নিজস্ব প্রতিবেদক:‘আমি বলব না আমি সব জানি এবং আমাদের কোনো ভুল নেই। তবে দেশের প্রচলিত আইন ও নির্দেশনা মেনেই বিজনেস করছি এবং ভবিষ্যতে কোনো আইন ও নির্দেশনা এলেও আপনাদের পরামর্শ অনুযায়ী তা মেনে চলব।’ গতকাল বিকালে এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলন ই-ভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল এসব কথা বলেন।
রাসেল বলেন, ‘ই-ভ্যালির কোনো সমস্যা হবে না এবং ই-ভ্যালি কোনো ধরনের সংকটে পড়বে না বলে আমরা বিশ্বাস করি। বিজনেস মডেলের স্ট্যাবিলিটির দিক থেকে ই-ভ্যালি যথেষ্ট স্ট্রং।’
সম্প্র্রতি ই-ভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী (সিইও) মো. রাসেলের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এ পরিস্থিতিতে ই-ভ্যালি কোনো ধরনের সমস্যায় পড়বে না বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সিইও।
ই-ভ্যালির ব্যবসায়িক কৌশল নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর ই-ভ্যালির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমের তথ্য চেয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাইবার টিমগুলোও প্রতিষ্ঠানটির কাজকর্ম মনিটরিং করছে। এর প্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আসেন ই-ভ্যালির সিইও রাসেল। সংবাদ সম্মেলনে তিনি ই-ভ্যালিকে ‘নাম্বার ওয়ান’ হিসেবে দাবি করেন।
রাসেল বলেন, ‘ই-ভ্যালির ব্যবসার ভালো-মন্দ দুটি দিকই গণমাধ্যমে প্রকাশিত হবে এবং গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমাদের উন্নয়নের যে সুযোগটা থাকবে, সেটা আমরা সব সময় করে যাব।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ব্যবসায় আসার আগে আমি যে সব জেনে এসেছি কিংবা আমি সব জানি, বাংলাদেশের সব আইনকানুন আমার মুখস্থ বা আমি কোনো ভুল করতে পারি না, এটা আমার কখনোই মনে হয়নি। একটা বিষয় আমি জানি, ব্যবসা করতে গেলে অন্য প্রসেসে (প্রক্রিয়া) অনেক কিছু শিখতে হবে।’
রাসেল বলেন, ‘আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল অফার দিয়ে প্রচুর ক্রেতা-বিক্রেতা আনা। এ অফারগুলো নিয়েই এখন আমরা সমালোচনার মুখে পড়েছি কিছু ব্যক্তির কাছে। যারা হয়তো আমাদের অফারগুলোর ভুল ব্যাখ্যা করছেন। কারণ আমরা নির্দিষ্ট কিছু-সংখ্যক পণ্যের ওপর অফার করি এবং সেটা খুবই সামান্য। যে ১৫০ শতাংশ ক্যাশব্যাক অফারের কথা বলা হচ্ছে, সে দেড়শ শতাংশের মার্জিন আমরা কতটুকু পেয়েছিলাম বা সেই প্রডাক্টটা (পণ্য) কোথা থেকে আসছে, এ বিষয়টি অনেকে স্কিপ করে যান।’
তিনি বলেন, ‘ওই ১৫০ শতাংশের অ্যাড দেখেই হয়তো কেউ আমাদের ব্যবসা সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত করতে চান। আমাদের ব্যবসা বাধাগ্রস্ত করলে কারও যদি উপকার হয়, সে হয়তো এটার ভুল ব্যবহার করতে পারে অথবা আমাদের কমিউনিকেশনের গ্যাপ থাকতে পারে। আমরা জানাতে চাই, আমাদের সব আইটেমে ১৫০ শতাংশ অফার এটা মোটেও সত্যি নয়। আমাদের ৯০ শতাংশ পণ্যের কোনো অফার নেই।’
মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ ক্ষতিয়ে দেখতে বিএফআইইউ থেকে ব্যাংক হিসাব জব্দ করায় ই-ভ্যালির গ্রাহকদের টাকা ফেরত পাওয়া ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে রাসেল বলেন, ‘৩০ দিনের জন্য ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। আশা করি ৩০ দিন লাগবে না। ইতোমধ্যে সব জায়গা থেকে তথ্য দেওয়া হয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের কোনো প্রমাণ পাওয়া যাবে না বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
ই-ভ্যালি গ্রাহককে বিক্রেতা টাকা না দিলে তারা কোথায় যাবে? এমন এক প্রশ্নের উত্তরে ই-ভ্যালির সিইও বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণ সংস্থা থেকে এ ধরনের কোনো গাইডলাইন নেই। সুতরাং এ বিষয়ে আমি কোনো উত্তর দিতে পারছি না। তবে আমিও চাই এ বিষয়ে একটা গাইডলাইন থাকুক।’