শোবিজ ডেস্ক: টানা আড়াই মাস হাসপাতালজীবন শেষে গত সপ্তাহে আরমানিটোলার নিজ বাসায় ফিরেছেন সংগীতশিল্পী লাকী আখান্দ। তিনি এখন আগের তুলনায় বেশ ভালো আছেন এমনটাই জানায় তার পারিবারিক সূত্র।
‘নিয়মিত খাচ্ছেন, বিশেষ কোনো ওষুধ সেবন করতে হচ্ছে না, মন দিয়ে গান শুনছেন, চারপাশের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন লম্বা সময় ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করা এই মুক্তিযোদ্ধা।’ কথাগুলো জানালেন ‘শিল্পীর পাশে ফাউন্ডেশন’ সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী এরশাদুল হক টিংকু। যিনি লাকী আখান্দকে নিয়মিত দেখভাল করছেন।
তিনি বলেন, ‘সবার দোয়া আর ভালোবাসায় লাকী ভাই এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো আছেন। হাসপাতালে থাকতে মাঝে মাঝে চেতনা ফিরলেও তেমন কাউকে চিনতে পারতেন না। তবে এখন সে পরিস্থিতি নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘দুদিন আগে কণ্ঠশিল্পী লীনু বিল্লাহ বাসায় গেছেন লাকী ভাইকে গান শোনাতে। আশির দশকে যে গান দুটির সুরকার-সংগীত পরিচালক লাকী ভাই ছিলেন। তবে এখন নতুন সংগীতায়োজন করেছেন তমাল। মূলত গান দুটির নতুন সংগীতায়োজন কেমন হয়েছে, সে পরামর্শের জন্য লীনু ভাই গিয়েছিলেন। তিনি খুব মন দিয়ে গান দুটি শুনলেন। প্রশংসা করলেন। আবার দুটি কারেকশনও দিলেন! মিউজিকের প্রতি এখনও মানুষটার যে আগ্রহ ও বিচক্ষণতা, সেটা সত্যিই বিস্ময়কর।’ টিংকু লাকী আখান্দের পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। গত ৫ ফেব্রুয়ারি বরেণ্য এ শিল্পীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বিএসএমএমইউ’র সেন্টার ফর প্যালিয়েটিভ কেয়ারে ভর্তি করা হয়। তিনি সেখানে অধ্যাপক নেজামুদ্দিন আহমেদের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন। লাকীর শরীরের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অধ্যাপক নেজামুদ্দিন বলেন, ‘তিনি এখন ভালো আছেন। আগেও বলেছি, এ বিষয়ে নতুন কোনো চিকিৎসা নেই। চলমান চিকিৎসা ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে যতক্ষণ রোগীর অবস্থা ভালো রাখা সম্ভব।’ প্রসঙ্গত, গুণী এই সংগীতজ্ঞ অনেক দিন ধরেই মরণ ব্যাধি ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছেন। ছয় মাসের চিকিৎসা শেষে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে ২০১৬ সালের ২৫ মার্চ দেশে ফেরেন তিনি। সেখানে কেমোথেরাপি নেওয়ার পর শারীরিক অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছিল তার। একই বছরের জুনে আবারও থেরাপির জন্য ব্যাংকক যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে পরে আর তার সেখানে যাওয়া হয়ে ওঠেনি।
অসুস্থতার প্রথম থেকেই লাকী আখান্দ ও তার পরিবার কোনোরকম আর্থিক সহযোগিতা গ্রহণের বিষয়ে বেশ কঠোর ছিলেন। দেশের শীর্ষ শিল্পীদের উদ্যোগে সহযোগিতা করতে চাইলেও বিনয়ের সঙ্গে লাকী আখান্দ সেটি গ্রহণে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। গুণী কিংবা অভিমানী এ মানুষটি অন্যের সাহায্য-সহযোগিতায় নিজের চিকিৎসা চালাতে মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন না। তবে ব্যাংককে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই সংগীতকারের চিকিৎসার জন্য পাঁচ লাখ টাকা সহায়তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রীয় ভালোবাসা হিসেবে সেটি তিনি গ্রহণ করেছেন সানন্দে।
Add Comment