নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে চাহিদা অনুযায়ী শিল্প খাতগুলোয় মধ্যম পর্যায়ের ব্যবস্থাপক গড়ে উঠছে না। বর্তমানে শিল্প খাতের মোট কর্মীর মধ্যে মাত্র চার শতাংশ হচ্ছে মধ্যম পর্যায়ের ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে শুধু পোশাক খাতেই এদের মধ্যে ৪২ শতাংশ কর্মরত। তাদের মধ্যেও প্রায় ৩৫ শতাংশ কর্মকর্তার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিম্নমানের।
গতকাল বুধবার সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) প্রকাশিত এক গবেষণায় এসব কথা বলা হয়। রাজধানীর এমসিসিআই সম্মেলন কক্ষে সিপিডি ও বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফোরাম (বিইএফ) যৌথভাবে আয়োজিত এক সভায় এ গবেষণা উপস্থাপন করে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী। তিনি বলেন, আমাদের দেশে যেসব মধ্যম পর্যায়ের ব্যবস্থাপক পাস করে বের হচ্ছেন, তারা দক্ষ নন। এজন্য কার্যকর উদ্যোগের অংশ হিসেবে সবেতন ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এজন্য স্কলারশিপের উদ্যোগও নেওয়া দরকার।
তিনি আরও বলেন, মনে রাখতে হবে, বিশ্বায়নের এ সময়ে অদক্ষ লোকদের দিয়ে ওইসব পদে বিদেশিদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করানো যাবে না। তাদের দক্ষ করে গড়ে তুলেই বিদেশিদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হবে। চাইলেই ভারত বা শ্রীলঙ্কা থেকে আসা ব্যবস্থাপকদের বিদায় করা যাবে না।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে চাহিদা অনুযায়ী শিল্প খাতগুলোয় মধ্যম পর্যায়ের ব্যবস্থাপক নেই। ফলে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও হংকং থেকে অসংখ্য লোক নিতে হচ্ছে। শুধু ভারতেই বাংলাদেশ থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলার চলে যাচ্ছে। বর্তমানে শিল্প খাতের মোট কর্মীর মধ্যে মাত্র চার শতাংশ হচ্ছে মধ্যম পর্যায়ের ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত। শুধু পোশাক খাতেই এদের মধ্যে ৪২ শতাংশ কর্মরত। অন্যান্য খাত অধিকাংশই অনানুষ্ঠানিক হওয়ায় সেখানে মধ্যম পর্যায়ের ব্যবস্থাপক বলতে গেলে নেই-ই। পোশাক খাতেও প্রায় ৩৫ শতাংশ কর্মকর্তার শিক্ষাগত যোগ্যতা নি¤œমানের। ৬৫ শতাংশ ব্যবস্থাপকের এমএ ডিগ্রি থাকলেও তেমন প্রশিক্ষণ ও প্রতিযোগী সক্ষমতা নেই। ২০ শতাংশ ব্যবস্থাপক স্নাতক পাসও নন। এছাড়া নারীদের প্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে রয়েছে আরও সংকট। মাত্র তিন শতাংশ নারী মধ্যম পর্যায়ের ব্যবস্থাপক হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করছেন পোশাক খাতে।
এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি সালাউদ্দিন কাসেম খানের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অরগানাইজেশন স্ট্র্যাটেজি ও লিডারশিপ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুল মঈন, এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সহ-সভাপতি গোলাম মইনুদ্দীন, এসিআই লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ড. আরিফ দৌলা, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের (বিআইএম) ডিজি মো. আতোয়ার রহমান, এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক সাফি আর খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভায় সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ঢাকা স্কিল সামিটের ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
Add Comment