সা ত কা হ ন: একজন হিমু

মীর মাইনুল ইসলাম: চার্লি চ্যাপলিন তার কাছে এক বিস্ময়ের নাম। কীভাবে একজন মানুষ কোনো কথা না বলে মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারে, দুঃখ-কষ্ট ভুলিয়ে দিতে পারে, তা ছিল তার চিন্তার বাইরে। চ্যাপলিনকে অনুসরণ করে তিনিও নেমে পড়েন একই পথে। কেননা, মানুষের মুখের হাসির চেয়ে সুন্দর আর কী আছে?

এতক্ষণ মোহাম্মদ মোহাইমিনুল ইসলাম হিমুর কথা বলা হচ্ছিল। মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের চতুর্থ বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্র হিমু।

বাড়ি চট্টগ্রামের পতেঙ্গায়। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ালেখা করেছেন চট্টগ্রামের বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী স্কুল অ্যান্ড কলেজে। বাবা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের কাল্পনিক চরিত্র হিমুর সঙ্গে তার কিছু মিল আছে।

কমেডি জগতে পা রাখেন ২০১১ সালে। সেই সময় ভারতের জি বাংলায় প্রচারিত ‘মিরাক্কেল আক্কেল চ্যালেঞ্জার ৬’-এ সুযোগ পান। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা ও ভিসা জটিলতার কারণে মূল পর্বে অংশ নিতে পারেননি। বর্তমানে বাংলাদেশের জনপ্রিয় কমেডি রিয়েলিটি শো ‘হা-শো সিজন ৪’ এর অন্যতম প্রতিযোগী হিমু। এনটিভিতে প্রচারিত প্রতিযোগিতাটির সেমিফাইনালিস্ট তিনি।

কমেডির বাইরে একজন বিতার্কিক হিসেবে সুনাম রয়েছে হিমুর। তার জন্যই ‘জাতীয় তথ্য প্রযুক্তি বিতর্ক উৎসব ২০১৫-১৬’ ময়মনসিংহ অঞ্চলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে মাভাবিপ্রবি ডিবেটিং সোসাইটি। এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান ক্লাবগুলোর মধ্যে অন্যতম সেরা সাফল্য এটি। উৎসবে সেরা বিতার্কিক নির্বাচিত হন হিমু। বর্তমানে তিনি মাভাবিপ্রবি ডিবেটিং সোসাইটির সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয়, আন্তঃবিভাগ পর্যায়ের বিতর্কে সব সময় তার দল বিজয়ী না হলেও তিনি সেরা বক্তা নির্বাচিত হয়েছেন কয়েকটি প্রতিযোগিতায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটিকে আরও ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে কাজ করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকানোর আগেই বেশ কিছু তুখোড় বিতার্কিক তৈরি করতে চান। কথা বলতে পারার সহজাত গুণের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তার সরব উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। উপস্থাপনা, বিতর্ক ও অভিনয়ের পাশাপাশি নাটকের স্ক্রিপ্ট লেখায়ও পারদর্শী হিমু। এ বিষয়ে হিমু বলেন, ‘শখের বশে মূলধারার চলচ্চিত্র ও শর্ট ফিল্মের স্ক্রিনপ্লে ও স্ক্রিপ্ট রাইটিংয়ের ওপর কোর্স করেছিলাম। তখন এর ওপর আমার বেশ আগ্রহ তৈরি হয়’।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে হিমু জানান, ‘আমি সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে মিশতে চাই। তাদের ভালোবাসা পেতে চাই। মিডিয়া জগৎ নিয়ে আমার আগ্রহ রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের সিনেমা নিয়ে কাজ করতে চাই’।

শিক্ষার্থী