আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ

সচিবের ভিজিটিং কার্ড ও সিল দিয়ে জালিয়াতির চেষ্টা!

মাসুম বিল্লাহ: ব্যাংক খাতকে কেন্দ্র করে জালিয়াতির ঘটনা ঘটেই চলেছে। নানাভাবে ঘটছে এ জালিয়াতি। বিভিন্ন অসাধু চক্রের পাশাপাশি ব্যাংকের কর্মীরাও জড়িত হয়ে পড়ছেন নানা ধরনের অসাধু কর্মকাণ্ডে। পাশাপাশি উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়েও নানা ধরনের সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিবের নাম ভাঙিয়ে এমন জালিয়াতি চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব আসাদুল ইসলামের ভিজিটিং কার্ড ও তার নাম-পদবি সংবলিত সিলমোহর ব্যবহার করে একটি অসাধু চক্র সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছে। ব্যাংক এশিয়ার পল্টন শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিনের নামে দালিখকৃত একটি অভিযোগপত্রে এ জালিয়াতির চেষ্টা হয়।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ব্যাংক এশিয়ার পল্টন শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিনের নামে বেশকিছু অভিযোগ জমা পড়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে। মো. আব্দুস সালাম ও মো. মিরাজ নামে দুই ব্যক্তি ওই অভিযোগ জমা দেন। তবে এ দুজনের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। তাদের দাখিল করা অভিযোগ-সংবলিত আবেদনপত্রে একটি চক্র বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিবের নাম-সংবলিত সিলমোহর ব্যবহার করে নিয়মবহির্ভূত সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছে বলে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব ও জ্যেষ্ঠ সচিবের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবদুল আওয়ালের স্বাক্ষর করা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে যে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিবের ভিজিটিং কার্ড ও সিল ব্যবহার করে একশ্রেণির অসাধু চক্র বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে, যা বিধিবহির্ভূত ও বেআইনি। বিশেষ করে গত ১৪ সেপ্টেম্বর মো. আব্দুস সালাম ও মো. মিরাজ নামে দুই ব্যক্তি ব্যাংক এশিয়ার পল্টন শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিনের নামে বিভিন্ন অভিযোগ-সংবলিত একটি আবেদন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব বরাবর দাখিল করেন। সেই আবেদনে জ্যেষ্ঠ সচিবের সিল ব্যবহার করে ফায়দা লোটার চেষ্টা করে একটি মহল। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গোচরীভূত হয়। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সব অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব ও উপসচিব, ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের একান্ত সচিবকে এ সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলীর ব্যক্তিগত ফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে অভিযোগের বিষয়টি তাকে জানানো হয়। তিনি হোয়াটসঅ্যাপে বার্তাটি দেখলেও কোনো উত্তর দেননি।

এদিকে ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপক সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে কী ধরনের অভিযোগ উঠেছে, সে বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। অভিযোগের বিষয়ে জানতে সালাউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। পরে ব্যাংকের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) ইব্রাহিম খলিলের মাধ্যমে সালাউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি গণমাধ্যমে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।

মো. ইব্রাহিম খলিল শেয়ার বিজকে বলেন, অভিযোগের বিষয়টা আমিও শুনেছি, তবে এ সম্পর্কে আমি কিছুই বলতে পারব না। কারণ ব্যাংকের অর্থনৈতিক দিক নিয়ে আমার কাজ। ব্যাংকের অর্থনীতিবিষয়ক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারি। সালাউদ্দিন সাহেব আমার সহকর্মী হলেও তার বিষয়ে কথা বলার কোনো অধিকার রাখি না।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০