প্রতিনিধি, যশোর: যশোরে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। একের পর এক অভিযান চললেও বন্ধ হচ্ছে না এর ব্যবহার। শহরের বড়বাজার এলাকার গোহাটা রোড, হাটখোলা রোড, হাটচান্নি ও আলুপট্টির বিভিন্ন দোকানে পাইকারিভাবে বিক্রি হচ্ছে পলিথিনের শপিং ব্যাগ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভোক্তাদের চাহিদার কারণে এ ব্যবসা চালিয়ে যেতে হচ্ছে। আর জেলা প্রশাসনের বক্তব্য, নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহারের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে, তবে সবার আগে মানুষের মধ্যে সচেতনতা দরকার। গত ২৭ আগস্ট সর্বশেষ যশোর বড়বাজার পাইকারি মার্কেটে নিষিদ্ধ পলিথিন বিক্রির বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।
জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজি আতিকুর রহমান এদিন নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন জব্দ ও জরিমানা করেন। একই সঙ্গে পরে পলিথিন ব্যবহারের ব্যাপারে সতর্ক করা হয় এবং পরিবেশবান্ধব কাগজের ব্যাগ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে জনস্বার্থে লিফলেট বিতরণ করা হয়।
তবে এর আগেও অসংখ্যবার শহরের বড়বাজার এলাকার গোহাটা রোড, হাটখোলা রোড, হাটচান্নি ও আলুপট্টির বিভিন্ন পাইকারি মার্কেটে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন বিক্রির অপরাধে জব্দ, বিনষ্ট ও জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা অধিক লাভের আশায় পরিবেশদূষণকারী পলিথিনের ব্যবসা বন্ধ করেননি।
সূত্র জানায়, এসব পাইকারি ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটা ধারণা জন্মেছে ভ্রাম্যমাণ আদালতে যে অঙ্কের জরিমানা বা মালামাল জব্দ করা হয়, তা আবার ব্যবসা করে অল্প কয়েক দিনেই পুষিয়ে নেওয়া যায়। এ কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা এ ব্যবসা বন্ধ করেন না।
যশোর বড়বাজারে হাতেগোনা কয়েকজন নিষিদ্ধ পলিথিনের পাইকারি ব্যবসা পরিচালনা করেন।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোÑবড়বাজার আলুপট্টির লিটন স্টোরের স্বত্বাধিকারী লিটন সাহা, বড়বাজার গোহাটা রোডের মা শীতলা ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারী প্রদীপ পাল, বড়বাজার গোহাটা রোডের কমল স্টোরের স্বত্বাধিকারী কমল পাল ও বড়বাজার গোহাটা রোডের বিপুল স্টোরের স্বত্বাধিকারী বিপুল পাল। এছাড়া আরও ছোট ছোট বেশ কিছু ব্যবসায়ী রয়েছেন, যারা এ অবৈধ ব্যবসায়ের সঙ্গে যুক্ত বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে যশোর বড়বাজারের পলিথিন ব্যাগের অন্যতম বড় পাইকারি ব্যবসায়ী লিটন স্টোরের স্বত্বাধিকারী লিটন সাহা বলেন, ‘ঢাকা থেকে চালান আসা বন্ধ হলে আমরাও এ ব্যবসা বন্ধ করে দেব।’ তিনি আরও বলেন, ‘নিষিদ্ধ ঘোষিত জেনেও ভোক্তাদের চাহিদার কারণে আমরা পলিথিন ব্যাগ বিক্রি করছি।’
এ ব্যাপারে যশোর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কামরুজ্জামান সরকার বলেন, ‘বাজারে এ ধরনের অবৈধ ব্যবসার বিরুদ্ধে অভিযান চলছে এবং আরও চলবে। তাছাড়া আমরা জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য লিফলেটও বিতরণ করছি।
যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান বলেন, ‘নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন ব্যাগের বিক্রির বিরুদ্ধে আমরা হাল ছাড়িনি। আমরা এর একটা সমাধান করে ছাড়ব। আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অব্যাহত থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা হলো পরিবেশ দূষণের বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা থাকা দরকার।’