নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে এসে আটকে গেছেন। হাতে কাজ নেই। শূন্য হয়ে যাচ্ছে জমানো টাকা। মালয়েশিয়ার কর্মস্থলে ফিরতে পারলে মিলবে কাজ। কিন্তু ভিসার জটিলতায় তা সম্ভব হচ্ছে না। অবশেষে সমস্যা সমাধানে গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও করলেন প্রবাসীরা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও করতে ১ অক্টোবর দিবগত রাত থেকেই ঢাকার প্রেস ক্লাবের আশপাশে জড়ো হতে শুরু করেন তারা। সকাল থেকেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধান গেট আটকে তারা সেøøাগান দিতে থাকেন। দুপুরে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন। ঘেরাওয়ের কারণে প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আন্দোলনরত প্রবাসফেরত কর্মীরা জানান, করোনা মহামারির আগে ছুটিতে দেশে এসেছেন তারা। কিন্তু ফ্লাইট বন্ধ থাকায় আর ফিরে যেতে পারেননি। তাদের অনেকেরই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে বেশিরভাগ প্রবাসীর ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পথে।
ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মালয়েশিয়া ফেরত প্রবাসী আক্তার খানম জানান, তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে সেপ্টেম্বরে। ডিসেম্বরে ছুটিতে আসার পর ফিরে যাওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে ফ্লাইট বন্ধ থাকায় যেতে পারেননি। তিনি বলেন, এত মাস ধরে দেশে বসে আছি। কোনো আয়-রোজগার নেই। ঋণ করে চলছি এই কয় মাস। আর কিছুদিন চললে না খেয়ে মরতে হবে। প্রবাসীরা এভাবেই তাদের আক্ষেপের কথা জানান।
বেলা ১১টায় আন্দোলনরত প্রবাসীদের পাঁচজনের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (সাউথ-ইস্ট এশিয়া) এম জে এইচ জাবেদ। তিনি প্রতিনিধিদলকে জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে মালয়েশিয়া সরকার ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশিকে সেদেশে ঢুকতে দেবে না। সে দেশের সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রবাসীদের অপেক্ষা করতে হবে।
মালয়েশিয়া সরকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেই প্রবাসীদের ফিরে যেতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
এরপর বেলা দেড়টায় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন প্রবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় সচিব তার পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দেন। মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি এবং যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাদের আবার ভিসা দেওয়ার ব্যাপারে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি। এছাড়া দেশে দীর্ঘদিন কাজ না থাকায় যারা অর্থকষ্টে রয়েছেন, তাদের আর্থিক সহযোগিতার বিষয়টি নিয়েও তিনি কাজ করবেন বলে জানান। এসব আশ্বাস পেয়ে আন্দোলনরত প্রবাসীরা ঘোষিত কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন।
