সমতা লেদারের কারখানা বন্ধ: উদ্বিগ্ন বিনিয়োগকারীরা শেয়ারদর কমার আশঙ্কা

 

 নাজমুল ইসলাম ফারুক: রাজধানীর হাজারীবাগের ট্যানারি কারখানাগুলোতে গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে গত শনিবার। অন্যদিকে সাভারে চামড়া শিল্পনগরীতে এখনও গ্যাস সংযোগ মেলেনি। ফলে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ‘সমতা লেদার কমপ্লেক্স লিমিটেড’-এর। এতে কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

তথ্যমতে, দীর্ঘদিন ধরে হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি কারখানা ঢাকা জেলার সাভার চামড়া শিল্পনগরীতে স্থানান্তরের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে চাপ অব্যাহত ছিল। এর ধারাবাহিকতায় সাভার চামড়া শিল্পনগরীতে কিছু মেশিন স্থাপন করেছে সমতা লেদার কমপ্লেক্স। কিন্তু সেখানে গ্যাস সংযোগ না পাওয়ায় উৎপাদনে যেতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে আদালতের নির্দেশে হাজারীবাগে অবস্থিত ট্যানারি কারখানার গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এর মধ্যে সমতা লেদারও রয়েছে। ফলে হাজারীবাগের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে কোম্পানিটির। শুধু উৎপাদনই নয়, গ্যাস-বিদ্যুৎ না থাকায় অফিসও চালু করতে পারছে না সমতা লেদার। টেলিফোন সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এতে উৎপাদন বন্ধের পাশাপাশি অফিসও বন্ধ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। ফলে বিপাকে পড়েছে সমতা লেদার।

সমতা লেদার কমপ্লেক্স লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক মিজানুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, ‘সাভারের চামড়া শিল্পনগরীতে এখনও গ্যাস সংযোগ পাইনি। সংযোগ পাওয়ার পর সেখানে উৎপাদন শুরু করতে চেয়েছিলাম। বর্তমানে হাজারীবাগেও সব ধরনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এমনকি অফিসের কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা কঠিন পরিস্থিতির শিকার।

তবে তিনি আশা করছেন, আদালতের নির্দেশে অচিরেই সাভারে গ্যাস সংযোগ দেবে সরকার। আর তাতে উৎপাদন শুরু করা সম্ভব বলে মনে করছেন তিনি। তাছাড়া অন্ততপক্ষে অফিস চালু রাখার জন্য হলেও হাজারীবাগে বিদ্যুৎ সংযোগের দাবি জানান তিনি।

এদিকে উৎপাদন বন্ধ হওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা। উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এর আগেও কোম্পানিটি একবার ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেটে (ওটিসি) ছিল। পরবর্তী সময়ে উৎপাদন শুরু করে মূল মার্কেটে ফিরে আসে। আর এ মুহূর্তে কোম্পানির শেয়ার ধরে রাখবেন, না কি বিক্রি করে দেবেন এমন দোদুল্যমান অবস্থায় রয়েছেন অনেক বিনিয়োগকারী।

রয়্যাল ক্যাপিটাল লিমিটেড কার্যালয়ে আলাপকালে বিনিয়োগকারী আনিসুজ্জামান বলেন, ‘কোম্পানিটির বেশকিছু শেয়ার গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে কিনেছি। চামড়া কারখানাগুলোর গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার খবর শোনার পর কিছু শেয়ার বিক্রি করে দিই। নামমাত্র কয়েকটি শেয়ার এখন হাতে রয়েছে।’

‘যদি দর কমে যায়’ সে উদ্বেগেই শেয়ারগুলো ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

লেনদেন বিশ্লেষণে দেখা যায়, গতকাল সোমবার কোম্পানির শেয়ারদর আগের দিনের চেয়ে এক দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ কমেছে। সর্বশেষ কোম্পানির শেয়ার ২৭ টাকা ৩০ পয়সায় বেচাকেনা হয়েছে। গত এক বছরে কোম্পানির শেয়ারদর সর্বনি¤œ ২২ টাকা ৯০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৩৭ টাকা ২০ পয়সায় বেচাকেনা হয়েছে। কোম্পানির রিজার্ভের পরিমাণ চার কোটি ৯২ লাখ টাকা।

পুঁজিবাজারে ১৯৯৮ সালে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির মোট শেয়ারসংখ্যা এক কোটি তিন লাখ ২০ হাজার। কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১০ কোটি ৩২ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৫০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩১ দশমিক ৪২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০