আগাম ভোট ৯ কোটি

উইসকনসিন ও মিশিগানে এগিয়ে বাইডেন

শেয়ার বিজ ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাত্র এক দিন বাকি। গত শনিবার পর্যন্ত ৯ কোটিরও বেশি আগাম ভোট পড়েছে। দেশটিতে এক শতকেরও বেশি সময়ের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বেশি ভোট পড়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছে। এদিকে নির্বাচনী প্রচারের এ শেষ বেলায় এসে জনমত জরিপে ‘সুইং স্টেট’ হিসেবে পরিচিত উইসকনসিনে ১২ ও মিশিগানে ৮ শতাংশ ব্যবধানে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী জো বাইডেন। খবর: রয়টার্স।

ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জো বাইডেনের দ্বৈরথ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের এবার তুমুল আগ্রহ। আগাম ভোটের সংখ্যাই তার প্রমাণ বলে ধারণা গণমাধ্যমের। ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউএস ইলেকশনস প্রজেক্ট এ তথ্য অনুযয়ী শনিবার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে যে পরিমাণ আগাম ভোট পড়েছে, তা ২০১৬ সালের নির্বাচনে মোট ভোটের প্রায় ৬৫ শতাংশ।

ভোটের দিন কেন্দ্রগুলোতে যে ভিড় হবে, তা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দিতে পারে। এ উদ্বেগ থেকেও এবার অসংখ্য মানুষ ডাকযোগে কিংবা আগাম ভোটের কেন্দ্রগুলোয় গিয়ে নিজেদের রায় জানিয়ে এসেছেন। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, জনমত জরিপগুলোয় ট্রাম্পকে বাইডেনের থেকে বেশ খানিকটা পিছিয়ে থাকতে দেখা গেলেও দোদুল্যমান রাজ্যগুলোয় দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে ব্যবধান কম হওয়ায় রিপাবলিকান প্রার্থীর সম্ভাবনা এখনও রয়ে গেছে।

দেশটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ ২৯ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া কভিড-১৯ মোকাবেলায় ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যর্থতাই এবারের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে অনুমান বিশ্লেষকদের। বিপুলসংখ্যক আগাম ভোটও ডেমোক্র্যাটদের সুবিধা করে দিতে পারে বলে অনুমান অনেকের। দলটি এবার মহামারির মধ্যে ডাকযোগে ভোটের ব্যাপারে শুরু থেকেই শক্ত অবস্থান নিয়েছিল।

অন্যদিকে ট্রাম্প ছিলেন ‘মেইল-ইন’ ভোটের ঘোর বিরোধী। এ ধরনের ভোটে জালিয়াতি হতে পারে বলে বেশ কয়েকবার নিজের আশঙ্কার কথাও জানিয়েছিলেন ক্ষমতাসীন এ প্রেসিডেন্ট। যে কারণে ঐতিহাসকভাবে রিপাবলিকানরা ডাকযোগে ভোট বেশি পেলেও এবার তারা আগাম ভোটের সুযোগ খুব একটা নেয়নি বলেই মনে করা হচ্ছে।

চার বছর আগে ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ১৩ কোটি ৮০ লাখ ভোট পড়েছিল; এবার তা সহজেই ছাড়িয়ে যাবে বলেই অনুমান বিশেষজ্ঞদের। গতবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আগাম ভোট পড়েছিল মাত্র চার কোটি ৭০ লাখ। দেশটির ২০টি রাজ্যের দলীয় নিবন্ধনের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত নিবন্ধিত এক কোটি ৯৯ লাখ ডেমোক্র্যাটের বিপরীতে এক কোটি ৩০ লাখ রিপাবলিকান তাদের ভোট দিয়ে দিয়েছেন। রাজ্যগুলোয় কোনো দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই এমন এক কোটি এক লাখ মানুষের ভোটও পড়েছে। তবে প্রার্থীদের মধ্যে কার পক্ষে কত ভোট পড়েছে, তা ওই তথ্য থেকে জানা যায়নি।

নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলীয় উইসকনসিন ও মিশিগান অঙ্গরাজ্যে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে অ্যারিজোনা ও নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যে দুজনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। জরিপের ফলাফলে বলা হচ্ছে, অ্যরিজোনাতে জো বাইডেন ৫০ শতাংশ ভোট পাবেন, আর ট্রাম্প পাবেন ৪৬ শতাংশ। অন্যদিকে উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে ৫২ শতাংশ ভোট পাবেন জো বাইডেন, সেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্প পাবেন ৪৪ শতাংশ ভোট।

সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি জরিপ ও বাজার গবেষণা সংস্থা এসএসআরএস পরিচালিত সিএনএনের একটি নতুন জনমত জরিপ প্রকাশিত হয়। ট্রাম্প ও বাইডেনের ব্যবধানের এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, উইসকনসিন, মিশিগান, অ্যারিজোনা ও নর্থ ক্যারোলাইনাÑ২০১৬ সালের নির্বাচনে এই চার রাজ্যেই জয় পেয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ইলেকটোরাল কলেজের মোট ভোটসংখ্যা ৫৩৮। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে একজন প্রার্থীকে ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজের ভোট পেতে হয়। আসছে ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে এ রাজ্যের যেকোনো একটিতে ট্রাম্প হেরে গেলে, তাঁর পক্ষে ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজের ভোট পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে উঠবে। জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতিমধ্যে যেসব ভোটার ডাকযোগে বা নিজে উপস্থিত হয়ে আগাম ভোট দিয়েছেন, তাদের একটা বড় অংশই বাইডেনের পক্ষে আছেন। আর যারা ৩ নভেম্বর ভোট দেবেন তাদের মধ্যে ট্রাম্পের সমর্থক বেশি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০