ঠাকুরগাঁওয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে পার্চিং পদ্ধতিতে ধান চাষ

শামসুল আলম, ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁও জেলায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পার্চিং পদ্ধতিতে আমন ধান চাষ। আবাদকৃত জমির ধানক্ষেতের ক্ষতিকর পোকামাকড়, কীটপতঙ্গ দমনের প্রাকৃতিক পদ্ধতির নাম হলো পার্চিং। এ পদ্ধতিতে কৃষক কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে মাজরা পোকা, পাতা মোড়ানো পোকাসহ ক্ষতিকর পোকা দমন করছেন।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় আমন আবাদের  লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার হেক্টর। আবাদ হয়েছে এক লাখ ৩৭ হাজার ৮৫ হেক্টর। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় আমন আবাদ হয়েছে ৫১ হাজার ৫০৫ হেক্টর। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায়  আবাদ হয়েছে ২৩ হাজার ১৮০ হেক্টর জমিতে। রানীসংকৈল উপজেলায় আবাদ হয়েছে ২১ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে। এদিকে পীরগঞ্জ উপজেলায় আবাদ হয়েছে ২৪ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে। হরিপুর উপজেলায় আবাদ হয়েছে ১৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে।

তবে কৃষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, বর্তমানে ঠাকুরগাঁয়ে আমন ধানক্ষেতের অবস্থা ভালো নয়। আষাঢ় ও শ্রাবণে প্রচুর বৃষ্টি হলেও ভাদ্রে বৃষ্টি নেই বললেই চলে। এতে ধানক্ষেতে শুকিয়ে মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। বিষ স্প্রে করেও তেমন কাজ হচ্ছে না। এ অবস্থায় পার্চিং পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছেন কৃষক। 

উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা বলেছেন, আবাদকৃত ধানি জমিতে বাঁশের কঞ্চি, গাছের ডাল, লাকড়ি গাছ, ধইঞ্চা পুঁতে দেওয়ার নামই পার্চিং। আবাদকৃত ফসলি জমিতে পাখি বসার ব্যবস্থা করে দিলে ক্ষতিকারক পোকা, পোকার মথ, বাচ্চা পোকার ডিম খেয়ে তা দমন করে। ফসলের এ পোকা দমনের পদ্ধতি পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলাসহ অন্যান্য উপজেলার শতভাগ জমি পার্চিংয়ের আওতায় আনার চেষ্টা চলেছে।

সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চলতি মৌসুমে রোপা আমন জমিতে স্থানীয় কৃষকরা বাঁশের কঞ্চি, গাছের ডাল, ধইঞ্চা পুঁতে দিয়েছেন। এসব পার্চিংয়ে শালিক, চড়ুই ফিঙে, কাকসহ বিভিন্ন পাখি বসে থাকতে দেখা যায়।

ঠাকুরগাঁও সদরের ভেলাজান গ্রামের কৃষক খাদেমুল ইসলাম বলেন, ‘এবার ১০ বিঘা জমিতে ধান আবাদ করছি। ধানি জমিতে বাঁশের কঞ্চি, গাছের ডাল, লাকড়ি গাছ, ধইঞ্চা পুঁতে দিয়েছি। খেতে পাখি বসায় তেমন কীটনাশক স্প্রে করতে হয়নি।’

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আফতাব হোসেন বলেন, ‘ধানক্ষেতে ক্ষতিকর পোকা দমনে পার্চিং একটি খুব ভালো ও কার্যকর পদ্ধতি। এ পদ্ধতি ব্যবহারে কীটনাশকের ব্যবহার কমায় কৃষকের উৎপাদন খরচও কমবে। এর জন্য কৃষকদের এ পদ্ধতি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০