প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল: করোনার কারণে চাকরি হারিয়েছিলেন আরিফুল ইসলাম ও আল আমিন নামের দুই চাচাতো ভাই। বাড়ি এসে কী করবেন সেটি ভেবে না পেয়ে একসময় আরেক চাচা শাহ জামালকে নিয়ে তিনজনে মিলে একটি হাঁসের খামার করার সিদ্ধান্ত নেন। তিন লাখ টাকা ধারদেনা করে খাকি ক্যাম্বেল জাতের ১১০০ হাঁস নিয়ে শুরু করেন খামারটি।
ভালোভাবেই চলছিল তাদের খামার। কিন্তু গত সোমবার সকাল থেকে একের পর এক মারা যেতে থাকে খামারের হাঁসগুলো। সন্ধ্যা পর্যন্ত এক হাজার ৫০টি হাঁস মারা যায়। খামারিদের অভিযোগ, শত্রুতা করে কেউ খাবারে বিষ মিশিয়ে হাঁসগুলো মেরে ফেলেছে। নিষ্ঠুরতম এ ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে।
এদিকে ঘটনার পর গতকাল বিকালে মধুপুর থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
খামারি আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘হাঁসগুলোর বয়স ছিল ৫১ দিন। রোববার রাতেও সেগুলো সুস্থ ছিল। কিন্তু সোমবার সকাল থেকেই হাঁসগুলো অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে একের পর এক মারা যেতে থাকে। বিকাল পর্যন্ত খামারের এক হাজার ৫০টি হাঁস মারা যায়।’
তিনি বলেন, দুপুরে কয়েকটি মৃত ও জীবিত হাঁস উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্মকর্তারা বিষের কারণে হাঁসগুলোর মারা যাওয়ার কথা বলেন। তারপরও তারা সেটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য হাঁসগুলো ঢাকায় পাঠিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগে আমরা দুই চাচাতো ভাই ঢাকায় চাকরি করতাম। কিন্তু করোনার শুরুতে দুজনই চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়ি। পরে বাড়ি এসে তিন লাখ টাকা ধার করে এ খামার গড়ে তুলি। জানি না আমাদের সঙ্গে কার এমন শত্রুতা থাকতে পারে। এ বিষয়ে আমরা মধুপুর থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেছি।’
মধুপুর উপজেলা ভ্যাটেরিনারি ফিল্ড এসিস্ট্যান্ড (বিএফএ) ওবাইদুল্লাহ লিটন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে এত পরিমাণ হাঁসের মৃত্যুকে বিষক্রিয়ায় মৃত্যু বলেই মনে করছি। মৃত হাঁস চিরে সেটির লক্ষণও পাওয়া গেছে। এছাড়া টক্সিন সমস্যার জন্যও এমন হতে পারে। ঢাকা থেকে প্রতিবেদন আসার পর এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
মধুপুর থানার ওসি (তদন্ত) ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘খামারিদের অভিযোগ পাওয়ার পরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নেওয়া হবে।’