নিজস্ব প্রতিবেদক: ঘোষণা দেওয়া হয়েছে কৃষি যন্ত্রাংশ (এগ্রিকালচারাল পার্টস)। কিন্তু আমদানি হয়েছে থ্রি-হুইলার। মিথ্যা ঘোষণার এমন একটি চালান আটক করেছে কাস্টমস, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। মোংলা কাস্টম হাউস থেকে চালানটি আটক করা হয়। যাতে জরিমানাসহ প্রায় অর্ধ-কোটি টাকার বেশি অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, কাস্টমস গোয়েন্দার মহাপরিচালকের কাছে আগেই তথ্য ছিল যে, জে আর ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মিথ্যা ঘোষণার পণ্য নিয়ে আসছে। এরই প্রেক্ষিতে পণ্য চালানটি ১২ জুলাই বিএল লক করা হয়। ১৩ জুলাই আমদানিকারকের প্রতিনিধি সিএন্ডএফ এজেন্ট জিবিএম ট্রেডিং বিল অব এন্ট্রি দাখিল করার পর তা অ্যাসাইকুডা থেকে আবার লক করা হয়।
সূত্র আরও জানায়, আমদানিকারক ঘোষণা দেয় চালানটিতে ২১ টন ৮০০ কেজি এগ্রিকালচারাল পার্টস (ট্রাক্টরসহ বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রাংশ) রয়েছে। কিন্তু কায়িক পরীক্ষায় অটোরিক্সার ২২ টন ৭৯০ কেজি থ্রি-হুইলার পাওয়া যায়। ঘোষণার চেয়ে ৯৯০ কেজি পণ্য বেশি পাওয়া যায়। কৃষি যন্ত্রাংশের শুল্ককর কম, থ্রি-হুইলার এর শুল্ককর বেশি। কৃষি যন্ত্রাংশের শুল্ককর ৩১ শতাংশ ও থ্রি-হুইলার এর শুল্ককর ৯০ শতাংশ।
সূত্র জানায়, শুল্ককর ফাঁকি দিতে আমদানিকারক-সিএন্ডএফ এজেন্ট যোগসাজসে থ্রি-হুইলারের এইচএস কোডের জায়গায় এগ্রিকালচারাল এর এইচএস কোড দেখানো হয়। পণ্যের মোট শুল্কায়নযোগ্য মূল্য ৬১ লাখ ১৫ হাজার ৪২০ টাকা। ঘোষণার অতিরিক্ত পণ্য পাওয়া, মিথ্যা ঘোষণা দেওয়ায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মোংলা কাস্টম হাউস কমিশনারকে প্রতিবেদন দেয় কাস্টমস গোয়েন্দা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী সম্প্রতি কাস্টম হাউস কমিশনার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা বিমোচন জরিমানা করা হয়। একইসঙ্গে আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ পণ্য চালান থেকে ১৮ লাখ ৯৯ হাজার ২১৫ টাকার অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়, ৩৮ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, ৫০ হাজার টাকার বিমোচন জরিমানাসহ মোট ৫৭ লাখ ৪৯ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। তবে এই আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্ট এর আগে একই কায়দায় মিথ্যা ঘোষণা ও রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আরও পণ্য আমদানি করেছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে মোংলা কাস্টম হাউস এবং কাস্টমস গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
###