নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনার ফলে প্রচলিত এসএমই শিল্পকে টেকসই ডিজিটাল বিজনেসে রূপান্তরের সুযোগ তৈরি হয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে এ সুযোগ কাজে লাগাতে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার মতো প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল গড়ে তুলতে হবে। করোনা মহামারি বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করলেও এটি বাংলাদেশের এসএমই খাতের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। করোনার ফলে এদেশে প্রযুক্তিবান্ধব নতুন নতুন এসএমই এবং সাব-কন্ট্রাক্টিং শিল্পের বিকাশ ও মূল্য সংযোজনের সুযোগ উম্মোচিত হয়েছে।
গতকাল ভার্চুয়াল মাধ্যমে আয়োজিত ‘করোনা-পরবর্তী ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের ভূমিকা: আর্থিক ও শিল্প প্রবৃদ্ধি’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এ কথা বলেন। ওয়ার্ল্ড অ্যাসোসিয়েশন ফর স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজেসের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারে অনুষ্ঠান আয়োজন করে। শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এতে প্রধান অতিথি ছিলেন।
ওয়ার্ল্ড অ্যাসোসিয়েশন ফর স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজেসের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের প্রধান এসএম জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ শরিয়ত উল্লাহ। এতে বাংলাদেশে নিযুক্ত ওমানের রাষ্ট্রদূত তায়েব সালিম আলভী, নেপালের রাষ্ট্রদূত বানশিধার মিশ্র, এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ড. মাসুদুর রহমান, ব্রাক ব্যাংকের হেড অব এসএমই সৈয়দ আবদুল মোমেন, মালদ্বীপের এসএমই সংগঠক মোহাম্মদ আলী জানাহ, বাংলাদেশে ইউনিডোর কান্ট্রি প্রতিনিধি জাকি-উজ-জামান, নেদারল্যান্ডসের মাইন্ড মাস্টার মন্ডোরের প্রেসিডেন্ট এরিক মেজার আলোচনায় অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, কভিড-১৯ বৈশ্বিক শিল্পায়ন ও অর্থনীতিতে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এর প্রভাবে বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। এর ফলে বৈশ্বিক জিডিপিতে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি এবং বেকারত্ব ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। রপ্তানির ক্ষেত্রেও ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতির এ ধরনের নেতিবাচক অবস্থার মধ্যেও সরকারের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত, পৃষ্ঠপোষকতা ও শিল্প খাতে ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের জন্য করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশের এসএমই খাত ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ফলে বিদায়ী অর্থবছরে বাংলাদেশে ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। পাশাপাশি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রপ্তানি ২ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেড়েছে। বিদায়ী অর্থবছরে বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ১৯ শতাংশ থাকলেও নতুন অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে তা কমে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ হয়েছে। তারা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের মধ্যে এসএমই খাতে সরকার ঘোষিত প্রণোদনার সুফল পৌঁছে দিতে ব্যাংকিং নীতিমালা সহজীকরণের পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে তারা অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র, কুটির ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শিল্প খাতের জন্য ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে সহজশর্তে অর্থায়ন সুবিধা জোরদারের তাগিদ দেন।