নিজস্ব প্রতিবেদক: মহামারি করোনাভাইরাস দেশে প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার আট মাস ১৬ দিনের মাথায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে চার লাখ ছাড়িয়ে গেল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরও দুই হাজার ২৩০ রোগী শনাক্ত হয়েছে দেশে; তাতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে চার লাখ ৫১ হাজার ৯৯০ জনে। আর গত এক দিনে এ ভাইরাসে আরও ৩২ জনের মৃত্যু হওয়ায় মৃতের মোট সংখ্যা ছয় হাজার ৪৪৮ জনে পৌঁছছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও দুই হাজার ২৬৬ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে তিন লাখ ৬৬ হাজার ৮৭৭ জন হয়েছে।
শনাক্ত রোগীর সংখ্যার বিচারে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ২৫তম স্থানে আছে; আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩২তম অবস্থানে। বিশ্বে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এরই মধ্যে সোয়া পাঁচ কোটি ৯২ লাখ পেরিয়েছে; মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১৩ লাখ ৯৭ হাজার।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ, তা ২৬ অক্টোবর চার লাখ পেরিয়ে যায়। এরপর ২৯ দিনে এই তালিকায় যুক্ত হলো আরও ৫০ হাজার নাম। এর মধ্যে গত ২ জুলাই চার হাজার ১৯ জন কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ৪ নভেম্বর তা ছয় হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৭টি ল্যাবে ১৫ হাজার ১৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ২৬ লাখ ৮০ হাজার ১৪৯টি নমুনা। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮১ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৩ শতাংশ।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ২৫ জন, নারী সাতজন। তাদের মধ্যে ৩১ জন হাসপাতালে ও একজন বাড়িতে মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে ১৯ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, পাঁচজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০, সাতজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং একজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল। ২৪ জন ঢাকা বিভাগের, চারজন চট্টগ্রাম বিভাগের, তিনজন রাজশাহী বিভাগের এবং একজন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ছয় হাজার ৪৪৮ জনের মধ্যে চার হাজার ৯৫৫ জনই পুরুষ এবং এক হাজার ৪৯৩ জন নারী। তাদের মধ্যে তিন হাজার ৪১২ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া এক হাজার ৬৮৩ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৭৮৬ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৩৪০ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৪৫ জনের ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৫১ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩১ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।
এর মধ্যে তিন হাজার ৪২২ জন ঢাকা বিভাগের, এক হাজার ২৪২ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৩৯৪ জন রাজশাহী বিভাগের, ৪৮৮ জন খুলনা বিভাগের, ২১৫ জন বরিশাল বিভাগের, ২৬৩ জন সিলেট বিভাগের, ২৯২ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৩২ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।