নিজস্ব প্রতিবেদক:বাচ্চাদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মতভাবে পরিবেশিত খাবারের ব্যবস্থাপনা দেখতে কর্মকর্তাদের বিদেশে পাঠানোর প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন। যেকোনো প্রকল্পে দেশে-বিদেশে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের প্রভিশন রয়েছে বলে জানিয়ে সচিব আরও জানান, স্কুল ফিডিং পলিসির আওতায় প্রস্তাবিত প্রকল্পে বিদেশে প্রশিক্ষণে যে ব্যয় হবে তা অপচয় নয়, বরং কর্মকর্তাদের কর্মদক্ষতা বাড়াবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো ডিপিপিতে সারা দেশে মাঠপর্যায়ে প্রায় এক হাজার কর্মকর্তাকে বিদেশে প্রশিক্ষণের প্রস্তাব করা হয়। ‘খিচুড়ি রান্না শিখতে এক হাজার কর্মকর্তাকে বিদেশে পাঠানোর প্রস্তাব’ শীর্ষক এ খবরে বেশ সমালোচনা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে গতকাল সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন আকরাম-আল-হোসেন।
তিনি বলেন, মন্ত্রিসভায় স্কুল ফিডিং পলিসি অনুমোদিত হয়েছে। এ পলিসির ভিত্তিতে ১৯ হাজার ২৯৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে দাখিল করেছি। বর্তমানে প্রকল্পটি ১০৪টি উপজেলায় রয়েছে, সেটি ৩১ ডিসেম্বর শেষ হবে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে পর্যায়ক্রমে ২০২৩ সালের মধ্যে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল চালু করা হবে। সেই নির্বাচনী ইশতেহারকে সামনে রেখে আমরা ২০২৩ সাল পর্যন্ত একটা প্রকল্প প্রণয়ন করে দাখিল করেছি।
এ প্রকল্পে দুটি বিষয় আছে বলে জানিয়ে সচিব বলেন, বাচ্চাদের আমরা দুপুরে খাবার দেব। খাবারটা হবে দুই ধরনের। তিন দিন বিস্কুট ও তিন দিন রান্না করা খাবার। বর্তমানে ছয় দিন বিস্কুট দেওয়া হয়। রান্না করা খাবারের মধ্যে খিচুড়ি সবচেয়ে প্রোটিনসমৃদ্ধ।
‘আর যারা এটি বাস্তবায়ন করবেন আমাদের প্রধান শিক্ষক, কর্মকর্তা, যারা মাঠপর্যায়ে আছেন, তাদের সক্ষমতার জন্য প্রত্যেকটা প্রকল্পে দেশে ও বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রেখেছি। প্রত্যেক প্রকল্পে এ ধরনের একটা কম্পোনেট থাকে। এ কম্পোনেন্টে আছে এক হাজার কর্মকর্তাকে বিভিন্ন দেশে (যেসব দেশে স্কুল ফিডিং চালু আছে) পাঠানোর বিষয়। যেমন আমাদের প্রতিমন্ত্রী ও এডিশনাল সেক্রেটারি এবং আমাদের যাওয়ার কথা ছিল কেরালা, দিল্লিতে।’
গণশিক্ষা সচিব বলেন, এটা একটা বিশাল কর্মযজ্ঞ। ৬৫ হাজার ৬২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য ‘মিড ডে মিল’ চালু করতে হবে। কীভাবে ম্যানেজ করব, সেই ম্যানেজমেন্ট দেখার জন্য; যেসব উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে এ ব্যবস্থা চালু আছে, সেই ব্যবস্থা দেখার জন্য এবং দেশে-বিদেশে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য কম্পোনেন্ট রেখেছি সক্ষমতা অর্জনের জন্য।
যারা চালু করেছে, তাদের নিয়ে এসে প্রশিক্ষণ করা যাচ্ছে না কেনÑএ প্রশ্নে সচিব বলেন, যেসব দেশ চালু করেছে সেখানে অভিজ্ঞতাটা দেখার থাকে, এটা তো এক দিনে হয়নি। তারা অনেক দিন ভুল-ভ্রান্তি ও সংশোধন করে কীভাবে পারফেক্টলি কাজ করছে, সেই অভিজ্ঞতা অর্জনের একটা প্রস্তাব। এটা পরিকল্পনা কমিশন ও একনেক অনুমোদন না করলে থাকবে না। সচিব জানান, দারিদ্র্যপীড়িত ১০৪টি উপজেলায় স্কুল ফিডিং পাইলট প্রকল্প, সেখানে আমরা বিস্কুট দিচ্ছি। ১৬টি উপজেলায় রান্না করা খাবার চালু আছে।