নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে সিএমএসএমই খাতের ঋণ বিতরণে আগ্রহ নেই ব্যাংক খাতের। জামানতবিহীন ঋণসংক্রান্ত নির্দেশনা যথাযথভাবে পরিপালন করছে না তারা। ফলে পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের ঋণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এই ঋণ বিতরণ প্রক্রিয়া গতিশীল করতে ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করে সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস্ ডিপার্টমেন্ট থেকে এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়।
বাংলাদেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো ওই সার্কুলারে বলা হয়, সিএমএসএমই খাতে ঋণ বিতরণকে অধিকতর উৎসাহিত করতে চারটি পুনঃঅর্থায়ন স্কিম থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কর্তৃক পুনঃঅর্থায়ন প্রাপ্তির বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
পরবর্তীকালে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সিএমএসএমই খাতে চলতি মূলধন ঋণ সরবরাহ নির্বিঘœ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করা হয়। তবে লক্ষ করা যাচ্ছে, কতিপয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান ‘জামানতবিহীন ঋণ’ সংক্রান্ত নির্দেশনা যথাযথভাবে পরিপালন করছে না। ফলে পুনঃঅর্থায়ন ঋণ বিতরণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
পাশাপাশি বিদ্যমান ‘কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য মফস্বলভিত্তিক শিল্প স্থাপনে পুনঃঅর্থায়ন স্কিম’ সংক্রান্ত নীতিমালায় বর্ণিত পুনঃঅর্থায়ন প্রদানের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণে ‘একক উদ্যোক্তা’ শব্দাবলি ব্যবহারের কারণে মালিকানার ধরনে অস্পষ্টতার সৃষ্টি হয়েছে। তাই সিএমএসএমই খাতে ঋণ বা অর্থায়নের বিপরীতে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা প্রদান প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে আগের নীতিমালায় বর্ণিত ‘জামানতবিহীন ঋণ’ সংক্রান্ত নির্দেশনাসহ এতদসংক্রান্ত আইনের অন্যান্য সব নির্দেশনা পরিপালন করতে হবে। পাশাপাশি ‘কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য মফস্বলভিত্তিক শিল্প স্থাপনে পুনঃঅর্থায়ন স্কিম’ নীতিমালায় বর্ণিত ‘একক উদ্যোক্তা’ শব্দাবলির পরিবর্তে ‘একক উদ্যোগ’ শব্দটি প্রতিস্থাপিত হবে। উল্লেখ্য, করোনা শুরুর পর থেকে অর্থনীতির ধাক্কা সামাল দিতে বিভিন্ন খাতের জন্য বিশেষ প্রণোদনা ঘোষণা করে সরকার। এসব প্রণোদনা প্যাকেজের মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ রাখা হয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য। এর মধ্যে ১০ হাজার কোটি টাকা সরবরাহ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক বছর মেয়াদি ঋণের সুদের হার ধরা হয় ৯ শতাংশ। এর মধ্যে সাড়ে চার শতাংশ পরিশোধ করবে ঋণগ্রহীতা এবং সাড়ে চার শতাংশ সরকার সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে দেবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, আগস্ট পর্যন্ত মাত্র তিন হাজার ১০০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের। এমন পরিস্থিতিতে দু’মাস সময় বাড়িয়ে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার সময় বেঁধে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বরাবরই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ দিতে অনীহা ব্যাংকগুলোর। অথচ করোনা সংকটে প্রণোদনার অর্থ ছোট ব্যবসায়ীদের আগে দেওয়া উচিত ছিল।