিটালে ডা. নিলুফার ইসলাম এমিলি সিজারিয়ান অপারেশ করে তিন্নির সন্তান প্রসব করান। এরপর সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। পরিবারের লোকজন রোগীর অবস্থা সম্পর্কে চিকিৎসককে অবহিত করেন। তিনি বিষয়টি গুরুত্ব দেননি। উল্টো রোগীর স্বজনদের উপর বিরক্ত হন। ৩১ জুলাই সকালে ডা. এমিলি হসপিটালে আসেন।

তিনি দূর থেকে রোগী দেখেছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও রোগীর অবস্থার অবনিত ও তাদের সীমাবদ্ধতার কথা স্বজনদের জানাননি। সন্ধ্যার দিকে রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে তড়িঘড়ি করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন। শ্বাসকষ্ট নিয়ে জেনারেল হাসপাতালে গেলে চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা বাঁচাতে পারেননি। চিকিৎসকরা ওই সময় জানান আগেই আইসিইউতে নিতে পারলে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হতো।

তিনি আরও বলেন, বেসরকারি ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের অবহেলায় তার বোনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও দাবি করেন তিনি।

তবে অভিযোগের ব্যাপারে ডা. নিলুফার ইসলাম এমিলি বলেন, রোগীকে বাঁচানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। আমার আন্তরিকতার কোনো অভাব ছিল না। আইসিইউতে নেওয়ার জন্য রোগীকে খুলনায় রেফার্ড করেছিলাম। স্বজনরা তাকে সেখানে না নিয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালে কেন নিলেন? রোগীর স্বজনরা ডাক্তারের বিরুদ্ধে বলছেন, স্বজনদের বিরুদ্ধেও তো অভিযোগ থাকতে পারে। তারা তো ডাক্তারের নির্দেশনা মানেননি।

ডা. এমিলি আরও বলেন, ২৯ জুলাই রোগীর সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। ওইদিন রোগীর রক্তচাপ বেশি ছিল। মেডিকেল অফিসারকে বলে কিছু ওষুধ দিই। রক্তচাপ কম হলে ওইদিন দুপুর আড়াইটার দিকে সিজারিয়ান অপারেশন করি। মূলত রোগীর প্রি-অ্যাকলেমশিয়া ছিল। অপারেশন ছাড়া উপায় ছিল না।

সিজারের পর প্রসূতি ও বাচ্চা দু’জনই ভালো ছিল। সব সময় নিজে রোগীর খোঁজ-খবর নিয়েছি। শুক্রবারও (৩১ জুলাই) হাসপাতালে গিয়ে আমার চেম্বারে ঢোকার আগে রোগীকে দেখতে গিয়েছি। রোগীর পাশে ১০-১৫ মিনিট বসেছি। শুনেছি কেমন আছে।

রোগী বলেছে তেমন সমস্যা নেই। সন্ধ্যায় ফোনে হাসপাতাল থেকে জানানো হয় রোগীর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। মেডিকেল অফিসারকে বললাম খুলনায় আইসিইউতে রেফার্ড করে দাও। স্বজনদের জানিয়ে দেওয়া হয়। তারা আইসিইউতে না নিয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়েছেন। সেখানে তার মৃত্যু হয়েছে। খবর শুনে খুব কষ্ট পেয়েছি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০