নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর গুলশানের অভিজাত অ্যারোমা থাই স্পা। প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করার মাধ্যমে ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছে। দাখিলপত্রে বিক্রয় তথ্য গোপনের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি উদ্ঘাটন করেছে মূসক নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) ভ্যাট গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রাজধানীর অ্যারোমা থাই স্পা (বাড়ি-৬বি, রোড-৪৪, গুলশান-২)। প্রতিষ্ঠানটি প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করে। ভ্যাট ফাঁকি দিতে দাখিলপত্রে বিক্রয় তথ্য গোপন করে আসছে। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১৬ আগস্ট ভ্যাট গোয়েন্দার উপপরিচালক ফেরদৌসী মাহবুব ও নাজমুন নাহার কায়সার এর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়। এ সময় প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় সংক্রান্ত দলিলাদি জব্দ করা হয়। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের দাখিলপত্র ও কাগজপত্র পর্যালোচনা করে ভ্যাট ফাঁকি উদ্ঘাটন করে ২০ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮ সালের মার্চ থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত কিছু মাসের রিটার্ন (দাখিলপত্র) সরবরাহ করেনি। ভ্যাট সার্কেলে যোগাযোগ করা হলেও দেখা যায়, সেখানেও রিটার্ন জমা দেয়নি। প্রতিষ্ঠানটির পস মেশিনের তথ্যানুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮ সালের মার্চ থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত মোট সেবা বিক্রয় করেছে তিন কোটি ৪৮ লাখ ১৮ হাজার ৪২২ টাকা।
যার ভ্যাট আরোপযোগ্য বিক্রয়মূল্য তিন কোটি দুই লাখ ৭৬ হাজার ৮৮৯ টাকা। কিন্তু ওই সময়ে প্রতিষ্ঠানটি দাখিলপত্রে বিক্রয়মূল্য দেখিয়েছে দুই লাখ ৯৩ হাজার ৯৭৩ টাকা। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটি দুই কোটি ৯৯ লাখ ৮২ হাজার ৯১৬ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপন করেছে। এর উপর পরিহার করা ভ্যাট ৪৪ লাখ ৯৭ হাজার ৪৩৭ টাকা। চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত এর উপর ২ শতাংশ হারে সুদ এক লাখ ৭৭ হাজার ৯২৩ টাকা। সুদসহ ফাঁকি দেওয়া ভ্যাট ৫৫ লাখ ৭৫ হাজার ৩৬০ টাকা।
অপরদিকে, প্রতিষ্ঠানটির ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মাসিক ২৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। যার বিপরীতে ভ্যাট ৩৯ হাজার ৭৫০ টাকা। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি মাসিক রিটার্ন অনুযায়ী মাসিক পরিশোধিত ভাড়ার উপর ভ্যাট পরিশোধ করা হয়েছে তিন হাজার ৭৫০ টাকা।
বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ৮২ লাখ ১৫ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এর উপর প্রযোজ্য ভ্যাট ১২ লাখ ৩২ হাজার ২৫০ টাকা। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি পরিশোধ করেছে মাত্র ৬০ হাজার টাকা। ফাঁকি দিয়েছে ১১ লাখ ৭২ হাজার ২৫০ টাকা। ২ শতাংশ হারে সুদ তিন লাখ ৫ হাজার ৭৪৫ টাকা। সুদসহ ভ্যাট ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৯৯৫ টাকা। সেবা বিক্রয় ও বাড়ি ভাড়ার উপর মোট পরিহার করা ভ্যাট ৭০ লাখ ৫৩ হাজার ৩৫৫ টাকা। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রতিবেদনে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান ড. মইনুল খান।
###