নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পর্যটন বিকাশ ও বিদেশি পর্যটক বাড়াতে পার্শ্ববর্তী ভারত, নেপাল ও ভুটানের নাগরিকদের বাংলাদেশে আসার ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে। এজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করবে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। গতকাল পর্যটন নিয়ে নাটোর জেলার সঙ্গে আয়োজিত অনলাইন কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য এমন ইঙ্গিত দেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে ঘুরতে আসা পর্যটকদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ পার্শ্ববর্তী তিন দেশের মানুষ। তারা দেশের ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় স্থাপনাগুলো পর্যটনে আসেন। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল ও ভুটানের নাগরিকদের জন্য পর্যটক ভিসা সহজীকরণের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতে সংশ্লিষ্ট দেশ থেকে পর্যটক আগমন বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, জনসচেতনতা তৈরি না হলে পর্যটনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি ব্যাহত হবে। পর্যটনের সঙ্গে স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসন ও গণমাধ্যম কর্মীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সবাইকে এ ব্যাপারে গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করার অনুরোধ করছি। পর্যটন সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরির জন্য পাঠ্যপুস্তকে পর্যটনবিষয়ক রচনা অন্তর্ভুক্ত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কেও অনুরোধ জানানো হবে।
কর্মশালায় প্রতিমন্ত্রী স্থানীয় পর্যায়ে যে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে পর্যটনের কথা বিবেচনায় রেখে কাজ করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে যে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে পর্যটনকে বিবেচনায় রাখতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করবে। পর্যটন গন্তব্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব অপ্রশস্ত রাস্তা প্রশস্ত করার পরিকল্পনা প্রণয়ন করে দ্রুততার সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত ঐতিহাসিক ও প্রতœতাত্ত্বিক পুরাকীর্তি ও মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থানসহ সব পর্যটন আকর্ষণ সংরক্ষণে স্থানীয় প্রশাসনকে গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে। কোনো স্থানীয় টাউট ও ভূমিদস্যু যাতে এসব গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও স্থাপনার কোনো ক্ষতি করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যেসব স্থানে পর্যটন আকর্ষণসমৃদ্ধ ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো বেদখল হয়েছে, তা পুনরুদ্ধারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যারা ঐতিহাসিক স্থাপনা ও পর্যটন আকর্ষণের ক্ষতি করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
মাহবুব আলী বলেন, করোনার কারণে বর্তমানে মানুষ ঘরে অবস্থান করছে। করোনা-পরবর্তী সময়ে দেশের পর্যটন কেন্দ্রে ভিড় বাড়বে। সেই সময়ের জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। পর্যটকরা যেন সব পর্যটন গন্তব্যে সঠিক ও উপযুক্ত পরিবেশ পায় স্থানীয় প্রশাসনকে তা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের পরিচালক আবু তাহের মুহাম্মদ জাবেরের সঞ্চালনায় ও নাটোর জেলার জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজের সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল, নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য রত্না আহমেদ ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাবেদ আহমেদ প্রমুখ।