দুটি আলাদা আলাদা টেলিকম প্রতিষ্ঠান মিলে হলো এক। একটি রবি। অন্যটি এয়ারটেল। এ দুই প্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত নাম রবি আজিয়াটা লিমিটেড।
একীভূত হলেও ‘এয়ারটেল’ স্বাধীন ব্র্যান্ড হিসেবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে একই নেটওয়ার্কের অধীনে রবি ১৮ ও এয়ারটেল ১৬ সিরিয়াল ব্যবহার করে। বাজারে টিকে থাকার কৌশল হিসেবে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
‘একসঙ্গে তৈরি হচ্ছে এক নম্বর নেটওয়ার্ক’ এ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে রবি আজিয়াটা লিমিটেড। একীভূত হওয়ার কারণে বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান গ্রামীণফোনের পর। বর্তমানে তাদের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় চার কোটি ছুঁই ছুঁই করছে। ফলে বিস্তৃত নেটওয়ার্কের পাশাপাশি ইন্টারনেট সেবা প্রদানেও এগিয়ে যাচ্ছে টেলিকম প্রতিষ্ঠানটি। নেটওয়ার্কটির সিংহভাগ মালিকানা আজিয়াটার। ৬৮ দশমিক সাত শতাংশ রয়েছে তাদের অধীনে, বাকি ৩১ দশমিক তিন শতাংশের মালিক ভারতী এয়ারটেল ও জাপানের এনটিটি ডোকোমো।
মোবাইল ও টেলিযোগাযোগ সেবায় তরঙ্গ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বর্তমানে রবির কাছে ১৯ দশমিক আট মেগাহার্টজ তরঙ্গ রয়েছে। এয়ারটেলের কাছে রয়েছে ২০ মেগাহার্টজ। অর্থাৎ দুই প্রতিষ্ঠানের কাছে সম্মিলিতভাবে ৩৯ দশমিক আট মেগাহার্টজ তরঙ্গ রয়েছে, যা টেলিকম প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। প্রসঙ্গত, গ্রামীণফোনের কাছে রয়েছে ৩২ মেগাহার্টজ তরঙ্গ। এ কারণে রবি আজিয়াটা লিমিটেড খুব দ্রুত গ্রাহকসেবায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বর্তমানে রবির প্রায় ১০০টির বেশি গ্রাহকসেবা কেন্দ্র রয়েছে। দেশজুড়ে তাদের চৌদ্দ হাজারেরও বেশি টাওয়ার রয়েছে।
রবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মাহতাব উদ্দিন আহমেদের মতে, এয়ারটেলের সঙ্গে একীভূত হওয়ার পর এখন আমাদের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ত্রুটিমুক্ত গ্রাহকসেবা দেওয়া। প্রায় চার কোটি গ্রাহককে সাশ্রয়ী মূল্যে আকর্ষণীয় ও উদ্ভাবনী মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড সেবা প্রদান আমাদের লক্ষ্য।
১৯৯৬ সালে টেলিকম মালয়েশিয়া ও দেশি প্রতিষ্ঠান একে খান গ্রুপের যৌথ অংশীদারিত্বে মোবাইল অপারেটর ‘একটেল’ কার্যক্রম শুরু করে। এটি বর্তমানে রবি নামে পরিচালিত হচ্ছে। আর ওয়ারিদ টেলিকমকে অধিগ্রহণের মাধ্যমে ২০১০ সালে দেশে এ খাতে ব্যবসা শুরু করে এয়ারটেল।
আজিয়াটার প্রেসিডেন্ট ও গ্রুপ চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার তান শ্রি জামালুদিন ইবরাহিম বলেন, এর আগে ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও কম্বোডিয়ার মতো বাজারের অভিজ্ঞতা রবি-এয়ারটেল একীভূতকরণ প্রক্রিয়া সফল করতে সহায়তা করেছে। নিজেদের অবস্থান সুসংহত করা ও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাজারে বিদ্যমান সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে মুনাফার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে একীভূত করা হয়েছে। একই সঙ্গে গ্রাহককে মানসম্মত সেবা দেওয়ার বিষয়টি তো আছেই।
Add Comment