নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ২৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। তবে বাজার মূলধন বেড়েছে দুই দশমিক ৭৪ শতাংশ। সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭৯ দশমিক ১১ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৬৫ শতাংশ বেড়ে চার হাজার ৮৭৩ দশমিক শূন্য সাত পয়েন্টে স্থির হয়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক ৩০ দশমিক ২৭ পয়েন্ট বা দুই দশমিক ৭৫ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ১৩০ দশমিক ৬১ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএস৩০ সূচক ৪৩ দশমিক শূন্য তিন পয়েন্ট বা দুই দশমিক ৬১ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৬৯০ দশমিক ১০ পয়েন্টে স্থির হয়। মোট ৩৬২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৮১টির, কমেছে ১৫০টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৯ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি দুটির। দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৮২৮ কোটি ৮৪ লাখ ৪২ হাজার ৬৭৭ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয় এক হাজার ১৭৯ কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার ৮০৯ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ২৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
গেল সপ্তাহে ডিএসইতে মোট টার্নওভার বা লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় চার হাজার ১৪৪ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৩৮৪ টাকা। আগের সপ্তাহে যা ছিল পাঁচ হাজার ৮৯৮ কোটি ৯৪ হাজার ৪৬ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে টার্নওভার কমেছে ২৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
ডিএসইতে গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার বাজার মূলধন ছিল তিন লাখ ৫৯ হাজার ৭৮৯ কোটি ৭৪ লাখ ৪৪ হাজার ৫২৯ টাকা। শেষ কার্যদিবসে যার পরিমাণ ছিল তিন লাখ ৬৯ হাজার ৬৫৬ কোটি ১৯ লাখ ৬০ হাজার ৪৫৩ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে দুই দশমিক ৭৪ শতাংশ।
গত সপ্তাহে ডিএসইর টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে বিবিধ খাতের খাতের কোম্পানি মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড গত সপ্তাহে দর বৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৩১ দশমিক শূন্য দুই শতাংশ। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড় লেনদেন হয়েছে তিন কোটি ২৭ লাখ ৫৪ হাজার ২০০ টাকার শেয়ার। সপ্তাহ শেষে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬ কোটি ৩৭ লাখ ৭১ হাজার টাকা।
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড। ফান্ডটির ইউনিট দর বেড়েছে ২৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে ফান্ডটির প্রতিদিন এক কোটি ৭১ লাখ ৬৭ হাজার ২০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে আট কোটি ৫৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকার শেয়ার।
তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে কুইন সাউথ টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড। ‘এ’ ক্যাটেগরির এ কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ২৯ দশমিক ২৩ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন চার কোটি ৪৫ লাখ ৬৯ হাজার ৮০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ২৮ লাখ ৪৯ হাজার টাকার শেয়ার।
এর পরের অবস্থানে ছিল যথাক্রমে এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড ও ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস লিমিটেড।
এ ক্যাটেগরির এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ডের শেয়ারদর বেড়েছে ২৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন এক কোটি ৫১ লাখ ৬২ হাজার ৬০০ টাকার ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে সাত কোটি ৫৮ লাখ ১৩ হাজার টাকার ইউনিট।
আর ‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানি ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ২২ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন এক কোটি ৭৭ লাখ ৬৯ হাজার ৮০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে আট কোটি ৮৮ লাখ ৪৯ হাজার টাকার শেয়ার।
এর পরের অবস্থানে থাকা বস্ত্র খাতের ‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানি দেশ গার্মেন্ট লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ২০ দশমিক ৮০ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ৬৬ লাখ ৪৭ হাজার ২০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে তিন কোটি ৩২ লাখ ৩৬ হাজার টাকার শেয়ার।
বিমা খাতের ‘এ’ ক্যাটেগরির ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ১৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ছয় কোটি দুই লাখ ৭১ হাজার ২০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৩০ কোটি ১৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকার শেয়ার।
‘এ’ ক্যাটেগরির নর্দান জুট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ১৮ দশমিক ১৩ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন তিন কোটি ৬৯ লাখ ১৬ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার টাকার শেয়ার।
আর তালিকার নবম অবস্থানে থাকা ‘এ’ ক্যাটেগরির সিএপিএম বিডিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ানের ইউনিটদর বেড়েছে ১৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে ফান্ডটির প্রতিদিন ১৯ লাখ ২৬ হাজার ২০০ টাকার ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৯৬ লাখ ৩১ হাজার টাকার ইউনিট।
তালিকার সর্বশেষ অবস্থানে থাকা ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ১৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ১৬ কোটি ৬০ লাখ ২৬ হাজার ৬০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৮৩ কোটি এক লাখ ৩৩ হাজার টাকার শেয়ার। সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর শূন্য দশমিক ৫৫ শতাংশ বা ছয় টাকা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ এক হাজার ৯২ টাকায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল এক হাজার ৯৪ টাকা ১০ পয়সা।
ডিএসইতে টার্নওভারের দিক থেকে শীর্ষে ছিল বিবিধ খাতের কোম্পানি বাংলাদেশ এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট কোম্পানি (বেক্সিমকো) লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ৯ কোটি ৯৩ লাখ সাত হাজার ৬৪টি শেয়ার ২৫৮ কোটি আট লাখ ৭৮ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের ছয় দশমিক ২৩ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর শূন্য দশমিক ৭৬ শতাংশ কমেছে।
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে ‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটির এক কোটি ৯২ লাখ ৮৪ হাজার ৬৬৬টি শেয়ার ২১২ কোটি ৬০ লাখ ৯১ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের পাঁচ দশমিক ১৩ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর তিন দশমিক ১৩ শতাংশ কমেছে।