৫,৭৮৫ কোটি টাকার ৯ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন

ভারত থেকে দেড় লাখ টন চাল আমদানি হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারত থেকে দেড় লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। ভারতের ন্যাশনাল এগ্রিকালচার কো-অপারেটিভ ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেডের কাছ থেকে জিটুজি ভিত্তিতে এক লাখ মেট্রিক টন নন-বাসমতী সিদ্ধ চাল ও ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহ করবে খাদ্য অধিদপ্তর। এজন্য ব্যয় হবে ৫২১ কোটি ৯৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা। গতকাল বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে এক ভার্চুয়াল সভায় এ প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়।

সভায় ৫ হাজার ৭৮৫ কোটি ৮৩ লাখ ৪৬ হাজার টাকা ব্যয়ে মোট ৯টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। সভা শেষে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল।

অর্থমন্ত্রী বলেন, নতুন বছরের আজকে (গতকাল) অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির প্রথম এবং সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য দুটি এবং ক্রয়সংক্রান্ত কমিটির অনুমোদনের জন্য ৯টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে।

ক্রয়সংক্রান্ত কমিটির প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তিনটি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের দুটি, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দুটি, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের একটি এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একটিসহ অনুমোদিত ৯টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ৫ হাজার ৭৮৫ কোটি ৮৩ লাখ ৪৬ হাজার ৮৪ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে জিওবি থেকে ব্যয় হবে ৫ হাজার ৬৭৩ কোটি ৩৮ লাখ ২০ হাজার ৪৬০ টাকা এবং দেশীয় ব্যাংক ঋণ থেকে ১১২ কোটি ৪৫ লাখ ২৫ হাজার ৬২৪ টাকা।

অনুমোদিত প্রস্তাবনাগুলোর বিস্তারিত তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. সালেহ। তিনি বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে ভারতের মেসার্স ইটিসি অ্যাগ্রোপ্রসেসিং (ইন্ডিয়া) প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে চাল কেনার একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্য অধিদপ্তরের আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে ওই প্রস্তাবে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতী সিদ্ধ চাল সংগ্রহের কথা বলা হয়েছে। এজন্য ব্যয় হবে ১৭১ কোটি ৯৭ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।

একইভাবে কোটেশনের মাধ্যমে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল সিঙ্গাপুরভিত্তিক মেসার্স অ্যাগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে কেনা হবে। এজন্য ১৭৩ কোটি ১১ লাখ ৭ হাজার ২০০ টাকা ব্যয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

এছাড়া ন্যাশনাল এগ্রিকালচার কো-অপারেটিভ ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেডের কাছ থেকে জিটুজি ভিত্তিতে এক লাখ মেট্রিক টন নন-বাসমতী সিদ্ধ চাল ও ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহ করবে খাদ্য অধিদপ্তর। এজন্য ব্যয় হবে ৫২১ কোটি ৯৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

অতিরিক্ত সচিব ড. সালেহ বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতার থেকে দশম লটে (শেষ লট) ২৫ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার কেনার একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এজন্য ব্যয় হবে ৫৫ কোটি ৬৯ লাখ ৫৩ হাজার ৪৩৭ টাকা।

এছাড়া একই চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ২৫ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার সংগ্রহ করা হবে। এজন্য ব্যয় হবে ৫৬ কোটি ৭৫ লাখ ৭২ হাজার ১৮৭ টাকা।

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ড এবং টার্মিনালের জন্য প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ’ প্রকল্পের আওতায় চারটি কি গ্যান্ট্রি ক্রেন সংগ্রহের একটি ক্রয় প্রস্তাবও অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। চীনের সাংহাই জেনহুয়া হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি লিমিটেড ক্রেনগুলো সরবরাহ করবে। এজন্য ব্যয় হবে ২৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ৭৭ হাজার টাকা।

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ড এবং টার্মিনালের জন্য প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ১১টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন সংগ্রহের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।

সংযুক্ত আর আমিরাত ভিত্তিক ট্রান্স গালফ পোর্ট ক্রেনস এলএলসি নামের একটি প্রতিষ্ঠান এগুলো সরবরাহ করবে। পাঁচটি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন ক্রয়ে ব্যয় হবে ৫৯ কোটি ৩৪ লাখ ৭২০ টাকা।

সাংহাই জেনহুয়া হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানির কাছ থেকে ছয়টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন সংগ্রহ করবে। এজন্য ব্যয় হবে ৭০ কোটি ৮৩ লাখ ৩৬ হাজার ৮৪০ টাকাসহ মোট ১১টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন কিনতে ব্যয় হবে ১৩০ কোটি ১৭ লাখ ৩৭ হাজার ৫৬০ টাকা।

সভায় জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৫ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানির কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এছাড়া একই বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ের জন্য ১২ লাখ ৮৫ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয় কমিটি। এ জন্য ব্যয় হবে ৪ হাজার ৩৮৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

অতিরিক্ত সচিব জানান, অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থায় মোটরযানের কর ও ফি আদায়ের সম্ভাব্য অতিরিক্ত ৭৬ লাখ ৯৭ হাজার ৫৭৭টি ট্রানজেকশন সেবা কিনতে চুক্তি মূল্যের অতিরিক্ত ৪৮ কোটি ২ লাখ ১৪ হাজার ৭০০ টাকা পাঠানোর প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীনে বিআরটিএ’র কালেকশন অব মোটর ভেহিকল ট্যাক্সেস অ্যান্ড ফিস থ্রো অনলাইন ব্যাংকিং সিস্টেমের আওতায় এ প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০