দুপচাঁচিয়ায় আমন ধান ঘরে তোলার ধুম

পারভীন লুনা, বগুড়া : বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় রোপা আমন ধান ঘরে তোলার ধুম পড়েছে। ক্ষেত থেকে ধান তুলে বাড়ি নিয়ে যেতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা, তাদের হাতে যেন এতটুকু হাতে সময় নেই। মাঠের সোনা ফসল ঘরে তুলে কিষানির জন্য নতুন শাড়ি কেনা আর অসচ্ছলতার কবল থেকে রক্ষা পেতে দিনরাত পরিশ্রম চলছে তাদের। সকাল থেকে ধান কাটা ও আর তা মাড়াই করে ঘরে তুলতে যেন সন্ধ্যা গড়িয়ে আঁধার নেমে আসছে।

জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন স্থানে কৃষকরা ধান কাটা ও মাড়াই এবং কিষানিরা ধানের বিচালি বা খড় ও ময়লা ধান পরিষ্কার করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এবার এ অঞ্চলে আগাম জাতের ধান বিনা-৭ ও ব্রি ধান-৪৯ চাষ হয়েছে। এসব ফসলই এখন ঘরে তুলছেন কৃষক। এবার আগাম জাতের ধান বিক্রি করে ভালো দাম পাওয়ায় খুশি চাষিরাও।

সূত্র জানায়, এবার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় ১১ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮০০ হেক্টর বেশি জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে উফশী এবং ৩০০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ধানের চাষ করা হয়েছে। আমন মৌসুমে বেশ কিছু জাতের ধান চাষে গুরুত্ব দিচ্ছেন কৃষকরা, যেগুলোর মধ্যে উল্লখযোগ্য বিনা-৭, ব্রি-৪৯, ৫০, রণজিৎ, স্বর্ণা, মামুন, কাটারী ভোগ ও আতপ।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে এবং কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে রোপা আমন কাটা শুরু হয়েছে। আশ্বিন ও কার্তিক এ দুই মাস প্রকৃত চাষিরা অভাব-অনটনের মধ্যে দিন কাটান। এজন্য আগাম জাতের ধান বাজারে আসায় চাষিরা সেগুলো আবাদে ঝুঁকে পড়েছেন। এবার বীজতলা থেকে শুরু করে রোপা আমন ঘরে তুলতে যে পরিমাণ খরচ হয়েছে, তাতে বর্তমান ধানের ভালো দাম থাকায় লাভবান হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। বর্তমানে রণজিৎ জাতের ধান বাজারে এক হাজার ১৫০ টাকায় পর্যন্ত প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে।

উপজেলার ভাটাহার গ্রামের কৃষক ইয়াছিন আলী, হাপুনিয়া গ্রামের কৃষক মাজাহার হাসান বলেন, ‘এবার রোপা আমন ধানের ফলন কিছুটা কম হলেও দাম ভালো থাকায় আমরা খুশি। ধান বিক্রি করে আলু ও সরষে চাষের জন্য অর্থ জোগান চলছে।’

আর হাপুনিয়া গ্রামের কৃষক তোজাম বলেন, ‘করোনার কারণে আমাদের অন্যদিকে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমরা এ আগাম জাতের ধান তুলে ক্ষতিপূরণ করতে চাই। এ ফসল বিক্রি করে আমাদের সন্তানদের নিয়ে ভালো থাকার আশা করছি। তবে করোনা পরিস্থিতিতে সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা চিন্তিত।’ তবে আমনের ভালো ফলন হওয়ায় কিছুটা আশাবাদী বলেও জানান তিনি।

উপজলা কৃষি কর্মকর্তা সাজেদুল আলম বলেন, ‘দুপচাঁচিয়া অঞ্চলের আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং ভালো ফলন হওয়ায় ধান চাষে আগ্রহী এ অঞ্চলের কৃষকরা।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০