পুঁজি রক্ষায় খাত বদলে ব্যস্ত বিনিয়োগকারীরা

হঠাৎ পতনে সূচক নামল ৫ হাজার পয়েন্টের নিচে

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: টানা উত্থানের পর হঠাৎ করেই পুঁজিবাজারে আবারও ধারাবাহিক পতন দেখা দিয়েছে। গতকালসহ পরপর টানা চার কার্যদিবস নিম্নমুখী হয়েছে পুঁজিবাজারের সূচক। পাশাপাশি কমেছে তালিকাভুক্ত সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর। একইভাবে কমেছে লেনদেন ও বাজার মূলধন। হঠাৎ করে বাজার চিত্র বদলে যাওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত চার দিনে ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ১৪৬ পয়েন্ট। অর্থাৎ দৈনিক গড়ে সূচক কমেছে প্রায় ৩৭ পয়েন্ট করে। এর মধ্যে একদিন সূচক কমছে ৭৭ পয়েন্ট। শতাংশের হিসাবে এদিন সূচকের পতন হয় দেড় শতাংশের বেশি। চার কার্যদিবস আগে ডিএসইর প্রধান সূচকের অবস্থান ছিল পাঁচ হাজার ১১৬ পয়েন্টে। এরপর টানা পতন হয়ে গতকাল তা স্থির হয়েছে চার হাজার ৯৭০ পয়েন্টে। অর্থাৎ চার কার্যদিবসের পতনের ধাক্কায় সূচক আবারও পাঁচ হাজার পয়েন্টের নিচে চলে এসেছে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, এক দিনে বিশেষ কোনো কারণ ছাড়া সূচকের এক শতাংশের বেশি পতন হলে তাকে স্বাভাবিক বাজার বলা যায় না। এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একজন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক বলেন, বেশ কিছুদিন বাজার ধারাবাহিক ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। সামান্য কিছু কোম্পানির শেয়ার ছাড়া অন্য কোনো শেয়ার অতিমূল্যায়িত হয়নি। তাই এ সময়ে এক দিনে দেড় শতাংশ সূচকের পতন স্বাভাবিক নয়। বাজার নিয়ে কোনো কারসাজি হচ্ছে কি না এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের আরও বেশি সচেতন হতে হবে।

এদিকে গত চার কার্যদিবসের পতনের জের ধরে ডিএসইতে লেনদেন কমে গেছে ৪১৮ কোটি টাকা। চার কার্যদিবস আগে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। গতকাল তা নেমে এসেছে ৭২৯ কোটি টাকায়। এই সময়ে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন কমে গেছে ১০৪ কোটি টাকা।

অন্যদিকে চারদিনের পতনে কমে গেছে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর, যার জের ধরে আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে বাজার মূলধনও। চার দিনের ব্যবধানে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ার এবং ইউনিটের বাজার মূলধন কমে গেছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে বাজার মূলধন কমেছে আড়াই হাজার কোটি টাকা।

এদিকে সাম্প্রতিক বাজার পতন নিয়ে বাজার-সংশ্লিষ্টদের মধ্যে কারও কারও প্রশ্ন থাকলেও বেশিরভাগই পতনের উল্লেখযোগ্য কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না। তারা বলছেন, বাজার পতনের বিশেষ কোনো কারণ নেই। মুনাফা তোলার চাপেই বাজার পরিস্থিতি এমন হয়েছে। এটা বেশি দিন স্থায়ী হবে না।

এ প্রসঙ্গে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজার ঊর্ধ্বমুখী বা নি¤œমুখী থাকা একটি স্বাভাবিক ঘটনা। তবে টানা উত্থান বা টানা পতন কোনোটাই ভালো নয়। এখন বাজারের যে পরিস্থিতি রয়েছে এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের ভয়ের কিছু নেই। তবে তাদের বিনিয়োগ করতে হবে সতর্কতার সঙ্গে।

অন্যদিকে সাম্প্রতিক পতনে ভীত হয়ে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। যে কারণে ইতোমধ্যে শেয়ার বিক্রি করে তা নগদ টাকায় রূপান্তর করেছেন অনেকেই। কেউ কেউ আবার পুঁজি বাঁচাতে এক খাতের শেয়ার ছেড়ে অন্য খাতে ঝুঁকেছেন। যে কারণে সম্প্রতি কোনো খাতই ধারাবাহিকভাবে ভালো করতে পারছে না। মূলত বিনিয়োগকারীরা পোর্টফোলিওতে দ্রুত পরিবর্তন আনছেন বলেই এ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০