হিমোফিলিয়া রোগে সাধারণত পুরুষরা ভুগে থাকেন। ক্ষেত্রবিশেষে নারীরাও এ রোগে আক্রান্ত হন। তবে তাদের সংখ্যা হাতেগোনা।
হিমোফিলিয়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হেলথ ও হিউম্যান সার্ভিসের অধীনে জেনেটিকস হোম রেফারেন্স একটি জরিপ চালায়। সংস্থাটির তথ্যমতে, বিশ্বে চার থেকে পাঁচ হাজার ছেলের মধ্যে একটি শিশু হিমোফিলিয়া রোগ নিয়ে জš§ নেয়। একই সঙ্গে হিমোফেলিয়া ‘বি’তে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ২০ হাজারে একজন। জš§গত ত্রুটি ছাড়া সামান্য কেটে যাওয়া ক্ষতস্থান থেকেও এ রোগের সূত্রপাত হতে পারে। এমনকি এ সমস্যার ফলে মৃত্যুর মুখেও পড়তে পারে শিশুটি।
হিমোফিলিয়া কী
হিমোফিলিয়া একটি জš§গত রক্তরোগ। বিশেষত ছেলে শিশুরা বংশগত বা জেনেটিক কারণে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। আক্রান্ত শিশু বা ব্যক্তির শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার উপাদানে স্বল্পতা থাকে। ফলে শরীরের কোনো স্থান কেটে গেলে সহজে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয় না। সামান্য কাটা-ছেঁড়ায় সমস্যা না হলেও শরীরের নানা জয়েন্ট, হাঁটু বা কনুইতে রক্তক্ষরণ হলে তা মারাত্মক আকার ধারণ করে।
কারণ
হিমোফিলিয়া মূলত দুই ধরনের। শরীরে অষ্টম ফ্যাক্টরের অভাব ঘটলে হিমোফিলিয়া ‘এ’ রোগে আক্রান্ত হয় নবজাতক ছেলে। নবম ফ্যাক্টরের অভাবে হিমোফিলিয়া ‘বি’ রোগে আক্রান্ত হয়। ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব হিমোফিলিয়ার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রায় পাঁচ হাজারে একটি শিশু এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়। রোগটি বংশানুক্রমিক হলেও এর উপসর্গগুলো তেমনটা প্রতিভাত হয় না।
রোগটির লক্ষণ দেরিতে ধরা পড়ে। ছোটবেলায় শিশু গুরুতর আহত না হলে এ সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা পাওয়া যায় না। অনেক সময় দাঁত পড়া কিংবা খতনা করানোর সময় রোগটি ধরা পড়ে।
মূলত হাঁটু, কনুই বা মাংসপেশিতে রক্তক্ষরণের ঘটনা বেশি ঘটে। তবে মস্তিষ্ক ও খাদ্যনালিতেও রক্তক্ষরণ হতে পারে। এটি নির্ভর করে আঘাতের মাত্রার ওপর। আঘাত গভীর হলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে রোগী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে পারে।
চিকিৎসা
এ রোগের তেমন কোনো সঠিক বা নিশ্চিত কারণ উদ্ঘাটন করতে পারেননি চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। তবে রোগটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলেও রোগীর শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার যে ফ্যাক্টরটির অভাব রয়েছে, তা ইনজেকশনের মাধ্যমে পূরণ করা যায়। যার মাধ্যমে সুস্থ থাকে রোগী। রোগীকে সতর্কতার সঙ্গে জীবন যাপন করতে হবে, যেন দুর্ঘটনা বা আঘাতজনিত ঘটনা কম ঘটে।
খেয়াল রাখতে হবে
হিমোফিলিয়া রোগীর জীবন যাপনে সতর্কতার বিকল্প নেই। একটু
অসতর্কতার কারণে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাই কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
শারীরিক আঘাতের ঝুঁকি থেকে সতর্ক থাকতে হবে
চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত ওষুধ সেবন করা যাবে না
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অপারেশন
বা ইনজেকশন নেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
হ সুস্বাস্থ্য ডেস্ক
Add Comment